ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ৭ জুলাই ২০২০

ঢাকার দিনরাত

আষাঢ় মাস শেষের পথে, তারপর শ্রাবণ। প্রত্যাশা ঝমঝম বৃষ্টির। যদিও প্রকৃতি, বিশেষ করে বৃক্ষরাজি ইতোমধ্যে নবযৌবনপ্রাপ্ত। করোনাকালে ঢাকাবাসীর কি আর সেদিকে তাকানোর সময়-সুযোগ আছে? নাকি মন-মানসিকতা আছে! চলতি পথে, কিংবা সময় নিয়ে গাছপালার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলে মন ভাল হয়ে যায়। মনের পরিশুদ্ধি যে কত জরুরী সেটি আমরা অনেকেই বুঝতে চাই না। চোখে পড়ে বিস্তৃত সবুজ। সেই সবুজের সঙ্গে রয়েছে লাল-হলুদের সমারোহ। মৃদুবাতাসে আন্দোলিত হয় লাল-হলুদ-সবুজ কচিপাতা আর ফুল। শুভ্রসাদা, বেগুনি, হলুদ আর লাল রঙের ফুল নজর কাড়বেই। ভ্রমর আর প্রজাপতিও কি আগের থেকে এখন কিছুটা বেশিই নজরে পড়ছে! গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় লকডাউনের কারণেই বাতাস ও প্রকৃতির এমন পরিবর্তন। লকডাউনের কারণে বেশ কিছুকাল গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকা, সবধরনের শিল্প কারখানা বন্ধ থাকা, এমনকি মানুষও করোনার জন্য ঘর থেকে কম বের হওয়ার কারণে বায়ুমানে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। প্রাণ ফিরে পেয়েছে প্রকৃতিও। অনলাইনে ক্লাস জুলাই শুরু মানে নতুন অর্থবছরেরও শুরু। ইংরেজী মাধ্যম স্কুলগুলোর নতুন সেশন শুরু। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, তাই বলে শিক্ষাগ্রহণ ও পাঠদান কি থেমে থাকবে? ডিজিটাল বাংলাদেশের পুরো সুবিধা নেয়ায় সচেষ্ট থাকাটাই বিচক্ষণতা। আমার ছেলের এ লেভেলের ক্লাস অনলাইনেই শুরু করে দিয়েছে সাউথ ব্রিজ স্কুল। সপ্তাহে পাঁচদিন প্রতিদিনই চারটি করে ক্লাস। প্রতি ক্লাসের সময়দৈর্ঘ্য চল্লিশ মিনিট। হোক মাত্র চারটি ক্লাস, হোক কিছুটা কম সময়ের ক্লাস, তবু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন অভিভাবকরা। সাড়ে তিন মাস পর শিক্ষার্থীরা নতুন শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে নতুন পাঠ্যসূচী অনুযায়ী শিক্ষার্জন শুরু করল। এটাই সুখকর। তবে আমার পুত্রের ক্লাসের প্রায় প্রত্যেক সহপাঠীই অনলাইনে প্রাইভেট ক্লাস শুরু করে দিয়েছিল দুই মাস আগে থেকেই। তাই অন্যান্য অনেক স্কুলের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মতো ক্লাসবিহীন থাকতে হয়নি তাদের মাসের পর মাস। করোনাকালে ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ। স্কুল বন্ধ। ইংরেজী মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা আগেই সমাপ্ত হয়ে গেলেও বাংলা মাধ্যমের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের তো মাত্র বছর, মানে নতুন ক্লাস শুরু হয়েছিল মার্চে লকডাউনের আগে। তাদের লেখাপড়ার কী অবস্থা তার অনুসন্ধানে গেলে হতাশা এসে ভর করে। এ রকম একটা অস্বাভাবিক কালে যখন রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির ভেতরে মানুষের সীমাবদ্ধ জীবনে বেঁচে থাকা, তখন পড়ালেখাটা কতটা কড়াকড়িভাবে এগিয়ে নেয়া আর সম্ভব? আবার সবার পক্ষে অনলাইনে ক্লাস করাও তো সম্ভব নয়। কম্পিউটার থাকলেও তা ব্যবহারের শিক্ষা কতটা? সে কারণে টেলিভিশনের মাধ্যমে এ ধরনের প্রশিক্ষণ চালু করা জরুরী ছিল সেই এপ্রিল মাসেই। সবকিছুতেই আমাদের দেরি হয়ে যায়। এদিকে আরেকটা হুমকির খবর পড়লাম। ইন্টারনেটে ব্রডব্যান্ড কানেকশন নাকি প্রোভাইডাররা হঠাৎ বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছেন তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য। সত্যিই বিপদের কথা। করোনাকালের রকমারি প্রতারক মহামারীর সময়েও প্রতারণা থেমে নেই। মানুষের অসহায়ত্বকে জিম্মি করে চলছে নিষ্ঠুর প্রতারণা। পুরান ঢাকার আরমানিটোলা ও মিটফোর্ড এলাকায় নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ চলছে। তার বিরুদ্ধে র্যাোব অভিযানও শুরু করেছে। ধরাও পড়েছে কয়েকজন। একবার ভাবুন, করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে না জেনে মানুষ ওইসব হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে বিন্দুমাত্র সুরক্ষা তো পাবেনই না, বরং উল্টো তার স্বাস্থ্য সমস্যা হবে। মানুষের জীবনমরণ নিয়ে যারা ব্যবসা ফাঁদে, তারা কি আর মানুষের পর্যায়ে আছে? বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করে তার রিপোর্ট আবার বাসাতেই পৌঁছে দেবেন-শুনতে কি স্বস্তিই না লাগে। মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করাসহ নানা ঝক্কি এড়াতে এই সহজ উপায় অবলম্বন করে প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন, এমন ঘটনা ঢাকায় প্রচুর। এইবার প্লাজমা সংগ্রহ করে ভুক্তভোগী রোগীর কাছে পৌঁছে দেয়ার ‘মহান ব্রত’ নিয়ে মাঠে নেমেছে একদল প্রতারক। ‘প্লাজমা’ সহায়তার নামে কয়েকটি প্রতারণা চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এসব চক্রের সদস্যরা প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনা রোগীদের বাঁচাতে প্লাজমার (রক্ত রস) সন্ধান করা ব্যক্তিদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর নিজেদের করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার দাবি করে সাহায্য প্রার্থীদের ফোন করে প্লাজমা দেয়ার কথা বলে অভিনব কায়দায় প্রতারিত করে। গোয়েন্দা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সাহায্য প্রার্থীদের কাছে এসব চক্রের সদস্যরা রোগী পর্যন্ত পৌঁছাতে যাতায়াত এবং খাবারের খরচ বাবদ অগ্রিম অর্থ দাবি করে। ভুক্তভোগীরা তাদের মোবাইল এ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠানোর পরেই তারা ওই নম্বরটি বন্ধ করে কিংবা ব্লক করে দেন। এরপর আবার নতুন কাউকে খুঁজতে থাকে। এ রকম প্রায় ছয়টি সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করেছে ডিবি পুলিশ যারা এই উদ্ভাবনী প্রতারণার মাধ্যমে অসহায় মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শুক্রবার গণমাধ্যমের আলোচিত একটি সংবাদ ছিল ফেসবুক ব্যবহার করে দামী উপহার প্রদানের কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়া বিদেশী চক্রের তিনজন গ্রেফতার। এই করোনাকালে দুই দফা অভিযান চালিয়ে সফলতার স্বাক্ষর রাখার জন্যে যথাক্রমে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং সিআইডি সাধুবাদ পাবেন। এ জাতীয় প্রতারণার বিষয়টি এদেশে অবশ্য নতুন নয়। ধারাবাহিকভাবেই এমন অপরাধ ঘটছে, বিদেশী প্রতারকরাও ধরা পড়ছেন। কিন্তু প্রতারণা থামছে না। জামিনে বেরিয়ে এসে অপরাধীরা আবারও একই ধরনের অপরাধে পারঙ্গমতা দেখাচ্ছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে এমনটা কেন হচ্ছে? কেন এদের মূলসুদ্ধ উপড়ে ফেলা যাচ্ছে না। তাছাড়া আইন প্রয়োগে কোন শিথিলতা আছে কিনা যে কারণে অপরাধীরা বেরিয়ে আসছে? