নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ গাজীপুর থেকে গ্রীস প্রবাসীর সাড়ে ৩ বছরের এক শিশুকে অপহরণের ২ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধায় শিবচর থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। গাজীপুরে গ্রীস প্রবাসী আবদুল কাদেরের বাড়ি ভাড়া নেয়ার ১দিন পর ভাড়াটিয়া মহিলা শিশুটিকে খাবার কিনে দেয়ার কথা বলে অপহরণ করে। পরে মোবাইল ফোনে ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
পুলিশ ও পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের গাছার মধ্যপাড়া গ্রামে গ্রীস প্রবাসী আবদুল কাদেরের স্ত্রী সাজেদা আক্তার তার সাড়ে ৩ বছরের একমাত্র শিশু ছেলে আবদুল্লাহকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। মঙ্গলবার তার বাড়িতে এক নারী বাসা ভাড়া নেয়। বাসা ভাড়া নিয়েই বিভিন্ন জিনিসপত্র খাইয়ে ও আন্তরিক ব্যবহার করে সাজেদার মন কেড়ে নেয়। বুধবার বেলা ১১ টার দিক ওই নারী শিশু আব্দুল্লাহকে নিয়ে বাজারে যেতে চাইলে মা নিষেধ করেননি। কিন্তু এক ঘন্টার মধ্যেও ওই নারী শিশু সন্তানকে নিয়ে ফিরে না আসলে মা সাজেদা তাকে ফোন দেয়। সে বলে আমি ১০/১৫ মিনিট পর আসছি। এরপরও সে না ফেরায় আবারো আধা ঘন্টা পর ফোন দিলে সে একই কথা বলে। কয়েক ঘন্টা পর ওই নারী সাজেদার কাছে সন্তানকে পেতে হলে ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
মঙ্গলবার রাতে সাজেদা গাজীপুরের গাছা থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ও র্যাব মাঠে নামে। কিন্তু বারবার স্থান পরিবর্তন করে অপহরণকারীরা। এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত শিশু মাদারীপুরের শিবচর কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে কাঁদতে দেখে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরে শিশুটির গেঞ্জিতে লেখা থাকা তার মায়ের মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে শিবচর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ নিশ্চিত হন শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে শিশুটির পরিবারের সদস্যরা গাছা থানার টিম নিয়ে আবদুল্লাহকে নিতে শিবচর থানায় আসেন। শিশুটি মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় আজ শুক্রবার দুপুরে শিশুটিকে গাজীপুর পুলিশের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আবদুল্লাহর খালা পারভীন আক্তার বলেন, “সাজেদার বাড়িতে গিয়ে একদিনে ওই মহিলা ওদের অনেক কিছু খাওয়ায় এবং আবদুল্লাহকে আদর করে মন জয় করে নেয়। পরের দিন বাজারে নেয়ার কথা বলে আবদুল্লাহকে অপহরণ করে ও ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায়। আমরা গাছা থানায় অভিযোগ করি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে শিবচর থানা থেকে পুলিশ ফোন দেয় ওকে ঘাটে পাওয়া গেছে। আমরা ওকে নিতে এসেছি।”
গাছা থানার এসআই উদয়ন বিকাশ বড়–য়া বলেন, “বাড়ি ভাড়া নিয়ে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর অপহরনকারীরা বারবার জায়গা পাল্টায়। পরে এক পর্যায়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে রেখে যায়।”
শিবচর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা শিশুটিকে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে পাই। ওর গেঞ্জিতে লেখা নাম্বার দেখে ফোন দিয়ে জানতে পারি ও অপহৃত ছিল। ওর পরিবারের সদস্যরা এসেছে। আজ শুক্রবার আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
