ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বদলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ৫ জুলাই ২০২০

বদলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ

দেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন সময়ে দলটি তার কর্মপরিকল্পনা পরিবর্তন করেছে। শুরুতে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানভিত্তিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় ৬০ এর দশকে এসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে সংগঠিত হয়। বিশেষ করে ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ৬ দফা কর্মসূচী ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রিক হয়ে যায়। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বঙ্গভঙ্গ ও পাকিস্তান সৃষ্টির অভিজ্ঞতার নিরিখে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় জাতি সত্তার বিকাশ ও প্রতিষ্ঠা ছাড়া সত্যিকার অর্থে কিছু হবে না। মাওলানা ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগে কিছু পরিবর্তন আসে। বিশেষ করে দলের নাম আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হয়। এ সময় থেকেই আওয়ামী লীগ দুটি মূল নীতিকে দলের আদর্শ হিসেবে মূল্যায়ন করতে শুরু করে। এর একটি হচ্ছে বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও অপরটি ধর্ম নিরপেক্ষতা। মাওলানা ভাসানী ও সোহরাওয়ার্দীর পর আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্ব আসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে। তাঁর নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ বাঙালী জাতীয়তাবাদের চেতনাকে ধারণ করে একটি শক্ত ভিত রচনা করে। বঙ্গবন্ধু ৬ দফা কর্মসূচী ঘোষণা করে আওয়ামী লীগকে বাঙালীর একমাত্র রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দাঁড় করান। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তানের শাসকরা কোন অবস্থাতেই বাঙালী জাতিকে তার মৌলিক, মানবিক, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার দেবে না। বঙ্গবন্ধুর এই উপলব্ধিই আওয়ামী লীগকে বাঙালীর অধিকার আদায়ের রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগে অনেক পরিবর্তন পরিবর্ধন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার এই দুটি নীতি থেকে কখনওই বিচ্যুত হয়নি কিংবা কোন পরিবর্তন করেনি। বরং স্বাধীনতার পর দলে আরেকটি নীতি সংযোজিত হয়েছে, সেটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আওয়ামী লীগের দিকে তাকালেই বাঙালী জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উপলব্ধি করা যায়। বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী অপরাপর রাজনৈতিক শক্তিকেও সঙ্গে নিয়ে পথ চলেছে। সেদিক থেকে আওয়ামী লীগ দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ইস্যুভিত্তিক অপরাপর রাজনৈতিক শক্তিকেও একীভূত করতে পারে এবং পেরেছে। স্বাধীনতার আগে দলটিকে একাই চলতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচীগত দিক থেকে বিরোধী কিন্তু বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ঐক্য করেছে। তাদের সঙ্গে নিয়ে চলেছে। ’৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে আওয়ামী লীগে এই মেরুকরণ শুরু হয়। আওয়ামী লীগের জোটবদ্ধ রাজনীতির যাত্রা শুরু ১৫ দল গঠনের মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতের আরও মেরুকরণ হয়েছে। গঠন হয়েছে মহাজোট। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দলকে ইস্যুভিত্তিক যেমন একীভূত করেছে, আবার জোট মহাজোট ছেড়ে একাও চলেছে। কিন্তু কারও সঙ্গে বৈরিতার সৃষ্টি করেনি। একক রাজনৈতিক যাত্রায় আওয়ামী লীগ প্রথম ৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সাফল্য অর্জন করে, যা পরবর্তীতে স্বাধীনতার পথযাত্রাকে বেগবান করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েও অনেকের প্রক্রিয়াগত বিরোধিতা ছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ ছোটখাটো মতবিরোধকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় স্বার্থকে নস্যাৎ হতে দেয়নি। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরের অনেক ঘটনা বিশ্লেষণ করলে বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়ে যায়। