ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘ বিরতির কারণে আবার গোড়া থেকে শুরু করতে হবে

চ্যালেঞ্জের মুখে রুমানা-সালমারা

প্রকাশিত: ২২:০৮, ৬ জুলাই ২০২০

চ্যালেঞ্জের মুখে রুমানা-সালমারা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ চার মাস আগে দেশে ফেরার পর থেকেই হাত-পা গুটিয়ে বসে আছেন বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি২০ বিশ্বকাপ খেলে ফেরার পর কিছুদিন বিশ্রাম পেয়েছিলেন সবাই। সেই বিশ্রামের সময় শেষ হওয়ার আগেই সবধরনের ক্রিকেট কর্মকা- বন্ধ হয়ে যায় বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ায়। তারপর মহিলা দলের ক্রিকেটাররা নিজ নিজ বাড়ি চলে গেছেন, শুধু লতা ম-ল আর জাহানারা আলমই ছিলেন ঢাকায়। দীর্ঘ এই ক্রিকেট বিরতিতে মহিলা ক্রিকেটাররা সেভাবে ফিটনেস ঠিকঠাক রাখার জন্য উপযুক্ত অনুশীলন করতে পারেননি। কারণ অনেকেরই সেই সুযোগ-সুবিধা নেই আবার পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেকে সেসব মেনেও চলতে পারেননি। অথচ ক্রিকেটীয় কর্মকা- শুরুর অপেক্ষা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এখন যতই বিলম্ব হবে, মহিলা ক্রিকেটাররা আরও পিছিয়ে যাবেন এবং এ কারণে শুরুটাও করতে হবে একেবারে গোড়া থেকে। এমনটা মহিলা ক্রিকেটাররাই বলছেন। তাছাড়া যখনই ক্রিকেটে ফিরবেন রুমানা আহমেদ, সালমা খাতুনরা- তাদের নতুন কোচের অধীনে শুরু করতে হবে। অর্থাৎ নতুন চিন্তা-চেতনায় আবার নতুন করে বোঝাপড়া। ক্রিকেটে ফেরাটা তাই হবে সালমা খাতুন-রুমানাদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জের। সর্বশেষ ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা মার্চের শুরুতেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটারদের। এরপর আর মাঠে নামা হয়নি। ফিটনেসের সঙ্গে স্কিলের অবস্থাও যাচ্ছেতাই হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। পূর্ণোদ্যমে স্বাভাবিক দক্ষতায় ফিরতে দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে ক্রিকেটারদের। আর সেই কার্যক্রমগুলো শুরু করতে হবে নতুন কোচিং স্টাফদের অধীনে। দলের বিশ্বকাপ ব্যর্থতার কারণে অঞ্জু জেইনের সঙ্গে শেষ হওয়া চুক্তির মেয়াদ বাড়ায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ফলে এখন নতুন কোচের ধ্যান-ধারণার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে বোঝাপড়া হতেও সময় লাগবে কিছুটা। শারীরিক জড়তা কাটিয়ে ফিটনেস ফিরে পাওয়া, স্বচ্ছন্দ্যবোধ করার বিষয়ে অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। ৪ মাস টানা বিরতিতে বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটারদের অনেকেই সেভাবে ফিটনেস ট্রেনিং বা জিম করতে পারেননি। কারণ সে জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার যথেষ্ট অভাব আছে সবারই। তাছাড়া টানা লকডাউন শুরুর আগেই সবাই নিজ নিজ গ্রামে ফিরে গেছেন বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরে। তারা পুনরায় ফিরতেন মার্চের মাঝামাঝি। মহিলা ক্রিকেটারদের অনুশীলন ক্যাম্প শুরুর কথা ছিল। ২৬ মার্চের পর মহিলা জাতীয় ক্রিকেট লীগ এবং পরবর্তীতে মহিলা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ হওয়ার কথা। সবই ভেস্তে গেছে। ১৭ মার্চ থেকে দেশে সবধরনের ক্রীড়া কর্মকান্ড বন্ধ করাসহ দেশে সাধারাণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। তাই গ্রামে যাওয়া মহিলা ক্রিকেটারদের কেউ আর ঢাকায় ফেরেনি। তারা নিজ এলাকায় গিয়ে ফিটনেস নিয়ে আরও কাজ করার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ৪ মাস মাঠের বাইরে থেকে নিজেদের গুছিয়ে নেয়া, ছন্দে ফেরা, সমঝে ওঠা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এসব কারণে মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য আগামীতে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। যদিও বিসিবি রুমানাদের আশ্বাস দিয়েছে ছেলেদের সঙ্গেই শুরু হবে মেয়েদের ক্রিকেট। ছেলেদের দাবি ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ শুরুর, মেয়েদেরও সেটাই। রুমানা এ বিষয়ে বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু হলে আমরা সমস্যায় পড়ে যেতাম। কারণ টুর্নামেন্ট নিয়ে আমাদের কোন ভাল অনুশীলন হয়নি।’ এখন একেবারে গোড়া থেকে বেসিক কর্মকা- দিয়েই শুরু করতে হবে বলে দাবি রুমানার, ‘ইতোমধ্যেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। যদি ক্রিকেট খেলাটা শুরু হয় এবং মাঠ থেকে কেউ যদি আক্রান্ত হয় সেটি আরও বাজে ব্যাপার হবে। শুরু করেও আবার বিরতিতে যেতে হবে। তাই পুরো বিষয়টি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং।’
×