ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী ও গর্ভের সন্তানকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ১০ জুলাই ২০২০

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী ও গর্ভের সন্তানকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় বিয়ের ৮ মাস না যেতে গৃহবধূ সাছুন নাহার ( ১৯) কে নির্মম নির্যাতনে হত্যা করার অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। এমন কি দুই মাস আগে হত্যা করা হয় গর্ভে থাকা ৬ মাসের সন্তানকে। অথচ পুলিশকে অভিযোগ করলেও কোন মামলা নেয়নি। ওই ঘটনায় মা ও তার সন্তানসহ দুইটি হত্যার বিচার দাবি করে আজ শুক্রবার বেলা ১২ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতের অসহায় মা খাদিজা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা । সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বছরের ১৪ অক্টোবর দেড় লাখ টাকা মোহরনায় চরফ্যাসনের চরকলমীর পাশ্ববর্তী আহম্মদপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ফজলু সর্দারের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আব্দুল বাছেদের ১৮ বছর বয়সী কণ্যা সামছুন নাহারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্ণালঙ্কারের জন্য নগদ ৭৫ হাজার টাকা ও ৬৩ হাজার টাকার সাংসারিক মালামাল কিনে দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস না যেতে সাদ্দাম দুই লাখ টাকা যৌতুক দেয়ার জন্য চাপ দেয় তার স্বামী। টাকা না দেয়ায় তাকে নির্মমভাবে মারধর ও অত্যাচার করে। এ বছরের ৩০ মে এমন নির্যাতনের খবর পেয়ে মা ও ভাই মোঃ নজরুল ইসলাম গিয়ে আহত অবস্থায় সামছুন নাহারকে উদ্ধার করে দ্রুত চরফ্যাশনে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই সময় হাসপাতালের ডাক্তার জানান, সামছুন নাহারের গর্ভের বাচ্চাটি মারা গেছে। এ ব্যাপারে তখন থানার ওসির কাছে অভিযোগে দেয়া হয়। কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এর কয়েকদিন পরে সামছুন নাহারের স্বামী সাদ্দামের পিতা কয়েকজনকে নিয়ে তাদের পুত্রবধুর বাপের বাড়ি গিয়ে গর্ভের বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে গৃহবধূ সামছুন নাহারকে তাদের বাড়ি নিয়ে যায়। কিন্তু এক মাস না যেতেই ফের সাদ্দাম দুই লক্ষ টাকার জন্য সামছুন নাহারকে চাপ দেয়। সামছুন নাহারকে টাকার জন্য তার মাকে জানান। পরে গরু বিক্রি করে টাকা দিবে বলে জানান। ৪ জুলাই ওই রাতেই সাছুন নাহারের উপর ফের বেদম নির্যাতন করা হয়। পর দিন খবর পেয়ে তারা থানায় গিয়ে লাশ দেখেন। তারা শুনতে পান স্বামী সাদ্দাম ও তারসহযোগী মিলে ধর্ষন করে গোপনাঙ্গে নির্যাতন করে মেরে ফেলে। বিভিন্ন স্থানে খন্ড খন্ড রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায়। নিহতের পড়নের পেটিকোটে রক্ত ও গায়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখেন। কিন্তু দুলারহাট থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে ওসি তাদের বেড় করে দেন। সামছুন নাহারকে যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী সাদ্দাম হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে ৪ জুলাই রাতে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে স্বামী সাদ্দাম হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এলাকার ইউপি মেম্বার মোঃ মজিবুর রহমান ঘটনাটি দুঃখজনক বলে তিনিও বিচার দাবি করেন। এদিকে চরফ্যাসনের দুলারহাট থানার ওসি মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, তারা সামছুন নাহারের গলায় ফাঁস দেয়অ লাশ তারা উদ্ধার করেন। তাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ দিতে আসেন নি। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। এছাড়াও ওই নারীর কোথাও আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় নি। পেটিকোর্টে রক্তের দাগ ছিল। যা মাসিককালীন রক্ত বলে ধারনা করা হয়। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×