ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পটুয়াখালী হাসপাতালের ১৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৯ জন করোনায় আক্রান্ত

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ৪ জুলাই ২০২০

পটুয়াখালী হাসপাতালের ১৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৯ জন করোনায় আক্রান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী ॥ পটুয়াখালী উপকূলের মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসারস্থল পটুয়াখালী আড়াইশ শয্যা হাসপাতাল। বর্তমানে মাত্র ৫ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে সাধারণ চিকিৎসা সেবা ও করোনা রোগীদের চিকিৎসা। হাসপাতালটিতে ৫৮ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ১৬ জন। চিকিৎসক সংকটের কারণে দীর্ঘ দিন যাবৎ পটুয়াখালী আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বেহাল অবস্থা চলে আসছিলো। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ৯ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর। এ ছাড়া ২০ জন সেবিকা ও ১ জন স্টাফসহ মোট ৩০ জন আক্রান্ত। ফলে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হওয়ার পথে এ হাসপাতালটির। পটুয়াখালী আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোগী যখন হাসপাতালে সেবা নিতে আসেন তখন তথ্য গোপন করেন। এছাড়া উপসর্গ বিহীন অনেক বেশি রোগী আসছে। যখন তাদের অক্সিজেন মাপা হয় তখন ধরা পড়ে। বা নমুনা দিলে ধরা পড়ে। এর আগে ওইসব রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক রোগী বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। হটাৎ করেই শ্বাসকষ্ট বেরে যাওয়ায় তারা হাসপাতালে আসেন। রোগীদের যে অবস্থা দেখছি তাতে পটুয়াখালীর জন্য সামনে ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে। নাম প্রকাশে না করার শর্তে একজন চিকিৎসক জানান, পটুয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই এখন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ক'দিন পরে চিকিৎসা দেয়ার জন্য কাউকে পাওয়া যাবে না। যা উপকূলবাসীর জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। একাধিক সেবিকা জানান, আমাদের অনেকের স্বামী পজেটিভ, কিন্তু আমরা তারপরও ডিউটি করছি। আমাদের অনেকের রিপোর্ট আসছে। অনেকে যে নমুনা দিয়েছি, সেই রিপোর্টও আসেনি। যার কারণে আমার মাধ্যমে অন্য নার্স বা ডাক্তাররা আক্রান্ত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। জানাগেছে, করোনাকালীন সময়ে রোষ্টার পদ্ধতিতে সাত জন চিকিৎসক টানা ৭ দিন চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে। এরপর ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকবেন। এ সময় অন্য সাত জন চিকিৎসক চিকিৎসা সেবা প্রদান করবেন। আর পটুয়াখালীর চিত্র উল্টো। এখানে প্রতিদিন সকল চিকিৎসককে উপস্থিত থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে বাধ্য করছেন পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মতিন। বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের রোস্টার পদ্ধতি বাতিল করায় ইতোমধ্যে চিকিৎসা, নার্স ও অন্য ষ্টাফসহ মোট ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এবিষয়ে জানতে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মতিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, চিকিৎসক যা আছে তাই দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালু রাখতে হচ্ছে।
×