নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে এক নববধূকে (২২) দ্রুত শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ফেরি থেকে ফুসলিয়ে স্পীডবোটে তুলে পদ্মা নদীর নির্জন চরে নামিয়ে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিবচর থানা পুলিশ কাঁঠালবাড়ি ঘাট এলাকা থেকে স্পীডবোট চালক ওমর ফারুক ও তিন ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার স্বামী বাদী হয়ে শিবচর থানায় একটি মামলা করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ৪জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
থানা পুলিশ ও নির্যাতিতা সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলার ওই মেয়ের সাথে গত এক সপ্তাহ আগে চাঁদপুর জেলার এক ছেলের বিয়ে হয়। মেয়েটির স্বামী ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় পদ্মা সেতুর প্রজেক্ট এ শ্রমিকের চাকুরি করে বলে দাবী করে। গত তিন দিন আগে মেয়েটি তার আত্মীয় বাড়ি শিবচরের কাঁঠালবাড়ি এলাকার দানেশ তালুকদারের বাড়ি বেড়াতে আসেন। মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৯টার দিক ওই মেয়েটি তার স্বামীর কাছে কেরানীগঞ্জ যাওয়ার জন্য কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটে দাঁড়িয়ে ছিল। মেয়েটিকে এগিয়ে নিতে তার স্বামী প্রজেক্টের কাজ শেষ করে শিমুলিয়া ঘাটে অপেক্ষা করছিল। মেয়েটি কাঁঠালবাড়ি ঘাটে একটি ফেরিতে উঠার পর একটি স্পীডবোট নিয়ে চালকসহ ৪ যুবক মেয়েটিকে দ্রুত শিমুলিয়াঘাটে পৌছে দেওয়ার কথা বলে। এ সময় মেয়েটিকে ফুসলিয়ে ফেরির পিছন দিয়ে তিন যুবক মাসুদ মোল্লা, মাহবুব মৃধা, নুর মোহাম্মদ হাওলাদার নামিয়ে ফারুকের স্পিডবোটে তুলে নিয়ে যায়। স্পীডবোটটি কিছুদূর যাওয়ার পর কাঁঠালবাড়ির বুড়ার খেয়াঘাটে এলাকায় গিয়ে থেমে যায়। এসময় চালক তেল আনার কথা বলে চলে যায়। এই সুযোগে তিন যুবক মাসুদ মোল্লা, মাহবুব মৃধা, নুর মোহাম্মদ হাওলাদার মেয়েটিকে নির্জন চরে নামিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে স্পীডবোট চালক তেল নিয়ে আসলে ওই ৩ বখাটে পালিয়ে যায়। মেয়েটি ঘটনার বিস্তারিত জানালে চালক তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। গভীর রাতে মেয়েটির স্বামী বিষয়টি জানতে পেরে শিমুলিয়া থেকে পদ্মা পার হয়ে কাঠালবাড়ি আসে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত এলাকাবাসী ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে কাঁঠালবাড়ি এলাকায় আপোষ মিমাংসার চেষ্টা চালায় বলে সংবাদ পায় শিবচর থানার পুলিশ। খবর পেয়ে শিবচর থানার উপ-পরিদর্শক বিষ্ণুপদ হীরা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ আটক চালক ওমর ফারুকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে ধর্ষক ওই তিন যুবক মাসুদ মোল্লা (২৫), মাহবুল মৃধা (৩০) ও নুর মোহাম্মদ হাওলাদারকে (২৪) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত মাসুদ কাঁঠালবাড়ি এলাকার ফকির কান্দি গ্রামের তনু মোল্লার ছেলে, মাহবুল মৃধা একই এলাকার রশিদ মৃধার ছেলে এবং আটক নুর মোহাম্মদ হাওলাদার একই এলাকার সামাদ হাওলাদারের ছেলে।
শিবচর থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় ফারুক, মাসুদ মোল্লা, মাহবুল মৃধা ও নুর মোহাম্মদ হাওলাদার নামের ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। ধর্ষিতা আসামিদের শনাক্ত করেছে। আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা স্বীকার করেছে।”
