ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইনে শিশুদের বর্ম দিচ্ছেন বাঙালী

প্রকাশিত: ২৩:৪৭, ৪ জুলাই ২০২০

অনলাইনে শিশুদের বর্ম দিচ্ছেন বাঙালী

আনন্দবাজার ॥ দিন দিন শিশুদের মধ্যে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। তাতে শিশুদের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে বলে শিক্ষক-গবেষকদের অভিমত। তাঁদের আশঙ্কা, স্মার্টফোন, ট্যাবলেটের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে শিশু অপহরণের ঘটনাও ঘটতে পারে। এই বিপদ থেকে বাঁচাতে শিশুদের অনলাইন গোপনীয়তা রক্ষার একটি এ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছেন আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, ডালাসের এক দল গবেষক। এ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি হয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কণাদ বসুর নেতৃত্বে। গবেষক দলে রয়েছেন কলেজ পড়ুয়া সুহা হুসেন। সুহার আদি বাড়ি বাংলাদেশে। হাই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তিনি এই গবেষণায় যুক্ত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী কণাদ বাবুু বৃহস্পতিবার জানান, তাঁদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুদের জন্য তৈরি ১০০ এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে ৭২টিই ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ ও বিলি করে দিচ্ছে। এটা আমেরিকার শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা ও গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করছে। ‘অভিভাবকরা হয়ত মনে করছেন, তাঁর সন্তান স্মার্টফোনে এমন এ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করছে, যাতে সে শিক্ষাই পাচ্ছে। এর থেকে কী এমন ক্ষতি হতে পারে! কিন্তু অনেক এ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীর অগোচরে নাম, অবস্থান, ফোন নম্বর এবং এ্যান্ড্রয়েড বিজ্ঞাপন আইডির মতো জিনিস ভাগ করে নেয়। মোবাইল ব্যবহারকারীর পরিচয় খুঁজে বার করার জন্য সেই আইডি দেয়া হয় বিজ্ঞাপনদাতাদের,’ বলেন কণাদ বাবু। পরিসংখ্যান দিয়ে কণাদ বাবু জানান, আমেরিকায় ২০১১ সালে আট বছর বয়স পর্যন্ত ৪১% শিশু স্মার্টফোন ফোন ব্যবহার করত। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৯৫%। ২০১১-এ এই বয়সের ৮% শিশু ট্যাবলেট ব্যবহার করত। ২০১৮-এ তা বেড়ে ৭৮% হয়েছে! ২০১১ সালে এই বয়সের ১% শিশুর কাছে নিজস্ব ট্যাবলেট ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪২%। শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্ব জুড়ে শিশুদের মধ্যে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। যেসব এ্যাপ নির্দিষ্ট আইন মেনে চলে না, আমেরিকার ফেডারেল ট্রেড কমিশন তাদের নিয়মিত আর্থিক দণ্ড দেয়। এরই মধ্যে টিকটক এ্যাপকে প্রায় ৪৩ কোটি ভারতীয় টাকা অর্থদণ্ড দিতে হয়েছে। ব্যবহারকারীর গোপন তথ্য প্রকাশ করে দেয়ায় ২০১৯ সালে ৭৫৭ কোটি ভারতীয় টাকা অর্থদণ্ড দিতে হয়েছে ফেসবুককেও। এমন বিপদ থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্যই কণাদ বাবুর নেতৃত্বাধীন গবেষক দল বিশেষ এ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। তবে তা সফটওয়্যারও নয়। সেটি মোবাইল ফোন, ট্যাবলেটের হার্ডওয়্যার লেভেলে কাজ করবে। ধরিয়ে দেবে কোন এ্যাপ্লিকেশন গোপনীয়তা লঙ্ঘন করছে কি না।
×