ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের কালিহাতীর বেলটিয়ায় ৩০টি ঘর যমুনার পেটে

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ৬ জুলাই ২০২০

টাঙ্গাইলের কালিহাতীর বেলটিয়ায় ৩০টি ঘর যমুনার পেটে

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রক্ষা দ্বিতীয় গাইডবাঁধের কাছে ৩০টি ঘরবাড়ি যমুনা নদী গর্ভে চলে গেছে। কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের বেলটিয়া উত্তরপাড়ার বঙ্গবন্ধু সেতুপুর্ব রক্ষাবাঁধ এলাকায় এই ভাঙন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু সুরক্ষায় সেতুর পূর্বপাড়ের দক্ষিন পাশের ভেঙ্গে যাওয়া দ্বিতীয় রক্ষা গাইডবাঁধটি স্থায়ীভাবে নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বি.বি.এ) ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৫০ মিটার কাজ শেষ হতে না হতেই আবার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সুত্রে জানা গেছে, সেতু কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু সেতুপুর্ব গোরিলাবাড়ি হতে বেলটিয়া পর্যন্ত ৫০০ মিটার এলাকায় সেতু রক্ষা গাইডবাঁধের কাজ শেষ করা হয়েছে। সম্প্রতি এই গাইডবাঁধের কাজ শেষ করেছে শহীদ ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাঁধের শেষ হওয়াই পরই ভাঙ্গন শুরু হয়। বাঁধ দেবে ব্লকগুলো নদী গর্ভে চলে গেছে। সেই সাথে ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বেলটিয়া উত্তরপাড়ার নুরুল ইসলাম, সামাদ, সাইবালী, হযরত মওলানা বলেন, রাতের মধ্যেই বাড়িগুলো নিমিষেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরের আসবাবপত্র সরানোর সময় পায়নি। জানা যায়, বিগত ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের গরিলাবাড়ি এলাকায় সেতুর দক্ষিণের কয়েকটি গ্রাম ও সেতুর প্রথম রক্ষাবাধ রক্ষার্থে গাইড বাঁধে যমুনা নদীতে সিসি ব্লক ও কার্পেটিং করে দ্বিতীয় গাইড বাঁধ নির্মাণ করেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। স্থানীয় সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৫০ মিটার কাজের ঠিকাদার নিয়োগ পায় রানা বিল্ডার্স এন্ড সহিদ ব্রাদার্স নামের প্রতিষ্ঠান। এদিকে ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের সহকারি প্রকৌশলী এহসানুল কবীর পাভেল বলেন, সম্প্রতি ৩৩ কোটি টাকা ব্যায়ে বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইডবাধের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। বাকি অংশটুকু পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু এরআগেই ভাঙ্গনে বাঁধের ৩৫ মিটার অংশ দেবে গেছে। টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডেবে যাওয়া অংশে প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হবে ভাঙ্গনরোধ করার জন্য। এরপর আগামী মৌসুমে স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু করা হবে অনুমোদন পাওয়া গেলে। কালিহাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নিপা বলেন, ভাঙ্গনে ২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রশাসন থেকে প্রত্যেক পরিবারকে নগদ দুই হাজার টাকা ও ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, ভাঙ্গনের বিষয়টি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন দুই একদিনের মধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করবেন। এরপরই যতদ্রুত সম্ভব ভাঙ্গনরোধে কাজ করা হবে।
×