ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অনেক বিএনপি নেতা আইসোলেশনে থেকে প্রেসব্রিফিং করে সরকারের দোষ ধরেন ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ৫ জুলাই ২০২০

অনেক বিএনপি নেতা আইসোলেশনে থেকে প্রেসব্রিফিং করে সরকারের দোষ ধরেন ॥ তথ্যমন্ত্রী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির অনেক নেতা ঘরের মধ্যে আইসোলেশনে থেকে শুধু প্রেসব্রিফিং করে আর সরকারের দোষ ধরেন। তিনি বলেন, ‘ জনগণের সহায়তায় তারা এগিয়ে আসেনি। সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরাই মানুষের পাশে আছে।’ হাছান মাহমুদ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অডিটরিয়ামে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রদান ও বন্যহাতির আক্রমণে মৃত ব্যক্তির পরিবারে সরকারের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা ঘরে বসে বসে শুধু সমালোচনা করছেন, তারা কিন্তু ঘর থেকে বের হচ্ছে না। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ ও সরকারের কেউ কিন্তু বসে নেই। আক্রান্ত হলে কি হতে পারে সেটিও আমি জানি, তাই আমি নিজেও বসে নেই। সব প্রস্তুতি নিয়েই কিন্তু মাঠে কাজ করছি। এই সময়ে দেশের মানুষ যখন আক্রান্ত, তখন হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোন কারণ নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রেহানুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, মুজিবুল হক হিরু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবু তাহের। অনুষ্ঠান শেষে তথ্যমন্ত্রী রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে চিকিৎসা ব্যবস্থার খোঁজ খবর নেন। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার আরও উন্নতি ও আধুনিকায়নে নানা উদ্যোগের কথা জানান। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা নির্দেশনা মেনে জনগণের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। সেই কারণে আমাদের দলের বহু নেতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক নেতা মারা গেছেন। মৃত্যু যেকোন সময় হতে পারে, তাই বলে জনগণের এই দুর্দশার সময় বসে থাকব সেটা হতে পারে না।’ হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারী শুরুর পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য, যাতে খাদ্যের সঙ্কট না হয়, গরিব মানুষের অসুবিধা না হয় সেজন্য নানাভাবে তিনি দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। ক্রমান্বয়ে দেশে করোনাভাইরাস মোকাবেলার সামর্থ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিন মাসের বেশি দুর্যোগে বাংলাদেশে আল্লাহর রহমতে খাদ্যের অভাব হয়নি। খাদ্যের অভাবে কোন মানুষ মারা যায়নি। খাদ্যের জন্য কোন জায়গায় হাহাকার নেই। ‘অন্ধের মতো সমালোচনা গণতান্ত্রিক সমাজে সহায়ক নয়’- তথ্যমন্ত্রী ॥ স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস জানান, সরকারের ভুল ধরিয়ে দিতে গিয়ে অন্ধের মতো সমালোচনা গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা সহায়ক নয়। সরকারী কার্যক্রমের ভুল ত্রুটি দেখিয়ে দেয়ার বিষয়টি সরকার বিশ্বাস করে। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত সাংবাদিকদের মাঝে করোনাকালীন সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ একথা বলেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশ এই করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিল না। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ নিয়ে মোকাবেলা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ভারত পাকিস্তানের চেয়েও কম এমনকি ইউরোপ আমেরিকার চেয়ে অনেক কম। আমরা যদি সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে না পারতাম মৃত্যুর হার ভারত পাকিস্তানের চেয়ে অন্তত বেশি হতো। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাস শুরু হবার পর অনেকেই শঙ্কা-আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। অনেক ধরনের বিশেষজ্ঞ নানা ধরনের মতো দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকের ধারণা ও মতামত ভুল প্রমাণিত হয়ে আজকে করোনাভাইরাসের সাড়ে তিন মাসে বাংলাদেশে আল্লাহর রহমতে একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি। অনেকে আশা করেনি এ ধরনের সাহায্য সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। কিন্তু সরকার মোবাইল ফোনে মানুষের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। মসজিদের ইমামদের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। প্রায় ৭ কোটি মানুষ সরাসরিভাবে সরকারের সহায়তা পেয়েছে। আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছান হয়েছে। মানুষের জন্য ত্রাণ তৎপরতা করতে গিয়ে দলের অনেক নেতা ও মন্ত্রী-এমপি আক্রান্ত হয়েছে, কেন্দ্রীয় কমিটির তিন নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে শারীরিকভাবে সুরক্ষা দেয়ার জন্য প্রথম থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে মানুষ যাতে না খেয়ে না থাকে, মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য তিনি ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি আমাকে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথমে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত অর্থ থেকে আরও ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মোট ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে কারা সহায়তা পাবেন তারা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোই তালিকা করেছেন। যারা ইউনিয়নের বাইরে আছেন তাদের জন্য ডিসির সুপারিশ নিয়ে অন্তর্ভুক্তের অপশন রাখা হয়েছে। প্রথম দফায় ১ হাজার ৫’শ সাংবাদিককে এই সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রাম থেকে ২৫০ সাংবাদিক পাচ্ছেন। এবারে যারা বাদ যাচ্ছেন তারা পরবর্তীতে পাবেন। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী প্রমুখ।
×