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যেটা সামনে চলে এসেছে সেটি হলো বিদেশীরা ধরা পড়লেও এদের দেশীয় সহযোগীরা কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে! এ সংক্রান্ত সংবাদটির অনলাইন লিংক অনুসরণ করে কয়েকজন পাঠকের মন্তব্য পড়লাম। তারা অপরাধীকে না দুষে ভিকটিমকে শাপশাপান্ত করছে। অদ্ভুত ব্যাপার। যেন তারা সব সাধুসন্ত, তাদের কোন লোভ নেই কোনো কিছুর প্রতি। প্রতারকচক্র চাপ দিয়ে পুলিশের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ দফায় একজনের কাছ থেকেই নিয়েছে ২২ লাখ টাকার ওপরে। এ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে বেসরকারী ব্যাংক এ্যাকাউন্ট। এক বা একাধিক ব্যাংক এ্যাকাউন্ট হোল্ডার তথা দেশী ব্যক্তির সহায়তা নিয়েই বিদেশী অপরাধী চক্রটি এই প্রতারণা অব্যাহত রেখেছে। তাই ওইসব এ্যাকাউন্টের সূত্র ধরেও তো প্রতারণা সহযোগীদের আইনের আওতায় চটজলদি নিয়ে আসা সম্ভব। তেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি না কেন? আরও একটি বড় প্রশ্ন হলো এখন আমাদের দেশের সাইবার ক্রাইম দমন ও অনুসন্ধানে প্রয়োগ হচ্ছে অত্যাধুনিক যন্ত্র ও সরঞ্জাম। তাই এ জাতীয় প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইলের দেশী সিম ব্যবহারকারীকে তার সর্বশেষ অবস্থানের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা সহজ হয়ে উঠেছে। তবু দেশী সহযোগীদের আমরা আইনের হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি না। বিষয়টি বিস্ময় জাগায় বৈকি! সত্যপ্রকাশের দায়বোধ থেকে এ কথাও বলা চাই, প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা প্রথমে দামী উপহারের প্রলোভনে অর্থব্যয় করতে সম্মত হলেও পরে স্রেফ পুলিশি ঝামেলা এড়াতেই দফায় দফায় লাখ লাখ টাকা খরচ করছে। সর্বশেষ ঘটনাটিই তার প্রমাণ। তাই অযথা হয়রানি করার দুর্নাম থেকে পুলিশকে বেরিয়ে এসে নাগরিকদের মিত্র ও আস্থাভাজন হতে হবে। তাছাড়া অনুমোদনহীনভাবে বিদেশী অপরাধীরা বাংলাদেশে অবস্থান করছে বছরের পর বছর, কেন ও কিভাবে সেটি অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার। বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো ব্যবস্থা মোটেই কাম্য নয়। যেহেতু এ ধরনের প্রতারণায় অর্থ হাতানোর জন্য ব্যাংককে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কী করণীয় তা ভাবতে হবে। আশা করব এবার থেকে প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে কঠোরতার পরিচয় দেখা যাবে। তবে সবার আগে বিদেশী প্রতারকদের দেশী সহযোগীদের পাকড়াও করা চাই। নতুন রেড জোন ওয়ারী সুন্দর পরিকল্পনা পরিকল্পনার বিশদ জানতে পেরে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার সঙ্গে শ্রম স্বীকার করে কাজ করে যেতে পারলেই বাস্তবায়ন সম্ভব। তাহলে একটা দৃষ্টান্তও স্থাপন হয় দেশে যে, করোনাক্রান্ত এলাকায় ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও দমন এবং এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের কর্তৃপক্ষ সফল। এটি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে পরিকল্পনার নব্বই ভাগ সফলতা অর্জন করলেও বহির্বিশ্বে আমরা একটা ইতিবাচক বার্তা দিতে পারব। আমরা পারি, আমরা পেরেছি। এই সক্ষমতা ও সক্রিয় উদ্যোগ বাইরের পৃথিবীকে জানিয়ে দেবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে বাঙালীর লড়বার প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার নানা দিক। তাই একজন ঢাকাবাসী হিসেবে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই একুশ দিনের এই লকডাউনকে যথাসম্ভব সফল করে তুলুন। শতভাগ না পারলেও তার কাছাকাছি পৌঁছান। ওয়ারী এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে লকডাউন কার্যকর করার জন্য বাস্তবায়ন কমিটি ও কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ওয়ার্ড ব্যবস্থাপনা কমিটিও রয়েছে। টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করার কথা রয়েছে। রোগী পরিবহন ও মৃতদেহ দাফন করার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিক নিয়ে দুটি কথা বলা দরকার। বস্তিবাসী-কর্মহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য জরুরী খাদ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিকল্পনায় বলা হয়েছে- বস্তিবাসী ও কর্মহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য জরুরী খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। এই বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদফতর এনজিও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। যদি সত্যিই এমনটা বাস্তবায়ন সম্ভব হয় তবে কর্তৃপক্ষ সব পক্ষের সাধুবাদ পাবেন। লকডাউনের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পনা হয়েছে ওয়ার্ড ব্যবস্থাপনা কমিটি স্থানীয় উদ্যমী, পরিশ্রমী ছাত্র, এনজিওকর্মী, স্কাউট, যুব সংগঠন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি হতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করবেন। নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক দল স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিফটিং ডিউটির মাধ্যমে কাজ করবে। খুবই ভাল কথা। আশা করি এটি শুধু কথার কথা হবে না। একজন প্রকাশকের প্রস্থান সন্দেশ প্রকাশনীর প্রকাশক লুৎফর রহমান চৌধুরী আকস্মিকভাবে মারা গেলেন। ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এ পেশায় যুক্ত ছিলেন। শাহবাগের আজিজ মার্কেটে যে কয়জন প্রকাশক প্রথম দিকে বইয়ের দোকান স্থাপন করেছিলেন তিনি তাঁদের একজন। প্রকাশক হিসেবে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত বইমেলায় অংশ নিয়েছেন। সে অর্থে অভিজ্ঞ প্রকাশকই ছিলেন তিনি। শেষের দিকে অনুবাদগ্রন্থ প্রকাশের ওপর বিশেষ জোর দেন। লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশনার মধ্য দিয়ে তিনি ধীরে ধীরে প্রকাশনাশিল্পে জড়িয়ে পড়েন। মানুষ হিসেবে সজ্জন ছিলেন। বইমেলায় তার আন্তরিক ব্যবহার ও অভ্যর্থনা পেয়েছেন বহু লেখক। কয়েক বছর আগে তার পরিবারের সদস্যরা মালয়েশিয়ায় বসবাস করতে শুরু করেন। অমায়িক এ প্রকাশক অনেককেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মালয়েশিয়ায় গেলে তার বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণের। তার আকস্মিক প্রয়াণে এক অনুরাগী লিখেছেন, ‘২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলায় গিয়েছিলাম বিশেষ এক উদ্দেশ্যে, বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত বা নোবেলজয়ী লেখকদের অনুবাদ করা বইয়ের একটি লিস্ট তৈরী করা। বিভিন্ন স্টলে স্টলে অনেক সময় নিয়ে প্রতিটি বই দেখছি এবং নোবেলজয়ী লেখকদের অনুবাদ খুজছিলাম। বিভিন্ন প্রকাশনীর এমন দু একটা অনুবাদ এর বই পাচ্ছিলাম আর স্যাম্পল হিসেবে দুই কপি হিসেবে কিনে নিচ্ছিলাম। ঘুরতে ঘুরতে সন্দেশ প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নে এসে বইগুলোর দিকে চোখ আটকে গেল! যেখানে তাকাই সেখানেই ওরহান পামুক , গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ, আইজাক আসিমভ, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, মারিও ভার্গোস ইয়োসা বা হারমান হেসের সাহিত্যকর্মের অনুবাদগ্রন্থ! সত্যি বলতে আমরা এমন একটা প্রকাশনা খুঁজছিলাম যেখানে এক সঙ্গে অনেকগুলো এমন বই পেয়ে যাব। আমাদের চোখেমুখে খুঁজে পাওয়ার আনন্দ সামনে বসা এক ভদ্রলোকের নজর কেড়েছিল। উনি আমাদের প্রিয় লুৎফর ভাই যিনি সন্দেশ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী।’ ৫ জুলাই ২০২০ [email protected]
×