বিদেশি শিক্ষার্থী ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে মামলা

অনলাইন ডেস্ক ॥ যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর সব বিদেশি শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোয় মার্কিন ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস বিভাগের (আইসিই) আদেশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে। বুধবার বোস্টন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে যুগ্মভাবে এই মামলা দায়ের করেছে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট লরেন্স ব্যাকো। হার্ভার্ড কমিউনিটিতে পাঠানো এক ইমেইল ব্যাকো বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক আগে এমআইটির সঙ্গে আমরা বোস্টন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে (আইসিইর) আদেশ কার্যকরে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছি। আমরা এই মামলাটি কঠোরভাবে অনুসরণ করব যেন আমাদের এবং দেশব্যাপী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ফেরত পাঠানো ঝুঁকি ছাড়াই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।’ কী আদেশ দিয়েছে আইসিই চলতি বসন্ত ও গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টারে যেসব ক্লাস অনলাইনে হবে, সেগুলোর বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি সাময়িকভাবে বাতিল করেছে আইসিই পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটার প্রোগ্রাম’। এতে এফ-১ এবং এম-১ ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন তাদের অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হবে অথবা অন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই নিয়মের বাইরে গেলে শাস্তিও ভোগ করতে হতে পারে। তবে, এ ভিসা নিষেধাজ্ঞা নতুন শিক্ষাবর্ষে থাকবে না। সমালোচনার ঝড় আইসিইর এ আদেশের পরপরই এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দেশটির রাজনীতিবিদ-শিক্ষাবিদরা। মঙ্গলবার হার্ভার্ড প্রেসিডেন্ট ল্যারি ব্যাকো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আইসিইর জারি করা নির্দেশনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জটিল সমস্যায় ফেলে দিয়েছে, বিশেষ করে অনলাইন প্রোগ্রামগুলোর শিক্ষার্থীদের; দেশত্যাগ বা স্কুল পরিবর্তন ছাড়া তাদের হাতে খুব একটা বিকল্প নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক মহামারিতে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার চ্যালেঞ্জগুলোতে ভারসাম্য রেখে শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনায় হার্ভার্ডসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেয়া সুচিন্তিত উদ্যোগের ক্ষতি করছে।’ বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের বিষয়ে ডেমোক্রেটিক সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী মহামারি চলাকালীন বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, কারণ তাদের কলেজগুলো সামাজিক দূরত্বের জন্য অনলাইনে ক্লাস চালাচ্ছিল। এটি নির্বোধ, নিষ্ঠুর এবং জেনোফোবিক (বিদেশিদের অপছন্দ করার মানসিক সমস্যা)।’ নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করা সাংবাদিক এলিজাবেথ স্পাইয়ার্স বলেছেন, তার অনেক শিক্ষার্থী এই ভিসার ওপর নির্ভরশীল এবং তারা নিজ দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সময়ের পার্থক্যসহ অন্যান্য সমস্যার কারণে অনলাইন ক্লাসে ঠিকমতো যোগ দিতে পারবে না। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি