ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সøুইস গেট আটকে প্রভাবশালীর মাছ চাষ

রাঙ্গাবালীতে হাজার একর জমির আমন আবাদ অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ০১:৩৮, ৯ জুলাই ২০২০

রাঙ্গাবালীতে হাজার একর জমির আমন আবাদ অনিশ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা পোল্ডারের তিনটি স্লুইসগেট এখন প্রভাবশালীদের দখলে। মাছ ধরার সুবিধার্থে তারা তাদের ইচ্ছেমতো স্লুইসগেটের কপাট খুলছে এবং আবার বন্ধ করছে। পোল্ডারের বহু জায়গায় আবার তারা বেড়িবাঁধ কেটে রীতিমতো খাল তৈরি করে নিয়েছে। এভাবে পানি নিয়ন্ত্রণ করায় একদিকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আবার কখনও কখনও পানির তীব্র সঙ্কট হচ্ছে। এতে করে দ্বীপগ্রামটির অন্তত এক হাজার একর জমিতে রোপা আমন চাষে রীতিমতো অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এরআগে আউশ আবাদেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে পোল্ডারের আওতাভুক্ত হাজারও কৃষক চরম বিপাকে পড়েছে। চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতার অবস্থান সাগরঘেঁষা। এর তিনদিকে নদী। দক্ষিণে সাগরের বিস্তীর্ণ জলরাশি। দ্বীপগ্রামটিতে অন্তত এক হাজার একরের বেশি আবাদি জমি রয়েছে। যার সবটাতেই রোপা আমন ও আউশের চাষ হয়। কয়েক বছর আগেও দ্বীপগ্রামটি অরক্ষিত ছিল। বর্ষায় সাগর-নদীর পানিতে প্লাবিত হতো। কৃষকের ধান চাষ ব্যাহত হতো। এরইমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড চরলতার চারপাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে তিনটি স্লুইসগেটও নির্মিত হয়। অভিযোগ উঠেছে, এলাকার একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী নির্মাণের পর থেকেই স্লুইসগেট তিনটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা তাদের সুবিধামতো পানি নিষ্কাশন করছে। প্রতিদিন এসব স্লুইসগেট থেকে প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা হচ্ছে। ফলে যখন কৃষকের পানির প্রয়োজন হচ্ছে, তখন স্লুইসের গেট বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। ভেতরে পানি ঢোকানো হচ্ছে না। আবার যখন পানি অপসারণ প্রয়োজন হচ্ছে, তখনও গেট বন্ধ রাখা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা কখনও জলাবদ্ধতায় ভুগছে। আবার কখনও পানির অভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এছাড়া, পোল্ডারের বেড়িবাঁধ কেটে তারা কয়েক জায়গায় খাল তৈরি করেছে। এটাও তারা মাছ ধরার সুবিধার জন্য করেছে। এসব খাল দিয়ে প্রবল বেগে এলাকার অভ্যন্তরে পানি ঢুকে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। তারপর নদী জোয়ারে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এলাকার সমস্ত বীজতলা ডুবে আছে পানির নিচে। এ মুহূর্তে পানি অপসারণ করা না হলে আমন বীজতলা পচে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে কৃষক। কিন্তু কৃষকরা বারবার আকুতি জানানও সত্ত্বেও পানি অপসারণ করা হচ্ছে না। এসব বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, কৃষকরা তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছে। স্লুইসের মুখ খুলে দেবার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
×