ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীর ঘোষণা

কোরবানির পশু এবার ট্রেনে চড়বে

প্রকাশিত: ২১:২৬, ৮ জুলাই ২০২০

কোরবানির পশু এবার ট্রেনে চড়বে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একযুগ পর আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহায় ট্রেনে করে কোরবানির পশু পরিবহনের পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। প্রতিটি পশু পরিবহনের জন্য সর্বনি¤œ ১ হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে বলে জানান মন্ত্রী। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোরবানির পশু পরিবহনে রেলে সুযোগ দেয়া যায় কি না তা বিবেচনার জন্য দেয়া চিঠির প্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী। মঙ্গলবার রাজধানীর রেলভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ শাসসুজ্জামান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়াজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০০৮ সালের দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকায় মালবাহী ট্রেনে করে পশু পরিবহন করে রেলওয়ে পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী রেলওয়েকে জনগণের পরিবহন হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। এরই অংশ হিসেবে করোনাকালেও রেলপথকে খুলে দিয়েছি। এছাড়া ব্যবসায়ীদের ও প্রান্তিক চাষীদের সুবিধার্থে আমরা এর আগে লাগেজ ভ্যানে শাক সবজি ফলমূল আনার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া এবারই প্রথম আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম আনার উদ্যোগ নিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে এবার কোরবানির পশু আনার পরিকল্পনা নিয়েছি। মন্ত্রী বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রচলিত ভাড়ায় উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী কোরবানির পশু পরিবহনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে কবে থেকে পশু পরিবহন করা সম্ভব হবে তা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে আলোচনা করে সম্ভাব্য দিন তারিখ, রুট ও স্টেশন নির্ধারণ করা হবে। ব্যবসায়ীদের চাহিদার ভিত্তিতে যে কোন দিন থেকেই এ ট্রেন চালু করা হবে। সভায় রেলপথে পশু পরিবহনের জন্য আগ্রহী ব্যবসায়ীদের রেলওয়ের কন্ট্রোল নম্বর ০১৭১১-৬৯১৫২০-এ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি। রেলমন্ত্রী বলেন, গাইবান্ধা বা পাবনা, কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রামে নিতে প্রতিটি গরুর ভাড়া সর্বোচ্চ ২৫০০ টাকা এবং ঢাকায় আনতে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা নেয়া হতে পারে। সাধারণত পাবনা, মেহেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, দেওয়ানগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পশু আমদানি করতে পারবেন। এমনকি দেশের একপ্রান্ত গাইবান্ধা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত একটি পশু পরিবহনের জন্য সর্বোচ্চ ব্যয় হবে ২ হাজার ৫০০ টাকা। ফলে ব্যবসায়ী ও খামরি তথা কৃষকগণও লাভবান হবেন। রেলপথমন্ত্রী সুজন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে আম পরিবহনের সুবিধার্থে ম্যাংগো স্পেশাল নামে ট্রেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে পরিচালনা করছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা সহজেই আম ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে খুবই অল্প ভাড়ায় পরিবহন করতে পারছেন। তবে পশু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করলেই যে কোন দিন আমরা পশু পরিবহন কাজ শুরু করব ও ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চাহিদা বুঝে পশু পরিবহন করতে পারব। মন্ত্রী বলেন, আমরা মিটারগেজের প্রতিটি ওয়াগনে ১৬টি গরু ও ব্রডগেজের প্রতিটি ওয়াগনে ২ থেকে ২৫টি গরু বা মহিষ আনা যাবে তবে কোন উট পরিবহন করা সম্ভব হবে না। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জনকণ্ঠকে বলেন, রেলওয়েতে কোরবানির পশু পরিবহনে আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছি। পশু খামারি ও প্রান্তক পর্যায়ের কৃষকের উন্নয়নে ও জীবিকার শর্তে আমরা এ প্রস্তাব দিয়েছি যা রেল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে। কবে নাগাদ পশু পরিবহনের জন্য ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে ও কারা কারা আগ্রহী সেজন্য আমরা বুধবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সারাদেশের পশু খামারি, পশু ব্যবসায়ী, কৃষকসহ ও এ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি অনলাইন বৈঠকের আয়োজন করেছি। এ সভায় রেল কর্তৃপক্ষকেও যুক্ত করা হবে। সমন্বিতভাবে আলোচনা শেষে এ বিষয়ে পরবর্তী সকল করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
×