ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উপনির্বাচন পেছানোর কোন সুযোগ নেই ॥ সচিব

প্রকাশিত: ২১:৫১, ৮ জুলাই ২০২০

উপনির্বাচন পেছানোর কোন সুযোগ নেই ॥ সচিব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা মহামারীর মধ্যে যশোর-৬ এবং বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি। না পেছালে এই দুটি আসনের উপনির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে তারা। তবে বিএনপি দাবি করলেও নির্বাচন পেছানোর কোন সুযোগ নেই বলছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিব মোঃ আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাত করে এ দাবি জানায় দলটি। সাক্ষাত শেষে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সাংবাদিকদের বলেন, দলের পক্ষ থেকে করোনার এই সময়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ কারণে কমিশনের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। কমিশন যদি নির্বাচন না পেছায় তবে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেবে না। তিনি বলেন, নির্বাচন না পেছালে ব্যালট পেপারে বিএনপির দলীয় প্রার্থীর প্রতীক না রাখার জন্যও ইসি সচিবকে বলেছি। কিন্তু সেটা সম্ভব হবে কিনা জানি না। এদিকে ইসি বিএনপি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাত শেষে ইসি সচিব মোঃ আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। বিএনপি নির্বাচন পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। তারা এ কথা খুব ভাল করেই জানেন, যে নির্বাচন পেছানোর কোন সুযোগ নেই। কেননা, এখন নির্বাচন পেছালে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে। গত মার্চে ২৯ তারিখে এই দুটি আসনের উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই দেশে করোনা মহামারী শুরু হয়। কিন্তু করোনার মধ্যে নির্বাচন করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে বিধায় কমিশনের এক বৈঠকে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের সঙ্গে এ দুটি আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে ইসি। সংবিধান অনুযায়ী কোন আসন শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বিধান রয়েছে। তবে কোন দৈব-দুর্বিপাকের কারণে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হয়, মেয়াদের শেষ দিনের পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। যশোর ও বগুড়া আসন দু’টির ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ ১৫ জুলাই ও ১৮ শেষ হচ্ছে। এ কারণে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে এ দু’টি আসনের উপনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম এর আগে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে ১৮০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন দুটি করতে হচ্ছে। প্রথম ৯০ দিনের পরের ৯০ দিন, এই ১৮০ দিনের মধ্যে করতেই হচ্ছে। উপনির্বাচন না দিয়ে কোন উপায় নেই এ বিষয়ে কমিশন একমত হয়েছে। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এ দুটি উপনির্বাচন করতেই হবে। ১৪ জুলাইয়ে যশোর-৬ ও বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচন পেছানোর দাবি নিয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিব মোঃ আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিবে লেখা একটি চিঠিও ইসি সচিবের কাছে হস্তান্তর করেন। চিঠিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আগামী ১৪ জুলাই জাতীয় সংসদের বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কিন্তু আপনি অবহিত আছেন যে, বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিনিয়ত আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই ॥ ইসি সচিব ॥ বিএনপি দাবি জানালেও যশোর ও বগুড়ার উপনির্বাচন পেছানোর কোন সুযোগ নেই বলে সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছেন ইসি সচিব মোঃ আলমগীর। তিনি বলেন, কোন আসন শূন্য হলে তার পরবর্তীতে নব্বই দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হয়। দৈবদুর্বিপাকের কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) আরও নব্বই দিন সময় নিতে পারে। সেই সময়ও পার হয়ে গেলে সুপ্রীম কোর্ট থেকে ব্যাখ্যা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে ভোট না করলে রাষ্ট্রের যেকোন ব্যক্তি সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে মামলা করতে পারে। আর সংবিধান লঙ্ঘনের শাস্তি খুব মারাত্মক। মৃত্যুদ-ও হতে পারে। কাজেই এ দায়িত্ব আইন মন্ত্রণালয়ও নেবে না, কমিশনও নেবে না, কেউ নেবে না। ব্যালট পেপারে বিএনপির প্রার্থীর প্রতীক না রাখার দাবির বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, আইন অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে। এই সময়ের পর আইনগতভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার বা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবার কোন সুযোগ নেই।
×