ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা পেছনে নয়, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ৯ জুলাই ২০২০

আমরা পেছনে নয়, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিরোধী দলের বিরোধিতার মুখে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আনীত ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০’ পাস হয়েছে। পাসকৃত বিলের বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনের তাগিদে সীমিত পরিসরে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা করা যাবে। বুধবার স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সদস্যরা। তারা বিলটি সংবিধানবিরোধী ও আইনজীবীদের স্বার্থের পরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর শীদ। তবে তাদের সেই প্রস্তাব ও সংশোধনীগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলটির বিরোধিতার জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিদেশী একটি প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেবে। এ আইন বিশেষ সময়ের জন্য। তবে পূর্ণাঙ্গ ট্রায়াল এখনই করা সম্ভব নয়। তার জন্য সাক্ষ্য আইন, ফৌজদারি ও দেওয়ানি কার্যবিধি সংশোধন করতে হবে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫০ হাজার কারাবন্দীর জামিন হয়েছে, আর সেটা হয়েছে এই ভার্চুয়াল কোর্টের জন্যই। আমরা পেছনে নয়, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। এগিয়ে যাব আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়েই। স্বাভাবিক আদালত, স্বাভাবিক আদালতের মতোই চলবে। আইনটি কোনভাবেই সংবিধানবিরোধী নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংবিধানবিরোধী আইন হলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করতেন না। সংবিধান মেনেই আইনটা করা হয়েছে। আর এটা পূর্ণাঙ্গ আইন নয়, সীমিত আকারে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে করা হবে। বিএনপি এমপি হারুনুর রশীদের দেয়া চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে আনিসুল হক বলেন, যারা ক্ষমতায় থাকতে সপরিবারে জাতির পিতা হত্যাকা-ের বিচার না করে খুনীদের রক্ষায় ইনডেমনিটি জারি করেছিল, তাদের মুখে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা মানায় না। আদালতের বিষয়ে তার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রয়োজন হলে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। আগামী সপ্তাহ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সীমিত আকারে কোর্ট চালু হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী। পাস হওয়া বিলে ভার্চুয়াল উপস্থিতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, অডিও-ভিডিও বা অনুরূপ অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতির মাধ্যমে কোন ব্যক্তির আদালতে বিচার বিভাগীয় কার্যধারায় উপস্থিত থাকা ও অংশগ্রহণ ভার্চুয়াল উপস্থিতি বলে গণ্য হবে। বিলে বলা হয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনের তাগিদে এই আইনটি প্রয়োগ করা যাবে। সেক্ষেত্রে কোন মহামারী হলো, জরুরী প্রয়োজন দেখা দিলো বা নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠলে উচ্চ আদালত আইনের ওই বিধান প্রয়োগ করবে। করোনা মহামারীর মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে ভার্চুয়ালি আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রেখে গত ৭ মে মন্ত্রিসভা এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয়ার পর ভার্চুয়াল আদালতের কাজ শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী অধ্যাদেশটি সংসদে তোলা হয় গত ১০ জুন। আর এ সংক্রান্ত বিলটি উত্থাপন হয় ২৩ জুন।
×