ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফুজিৎসুর অর্ধেক কর্মীই স্থায়ীভাবে ‘বাসা-থেকে-কাজ’ করবেন

প্রকাশিত: ১৮:০১, ৬ জুলাই ২০২০

ফুজিৎসুর অর্ধেক কর্মীই স্থায়ীভাবে ‘বাসা-থেকে-কাজ’ করবেন

অনলাইন ডেস্ক ॥ তিন বছরের মধ্যে নিজেদের কার্যালয়ের ব্যাপ্তি অর্ধেক করার পরিকল্পনা জানিয়েছে জাপানী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ফুজিৎসু লিমিটেড। কর্মীদের স্থায়ীভাবে বাসা থেকে কাজ করার সুবিধা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। -- খবর রয়টার্সের। তবে, ফেসবুক, টুইটারসহ সিলিকন ভ্যালির প্রতিষ্ঠানগুলোর একইরকম সিদ্ধান্তের সঙ্গে ফুজিৎসুর এই সংবাদকে একই কাতারে ফেলা সম্ভবত ঠিক হবে না। ফুজিৎসু অবশ্য অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মতোই বলছে, করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ‘নতুন স্বাভাবিক’ পরিস্থিতিতে কর্মীদের কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে । আমাদের অনেকের কাছেই সম্ভবত ফুজিৎসু নামের সঙ্গে সঙ্গে প্রথমেই চোখে ভেসে ওঠে স্মার্ট চেহারার ল্যাপটপ। আদতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যক্তিগত ব্যবহার্য কম্পিউটিং পণ্য তৈরি করলেও এর ব্যাপ্তি যথেষ্টই বড়। ফুজিৎসুর পণ্যতালিকায় ল্যাপটপের পাশাপাশি রয়েছে মেইনফ্রেম কম্পিউটার প্রযুক্তি, প্রসেসর, স্টোরেজ ডিভাইস, টেলিকম যন্ত্রাংশ, মাইক্রোইলেকট্রনিক্স, এয়ার কন্ডিশনিং এবং আইটি সমাধান সেবা। প্রতিষ্ঠানটি হার্ডওয়্যার উৎপাদন থেকে নজর এখন অনেকটাই আইটি সমাধান সেবায় সরিয়ে নিচ্ছে। আর এর সঙ্গে তাল মিলিয়েই জাপানে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৮০ হাজার গ্রুপ কর্মী সুবিধাজনক সময় এবং যেখান থেকে সম্ভব সেখান থেকে ‘বাসা-থেকে-কাজ’ মানের অধীনে কাজ করবেন। “অফিসে বসে প্রতিদিন সম্পাদন করবেন এমন নকশার উপর নির্ভরশীল কর্মীদের কাজ, ভাতা ও কল্যাণ কাঠামো আমরা খতিয়ে দেখছি”। -- বলেছেন মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান হিরোকি হিরামাটসু। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের মতো হার্ডওয়্যার ব্যবসার পরিবর্তে সফটওয়্যার ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছে ফুজিৎসু, অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের হার্ডওয়্যার বিভাগ বন্ধ ও বিক্রি করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অফিসের ব্যাপ্তি কমানোর পাশাপাশি অনেক কর্মী এক স্থানে রয়েছেন এরকম জায়গায় স্যাটেলাইট অফিস স্থাপনের পরিকল্পনা-ও জানিয়েছে ফুজিৎসু। বলা চলে, কাজের স্থান ও পরিবেশের খোলনলচে বদলে ফেলার দিকেই এগুচ্ছে জাপানী এই কর্পোরেশন। ফোর্বস সাময়িকীর মূল্যায়নে কর্মস্থল হিসেবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি ফুজিৎসু। একুশ শতকের শুরুতে নতুন ধারার কর্মপরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল গুগল। সেই ধারাবাহিকতা পরে অনুসরণ করে ফেইসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের খরচে নিয়মিত আহার, নমনীয় কাজের সময়, হট ডেস্ক বা যে কার্যালয়ের যেকোনো স্থানে বসে কাজ করার সুযোগসহ বিভিন্ন নতুন ধারণা যোগ হয় মূলধারার অফিস পরিবেশের সঙ্গে। ফলে, নতুন করোনাভাইরাস মহামারীর সঙ্গে সঙ্গে যখন এইসব প্রতিষ্ঠান 'বাসা-থেকে-কাজ' পদ্ধতি গ্রহন করে সেটিকে সম্ভবত অনেকেই দেখেছেন সিলিকন ভ্যালির সিদ্ধান্ত হিসেবে। ফুজিৎসুর নতুন এই সিদ্ধান্ত জানান দিচ্ছে 'নতুন স্বাভাবিক' কেবল সিলিকন ভ্যালির বিষয় থাকছে না। একে তো গুগল-ফেইসবুক যুগপূর্বের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ফুজিৎসু, তার ওপর এটি জাপানি প্রতিষ্ঠান, যে দেশটি রেওয়াজ মানার বেলায় কট্টর অবস্থানেই স্বাচ্ছন্দবোধ করে। ফলে, ফুজিৎসুর এই সিদ্ধান্ত সম্ভবত গোটা বিশ্বের জন্যই জানান দিচ্ছে যে 'করোনাভাইরাসপূর্ব স্বাভাবিক' দিয়ে আর চলবে না।
×