ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিলাইদহে কুঠিবাড়িসহ ছয় গ্রাম হুমকিতে

পদ্মায় পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাঙ্গন

প্রকাশিত: ২২:২২, ৫ জুলাই ২০২০

পদ্মায় পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাঙ্গন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া, ৪ জুলাই ॥ প্রমত্তা পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। মিরপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া ইউনিয়ন এবং কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় পদ্মার এই আগ্রাসনে ইতোমধ্যেই বিলীন হয়েছে বহু কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি। পদ্মার অব্যাহত ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে শিলাইদহে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য কুঠিবাড়িসহ আশপাশের ছয়টি গ্রাম। জানা যায়, বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই এবার পদ্মা নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিরপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া এবং কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের কোমরকান্দি এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। তালবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ইউনিয়নের অনেক কৃষি জমি এখন নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়েছে। তালবাড়ীয়া বাঁধের পাশেও দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। অপরদিকে কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেড় কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় রবীন্দ্র স্মৃতিধন্য কুঠিবাড়িসহ ছয়টি গ্রাম এখন নদী ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে। এর আগে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনরোধে ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড দুইশ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করলেও দেড় কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ কাজ এখনও অবশিষ্ট রয়েছে। দেড় কিলোমিটার জুড়ে নদী তীর সংরক্ষণ ও বাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি গ্রাম থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার নদী তীর অব্যাহত ভাবে ভাঙ্গছে। পদ্মা পাড়ে কোমরকান্দি গ্রামের জালাল সর্দারের বাড়ি থেকে জলিল প্রামাণিকের বাড়ি পর্যন্ত বাঁধ ধসে পড়ছে। এদিকে নদী ভাঙ্গনে বাড়িসহ ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় কোমরকান্দিসহ পাশাপাশি ৫/৬টি গ্রামের মানুষের দিন কাটছে আতঙ্কে। এছাড়া শিলাইদহে রবীন্দ্র কুঠিবাড়িও রয়েছে পদ্মার ভাঙ্গন ঝুঁকিতে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পীযূষ কৃষ্ণ কুন্ডু শিলাইদহের কোমরকান্দি এলাকার নদী তীর ভাঙ্গনের সত্যতা স্বীকার করে জানান, বর্ষায় প্রতি বছরই নদী তীর ভাঙ্গছে। এবার আগাম ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তবে ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। আত্রাইয়ে ভাঙ্গনের মুখে স্কুল নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, টানাতে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে আত্রাই নদীর পানি। ফলে আত্রাই উপজেলার আটগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চলতি বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের পিছন দিক এবং খেলার মাঠের কিছু অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। বিদ্যালয়ের জমি ইতোমধ্যে গ্রাস করেছে। মাঠের অনেকটা জায়গা ভেঙ্গে গেছে। বর্তমানে ভাঙ্গন ভবনের কাছাকাছি আসায় বিদ্যালয় বাঁচানো নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষক ও এলাকার মানুষ। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদী অনেকটা জমি গ্রাস করেছে। আমরা নদীর পাড়ে বনজ গাছ রোপণ করে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারিনি। বিদ্যালয়ের উত্তর ও পূর্ব পাশে নদীর পাড় প্যালাসাইট দিয়ে বাঁধ দেয়ার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা মাসিক সমন্বয় কমিটির আগামী সভায় বিদ্যালয় ভাঙ্গনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
×