ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন তেরেঙ্গানুকে ৫০ হাজার ডলার প্রদান

প্রকাশিত: ২০:২২, ৮ জুলাই ২০২০

চ্যাম্পিয়ন তেরেঙ্গানুকে ৫০ হাজার ডলার প্রদান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তী পালনের দ্বারপ্রান্তে এখন বাংলাদেশ। আগামী ২০২১ সালে সেটি উদযাপিত হবে। দেশ স্বাধীনের পরই গঠিত হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। অথচ সংস্থাটি গঠনের এত বছর পেরিয়ে গেলেও ফুটবলকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করে তুলতে কোন কাজ করেনি তারা। গেল প্রায় ৫০ বছরে যে কাজ বাফুফে করতে পারেনি মাত্র ৫ বছরে সেটা করে দেখিয়েছে দেশের জনপ্রিয় ক্লাব চট্টগ্রাম আবাহনী। সেটা শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপ আয়োজন করার মধ্য দিয়ে। আয়োজনে ২০১৫ সাল থেকেই প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালনে রেখেছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর সহসভাপতি, তৃণমূল ফুটবল উন্নয়নের রূপকার তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালকে ফুটবলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করে তুলতেই মূলত টুর্নামেন্টের যাত্রা। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম আসর। আর প্রথম আসরেই দর্শকপ্রিয় টুর্নামেন্টের খ্যাতি লাভ করে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপ ফুটবল। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে দ্বিতীয়, সর্বশেষ গত বছর অক্টোবরে তৃতীয় আসর অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবার আয়োজনে মুন্সিয়ানার পরিচয় দেন চট্টগ্রাম আবাহনীর কর্মকর্তারা। অথচ সফল এই টুর্নামেন্টের গায়ে কলঙ্কের কালিমা লেপটে দেয়ার চেষ্টায় রয়েছে একশ্রেণীর ফুটবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। ২০১৯ সালের আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় মালয়েশিয়ার ক্লাব তেরেঙ্গানু এফসি। আসরের প্রাইজমানির বিষয়টি নেতিবাচকভাবে প্রচারের মধ্যদিয়ে মূলত তাদের অপকর্ম শুরু। কিন্তু সেসব সমালোচনাকারীদের মুখে কুলুপ এঁটে দিলেন তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। ফুটবল নিবেদিতপ্রাণ সংগঠন রুহুল আমিন যা বলেন তা রক্ষা করেন। তেরেঙ্গানু এফসিকে তাদের প্রাইজমানির ৫০ হাজার ডলার সময়মতো বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে সবাইকে জানিয়েছিলেন তিনি। গত ২ জুলাই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন সেই অর্থ। সব কাজেরই একটা ধরন আছে। সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সেটি করতে হয়। প্রাইজমানি দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়মগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করেই তেরেঙ্গানুকে পুরস্কারের অর্থ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম আবাহনীর সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, প্রাইজমানি প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় সক্রিয় থাকি। কিন্তু প্রাইজমানি প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হয়। সেন্ট্রাল ব্যাংকের অনুমোদন লাগে। এ লক্ষ্যে ফুটবল ফেডারেশনকে আগেই আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। ফেডারেশন সেটা আবার মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে আমরা অনুমতি পেয়েছি গত ৩০ জুন। অর্থাৎ মাত্র কয়েকদিন আগে এই টাকা রেমিট করার জন্য। ১ জুলাই ব্যাংক বন্ধ ছিল। ২ জুলাই আমরা ফেডারেশনের একাউন্টে সেই টাকা জমা দিয়েছি। আশাকরি ফেডারেশন টাকা টান্সমিট করে দেবে। তেরেঙ্গানুর প্রাইজমানির টাকা পরিশোধ করছে না চট্টগ্রাম আবাহনী- এমন কথা বলে ফেব্রুয়ারিতে নানা মহলে সমালোচনা করা হয়। আগের দুই আসরে প্রাইজমানি নিয়ে কোন ধরনের ঝামেলা হয়নি। এ বিষয়ে রুহুল আমিন বলেন, ‘এটা নিয়ে যারা নেগেটিভ প্রচারণা চালিয়েছিল সেটা কেন করেছে আমরা জানি না। ফুটবল ফেডারেশনের প্রাইজমানি আমার জানা মতে এখনও কিছু বাকি আছে। আমরা কিন্তু ক্লাব হিসেবে ইতোমধ্যে ৫০ হাজার ডলার পরিশোধ করে দিয়েছি। এখানে অনুমতির জন্যই কেবল সময় লেগেছে। এই সময়টা মেনে নিতেই হবে। আমরা যারা আয়োজক কমিটি, মানে চট্টগ্রাম আবাহনীর এখানে কোনই গাফলতি নেই। আমরা ফুটবল ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছি। ফেডারেশনও গাফিলতি করেনি। তারা আমাদের চিঠি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে। এগুলো প্রসেসিং হতে কিছুটা সময় লাগে। আমরা ৩০ জুন চিঠি হাতে পাই। এখানে ভুল বোঝাবুঝির কিংবা অপপ্রচারণার কোন অবকাশ নেই। সবকিছু গুলিয়ে ফেলা কিংবা এক করে দেখার সুযোগ নেই। বাফুফে এবং চট্টগ্রাম আবাহনীর কার্যক্রমে রাত-দিন পার্থক্য। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রাইজমানি নিয়ে বাফুফে কি করেছে তা কারও অজানা নয়। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর প্রাইজমানির অর্থ বুঝে পেয়েছে নেপাল। তাও সেই অর্থ আদায় করেছে তারা হুমকি দিয়ে। পরবর্তী আসরে খেলবে না- এমন কঠিন শর্ত দেয়ায় শেষ পর্যন্ত নেপালকে প্রাইজমানি বুঝিয়ে দিতে বাধ্য হয় বাফুফে। শেখ কামাল টুর্নামেন্টে এ ধরনের বাজে ইতিহাস নেই। শেখ কামাল টুর্নামেন্ট এবং শেখ কামালকে সবধরনের সমালোচনা উর্ধে রাখার আহ্বান জানিয়ে রুহুল আমিন বলেন, ‘শেখ কামাল হচ্ছেন বাংলাদেশের আধুনিক ফুটবলের প্রবক্তা। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অর্থাৎ যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে যুব সমাজকে তিনি একত্রিত করেছিলেন খেলার মাধ্যমে। আধুনিক ফুটবল, আধুনিক স্পোর্টসকে পরিচিত করে তুলেছিলেন। আমরা যে কাজটি করছি ফুটবলের মাধ্যমে তাতে শেখ কামালের নাম সারাবিশ্বে পরিচিত করে তুলছি। চট্টগ্রাম আবাহনী যে কাজটি করে যাচ্ছে তা ইতিবাচক হিসেবে নেয়া উচিত সবার। এটা অনুকরণ করে কাজ করা উচিত। কারণ শেখ কামাল হচ্ছেন বাংলাদেশে স্পোর্টসের আদর্শ। এই আদর্শকে আমরা বুকে ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছি। এ কাজে যারা আমাদের সহযোগিতা করছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। এটাকে আরও এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতা কামনা করি।
×