ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পূর্ণিমার জোয়ারে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

প্রকাশিত: ১১:১১, ৬ জুলাই ২০২০

পূর্ণিমার জোয়ারে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, হাতিয়া ॥ ঘরের মধ্যে হাটু পরিমান পানি, খাটের ওপর এক পাশে ৬ মাসের নবজাতক অন্য পাশে চলছে রান্নার চেষ্টা, ঘরের মধ্যে পানিতে ভাসমান আসবাপত্র গোছানোর ব্যার্থ চেষ্ঠা, বাড়ীর ওঠানে গলা পরিমান পানিতে ছোট শিশুদের মুক্ত সাতাঁর কাটা, এটি নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামের আলাউদ্দিন ড্রাইবারের বাড়ীর দৃশ্য। পূর্ণিমার জোয়ারে আমফানে ভেঙ্গে যাওয়া বেড়ীবাঁধ দিয়ে প্লাবিত পানিতে শুক্রবার থেকে প্রতিদিনই এরকম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নদীর নিকটে বসবাস করা সাধারণ মানুষদের। আলাউদ্দিন ড্রাইবার (৫০) জানান, পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন । ঘরের মধ্যে পানি উঠে যাওয়ায় সকল আসবপত্র খাটের ওপর রাখতে হয়েছে। এতে রাতে ঘুমানোর জায়গা আর থাকলো না। পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। ঘরের মধ্যে পানি, বাড়ীতে পানি, পরিবারের ছোট শিশুদের নিয়ে আতংকে আছি কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে। চরঈশ্বর ইউনিযনের চোকিদার জসিম উদ্দিন (৫৫) জানান, বেড়ীবাঁধ না থাকায় পূর্ণিমার জোয়ারে গত তিনদিন প্রতিদিন আমাদের বসতবাড়ীতে পানি উঠছে। এতে বাড়ীতে রান্না করা যাচ্ছেনা। রান্না করতে হচ্ছে খাটের ওপর উঠিয়ে। একই অবস্থা পাশবর্তী সূখচর, নলচিরা ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামে। এদিকে গত তিনদিন হাতিয়ার সূখচর, নলচিরা ও চরঈশ্বর ইউনিয়নে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দিয়ে পানি ডুকলে ও নতুন করে সোমবার হরনী ও চানন্দী ইউনিয়নে ও বেড়ীবাঁধ না থাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রাম, ফরাজিগ্রাম, বাদশামিয়া হাজিগ্রাম ও সুখচর ইউনিযনের মাকসুদিয়াগ্রাম, আব্দুল গফুরগ্রাম, মৌলভিরগ্রাম, মুলাদিগ্রাম ও কাদির সর্দারগ্রামে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এসব এলাকার ফসলি জমি, মাছের ঘের ও গবাদী পশুর আবাস্থল তলিয়ে গেছে। এ বিষয়ে চরঈশ্বর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসার উদ্দিন জানান, আমফানে হাতিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৭ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যায়, তা আর মেরামত করা হয়নি। চাঁদের হিসাব মতে পুর্নাঙ্গ পূর্ণিমা আজ সোমবার। তাই আগামী আরো কয়েকদিন জোয়ারের তীব্রতা থাকবে। এতে নদীর নিকট বর্তী মানুষদের জরুরী ভিত্তিতে ত্রান সামগ্রী দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রেজাউল করিম জানান, বেঁড়ীবাধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করে কোন ফল পাওয়া যায়নি। এখন ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে মেরামতে ব্যবস্থা করা হবে। তবে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করে ত্রান সামগ্রী দেওয়া হবে।
×