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগ সত্যিকার অর্থেই বিপাকে পড়েছিল। ’৭৫ থেকে ’৮১ সাল পর্যন্ত টালমাটাল আওয়ামী লীগ রাজনীতির মহাসমুদ্রে ঘুরপাক খেয়েছে। সঠিক দিশায় চলতে পারেনি। পরবর্তীতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসে হাল ধরায় আওয়ামী লীগ অথৈ সাগরে ভাসতে ভাসতে আবার কূলে ফিরতে শুরু করে। জাতীয় কবি নজরুলের কবিতার সেই বাণী ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার’ হয়ে আওয়ামী লীগকে আবার তার স্বরূপে ফিরিয়ে আনেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি শক্ত হাতে দলকে সংগঠিত করেন। দেশী-বিদেশী বহুমাত্রিক চক্রান্ত তাঁকে হত্যা করার একাধিক পরিকল্পনা করেও সফল হয়নি। বরং তিনি ক্রমাগত দৃঢ় চেতা হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগকে স্বাধীন বাংলাদেশে দীর্ঘদিন লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন নিপীড়ন। তারপরও আওয়ামী লীগ থেমে যায়নি, থেমে থাকেনি। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই টানা ২১ বছর পর ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে। সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ শাসনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেন। সীমাহীন লুটপাট বন্ধ করে জনকল্যাণের শাসন ব্যবস্থা চালু করেন। কিন্তু সুবিধাভোগী বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এটাকে মেনে নিতে পারেনি। ফলে ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দেয়া হয়। এখান থেকেও আওয়ামী লীগ শিক্ষা নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। সে অভিজ্ঞতার আলোকে পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে। এ সময়ে আওয়ামী লীগ তার দলীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও শাসন ব্যবস্থায় সময়ের দাবিকে সমন্বিত করে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পথ চলতে শুরু করে। এ যাত্রায় দুটি সমান্তরাল সাফল্য আওয়ামী লীগকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। এক, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতিশীলতা সৃষ্টি এবং অপরটি হচ্ছে নেতৃত্বে শেখ হাসিনার একক অবস্থান। দি¦তীয় বার ক্ষমতায় এসে সামরিক-বেসামরিক-আমলাতান্ত্রিক সকল নিয়ামক শক্তিকে শেখ হাসিনা তাঁর দূরদর্শিতা দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সহযোগী হিসেবে কাছে টানতে সক্ষম হন। ফলে, দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো খাতে আলাদিনের চেরাগের মতো সাফল্য আসতে শুরু করে। এতে করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হয়, তেমনি শেখ হাসিনাও একজন দক্ষ জাঁদরেল রাজনীতিক হিসেবে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রাষ্ট্রের নিয়ামক শক্তিগুলোকে আস্থার সঙ্গে কাছে টানতে পারায় একে একে অনেক সমস্যার সমাধান হতে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে বিবদমান অনেক বিষয়ের নিষ্পত্তি, সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক, ইউরোপ-আমেরিকায় বাংলাদেশের অবস্থানকে সুদৃঢ়করণ ইত্যাদি। শেখ হাসিনার এই দূরদর্শী কূটনৈতিক রাজনীতির ফলে বাংলাদেশ বৈদেশিক বাণিজ্যে ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়। দেশে অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা, মানবসম্পদ সৃষ্টিতে সাফল্যসহ সকল ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নতুন এক বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে। প্রশাসনিক দিকে থেকে এসব কর্মকান্ডের পাশাপশি রানৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও আওয়ামী লীগে পরিবর্তন আসে। সময়ের দাবিতে পরিবর্তিত হওয়ার দূরদর্শিতা ও সক্ষমতা আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে রয়েছে। দলের নেতৃত্বে ক্রমাগতভাবে পরিবর্তন এসেছে। এক সময় যাদের ছাড়া আওয়ামী লীগকে ভাবাই যেত না, তাদের নেতৃত্ব ছাড়াও দল সুসংগঠিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সব সময়ই সময়কে ধারণ করে পথ চলে। বলতে গেলে বর্ষীয়াণ কোন নেতাই আওয়ামী লীগের বর্তমানে নেতৃত্বে নেই। তারা আছেন পরামর্শক হিসেবে। দল চলছে অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং মধ্য বয়সীদের নেতৃত্বে। তাতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। একটা সময় ছিল, যখন অন্যান্য পেশার লোকজন আওয়ামী লীগে আসতে চাইত না। কিন্তু এখন আর সেদিন নেই। এখন সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগে আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। আগেই বলেছি, আওয়ামী লীগ সব সময়ই সময়ের দাবিকে সামনে রেখে পথ চলে। সারা দুনিয়ায় এখন তারুণ্যের জয়গান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকতে পাওে না। প্রবীণদের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনায় তরুণ নেতৃত্বকেই সব চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনার নজর সেদিকেই। যার ফলে তিনি আজ একই সঙ্গে বন্ধুপ্রতীম ভারত, বৈরী আমেরিকা এবং চীনের সঙ্গে একই মাত্রায় সুসম্পর্ক রেখে বিশ্ববাসীর ভাবনায় বাংলাদেশকে বিস্তৃত করে চলেছেন। ভূখন্ডের পরিমাপে ছোট্ট এক টুকরো বাংলাদেশ এখন বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। বাংলাদেশকে নিয়ে এখন অনেকেই চিন্তাভাবনা করে বহির্বিশ্বে। করোনা মহামারীর এই সময়ে বাংলাদেশ সীমিত পরিকাঠামো ও সামর্থ্য নিয়ে যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে চলছে, তা অনেক দেশের তুলনা অনুশীলনীয়। বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে করোনায় মরার আগে এতদিনে না খেয়ে অনেক মানুষ মরার কথা। কিন্তু বিস্ময়করভাবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সমস্যা আছে, থাকবেও। তার মধ্য দিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সরকারী হিসেবে সারাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ কোটি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক। করোনার কোন প্রভাব বাজারে দেখা যায় না। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি দেশের কৃষি। এর পর শিল্প-বাণিজ্য এবং অন্যান্য খাত। করোনার এই মহা আপৎকালেও বোরো উৎপাদনে শতভাগ সফলতা এসেছে। এ বছর দেশের কোথাও কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের সর্বনাশের খবর শোনা যায়নি। খাদ্য মজুদ সন্তোষজনক। বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় সেনা সদস্যরা বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নিয়ে বাজার পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হয়েছে। প্রশ্ন আছে স্বাস্থ্যখাত নিয়ে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিস্মিত। তারপরও সার্বিক বিবেচনায় এই সীমাবদ্ধতার দেশে করোনাকালীন ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবারে’ বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই এগিয়ে যাওয়ার মূল চালিকা শক্তি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই দেশে সব চেয়ে বড় ডাক্তার। চরম প্রতিকূল অবস্থায়ও প্রতিনিয়ত তিনি দেশবাসীকে অভয় দিচ্ছেন, সাহস যোগাচ্ছেন। সবাইকে মনোবল অটুট রেখে নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। কোন হতাশা নেই। তাঁর কথাবার্তা শুনলে মনে ভরসা জাগে, নিশ্চয়ই করোনা যুদ্ধেও বাংলাদেশ জয়ী হবে। আগের মতো এখন আর তিনি সারাদেশে ছুটে যেতে পারেন না। তারপরও বসে নেই। প্রতিনিয়ত করোনা যোদ্ধাদের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। এর মধ্যে অলক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন তিনি সাধন করেছেন। সেটি হচ্ছে ব্যবস্থাপনা। বাংলাদেশে যারা নীতি নির্ধারক তারাই ব্যবস্থাপক। পার্লামেন্টের সদস্যদের কাজ আইন প্রণয়ন করা। দেশের প্রশাসন পরিচালনা ও সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের। এ নিয়ে অতীতে অনেক বাহাস হয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কিছু হয়নি। এবার থেকে যে এটাই বিধান হয়ে যাচ্ছে, তা মনে করি না। কিন্তু দৃশ্যমান হচ্ছে, করোনাকালীন সময়ে সরকারের সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের। তারাই ত্রাণ দিচ্ছে, মনিটর করছে। সমন্বয় সাধনের দায়িত্বও তাদের ওপর। তাহলে আইন সভার সদস্যরা কি করবেন বা করছেন। আইন সভার সদস্যদের দায়িত্ব হচ্ছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের কাজ পর্যবেক্ষণ করা, তাদের পরামর্শ দেয়া। কোথাও সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে হেরফের হলে কিংবা গাফিলতি দেখা গেলে তা প্রতিকারের পন্থা উদ্ভাবন করা। সিদ্ধান্ত নিয়ে নয়, বরং পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এই পরিকল্পনাকেও ধরে নেয়া যায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির আধুনিকায়ন। আর এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যদি আগামী দিনে দলের নীতিনির্ধারণে এবং কর্মপরিকল্পনায় কোন পরিবর্তন আসে, তবে মনে করতে আওয়ামী লীগ সময়ের দাবিকে ধারণ করে এগিয়ে চলার আরেকটি পদক্ষেপ নিচ্ছে। আর এই সময়কে ধারণ করার প্রক্রিয়ায় দলের সাংগঠনিক নেতৃত্ব থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনায় বাঙালী জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমন্নত রেখে আগামী দিনের বাংলাদেশের জন্যই আওয়ামী বদলে যাচ্ছে, হয়তো আরও যাবে আগামীতে। লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন
×