ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়ায় ত্রাণ সহায়তার অজুহাতে পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা ব্যর্থ

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ৯ জুলাই ২০২০

সিরিয়ায় ত্রাণ সহায়তার অজুহাতে পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা ব্যর্থ

অনলাইন ডেস্ক ॥ মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য বিশ্ব আরব মিত্রদের সহযোগিতায় ২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গোলযোগ শুরু করে। ইসরাইল বিরোধী হিসেবে পরিচিত সিরিয়ার সরকারকে উৎখাত করা ও এ অঞ্চলের প্রতিরোধ শক্তিকে দুর্বল করার জন্য তারা আইএস জঙ্গিদের লেলিয়ে দিয়েছিল। যদিও পাশ্চাত্য তাদের লক্ষ্য অর্জনে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে পাশ্চাত্য সিরিয়ার জনগণকে সহায়তার অজুহাতে অবশিষ্ট সন্ত্রাসীদেরকে পৃষ্টপোষকতা ও কূটনৈতিক সমর্থন দেয়ার মাধ্যমে এখনো লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চীন ও রাশিয়া পাশ্চাত্যের এ প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেছে। আজ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রুশ প্রতিনিধি সিরিয়ার ব্যাপারে পাশ্চাত্যের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। ওই প্রস্তাবে সিরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়াই দেশটিতে মানবিক ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। এ প্রস্তাব সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এমন অভিযোগ তুলে চীনও তাতে ভেটো দিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পাশ্চাত্যের দেশগুলো এমন একটি প্রস্তাব পাশের চেষ্টা করছে যাতে সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়াই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিরিয়ার শক্তিশালী দুই সমর্থক অর্থাৎ চীন ও রাশিয়া পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রমূলক ওই প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দিয়েছে। চীন ও রাশিয়ার এ পদক্ষেপে হতাশা প্রকাশ করেছে জার্মানি ও বেলজিয়াম। এ দুই দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে দাবি করেছে, এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিবসহ যারা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার নারী পুরুষ ও শিশুদের সাহায্য করতে চেয়েছে তাদের ইচ্ছা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছে। জার্মানি ও বেলজিয়াম আরো দাবি করেছে, নিরাপত্তা পরিষদের বেশিরভাগ সদস্য এ প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু চীন ও রাশিয়ার ভেটোর কারণে তা বাতিল হয়ে গেল। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিরাপত্তা পরিষদে পাশ্চাত্যের সদস্য দেশগুলো বহুদিন ধরে এ ধরনের প্রস্তাব পাশের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু রাশিয়ার তীব্র বিরোধিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। মস্কো মনে করে সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে শলাপরামর্শ না করে ত্রাণ সামগ্রী পাঠালে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ বাধাগ্রস্ত হবে। প্রকৃতপক্ষে, বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পাশ্চাত্যের দেশগুলো সিরিয়ার জনগণকে মানবিক ত্রাণ সহায়তা দেয়ার অজুহাতে সন্ত্রাসীদেরকে লজিস্টিক সমর্থন দেয়ার চেষ্টা করছে যার ফলে সন্ত্রাসীদের হাতকে আরো শক্তিশালী হবে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, সিরিয়ায় যে কোনো সহায়তা দিতে হলে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অবশ্যই সেদেশের সরকারের অনুমতি নিতে হবে। যাইহোক, সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও মিত্র বাহিনী সম্প্রতি ইদলিবে সন্ত্রাসীদের সর্বশেষ ঘাঁটিতে যে হামলা চালিয়েছে তাতে বোঝা যায় দামেস্ক পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে নিজ ভূমি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তারা চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
×