ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শ্যামলী তানজিন অনু

বেকারত্বের শঙ্কা

প্রকাশিত: ২৩:৪৯, ৯ জুলাই ২০২০

বেকারত্বের শঙ্কা

কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। অনেকেই লকডাউন শিথিল করছে কিন্তু পূর্ণমাত্রায় কেউ কাজ শুরু করতে পারেনি। সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে মানুষকে ঘরে থাকতে বলায় থমকে গেছে যানবাহন ও কলকারখানার চাকা। সেই সঙ্গে থেমে গেছে অর্থনীতিও। এ অবস্থায় দেশে দেশে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে কোটি কোটি মানুষ। যেখানে ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশে বেকারত্বের ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে সেখানে এশীয় দেশগুলো বাদ যাবে কিভাবে। মধ্যপ্রাচ্যে ইতোমধ্যে অনেক বাংলাদেশী কর্মহীন হয়ে পড়েছে। মালদ্বীপেও একই সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বৈশিক মহামারী করোনায় ক্রমবর্ধমান হারে মানুষ-ই কেবল মরছে এমনটা না। সেই সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতিকে দমিয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে অর্থনীতি যে মন্দার সম্মুখীন তা অতীতে যে কোন মহামন্দাকে ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর তাই অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব কিভাবে মোকাবিলা করা যায় সেটা এখন ভাববার বিষয়। তার সঙ্গে ভাবতে হবে করোনা পরবর্তী অর্থনীতি পুনর্গঠন নিয়েও। ভয়াবহ এই করোনার কারণে দেশ তথা সারা বিশ্বে বেকারত্ব একটি বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হবে। ইতোমধ্যে কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা আইএলও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এই ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তাতে ৩৩০ কোটি কর্মক্ষম মানুষের আংশিক বা পুরোপুরি বেকার হয়ে যেতে পারে। ২০২০ সালে ২য় প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করেছে আইএলও। এটি প্রায় ২০ কোটি পূর্ণকালীন কর্মজীবী মানুষের চাকরি হারানোর বাস্তবতা সৃষ্টি করবে। উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত উভয় দেশগুলোর জন্য বেকারত্ব প্রধান সমস্যা। যে- কোন দেশে উন্নয়নের পথে বড় বাধা হলো বেকারত্ব। করোনার প্রভাবে বিশ্বের ছোট বড় মাঝারি সব শিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর এই ক্ষত সারাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো সিদ্ধান্ত নেবে। যার ফলে বিশ্ব বেকারত্বের মতো বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। এটি তাৎক্ষণিকভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। বিশ্বে দৈনিক করোনার ছোবলে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। চীনে অবস্থা সব থেকে বেশি ভয়াবহ ছিল। তবে সেই ঝুঁকি চীন কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যতিব্যস্ত সারাবিশ্ব। এই পরিস্থিতি যদি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসে তবে অর্থনীতি আরও বড় বিপদের সম্মুখীন হবে। মূলকথা করোনায় যে হারে বেকারত্ব বাড়ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই অবস্থা চলমান থাকলে দেশ তথা বিশ্ব অর্থনীতির সিংহভাগ অচল হয়ে পড়বে। ঘরে ঘরে খেয়াল করলে এখন বেকার যুবক-যুবতী চোখে পড়ে। যার দরুন পরিবারে অশান্তি ঝামেলার সৃষ্টি হছে। পরিস্থিতি কবে স্বভাবিক হবে, কবে আবার মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত যুবক-যুবতী ছুটবে কাজের খোঁজে। কেউ ফিরবে পূর্ব কর্মস্থলে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে
×