ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফুটবল মাঠে ফেরার তৃষ্ণা কৃষ্ণার...

প্রকাশিত: ০০:২৩, ১০ জুলাই ২০২০

ফুটবল মাঠে ফেরার তৃষ্ণা কৃষ্ণার...

রুমেল খান ॥ টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার পাথালিয়া গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে মেয়েটির জন্ম ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি। বাবা পেশায় দর্জি বাসুদেব সরকার। গৃহিণী মা নমিতা রানী সরকার। তাদের মেয়ে ফুটবল খেলতো বলে নানান আজেবাজে কথা বলতো গ্রামের মানুষ। মায়ের কাছে এসব কথা শুনে খুব খারাপ লাগতো। তিনিও একসময় তাদের মতো করেই ভাবলেন, ‘ছেলেদের খেলা কেন আমার মেয়ে খেলবে।’ এ জন্য তিনি কন্যার সাধের ফুটবল একদিন রাগ করে বটি দিয়ে কেটে কুচি কুচি করে ফেলেছিলেন। যেন আর খেলতে না পারে মেয়ে। এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো মেয়েটির ফুটবল খেলার স্বপ্ন, যেমন অন্য দশটা মেয়ের বেলাতেও হয়। কিন্তু তা হয়নি। বাবার সমর্থন এবং নিজের জেদের কাছে মা একসময় হার মানলেন। পরবর্তীতে সেই মেয়ে যখন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলে খেলার সুযোগ পেল এবং বেশ কয়েক লাখ টাকা ফুটবল খেলে উপার্জন করে পরিবারকে দিল তখন তিনি তার ভুল বুঝতে পারলেন। বুঝলেন ফুটবল শুধু ছেলেদেরই খেলা নয়, মেয়েদেরও খেলা। মেয়ের সাফল্যে তিনি অনেক খুশি হলেন। সেই মেয়েটি আর কেউ নয় কৃষ্ণা রানী সরকার। যার মতো দক্ষ-কুশলী ফরোয়ার্ড এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের বড়ই দরকার। তবে করোনার এই ক্রান্তিকালে নারী ফুটবলারদের মতো কৃষ্ণাও বল নিয়ে মাঠে খেলতে পারছেন না। তাই বলে হাত পা গুটিয়ে একেবারেই বসে নেই তিনি। শরীরকে ফিট করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিভাবে ফিটনেস বজায় রাখছেন মায়াকাড়া চেহারার অধিকারী কৃষ্ণা? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন কোচরা হোয়াটসএ্যাপে মেসেজ এবং সপ্তাহে একদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিটনেস সম্পর্কে জানান এবং তারা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।’ এই মুহূর্তে কি ধরনের ব্যায়াম করছেন? ‘কোচদের দেয়া নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী নিয়মিত অনুশীলন করছি। আমরা একেকদিন একেক রকমের ব্যায়াম করছি, যেমন : একদিন রানিং, পরদিন কোর’ কৃষ্ণার জবাব। সবশেষে কৃষ্ণা আরও জানান, ‘এর পাশাপাশি কিরণ আপা (মাহফুজা আক্তার কিরণ, বাফুফের নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান), ছোটন স্যার (গোলাম রব্বানী ছোটন, বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ) অনন্যাদি (মাহমুদা আক্তার অনন্যা, নারী জাতীয় ফুটবল দলের সহকারী কোচ), সুইনুদিরাও (সুইনু প্রু মারমা, জাতীয় নারী ফুটবল দলের হেড অব উইমেন্স ফুটবল উইংস) আমাদের সংস্পর্শে রেখেছেন।’
×