ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একদিনে সর্বাধিক ৪০১৯ করোনা রোগী শনাক্ত

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ৩ জুলাই ২০২০

একদিনে সর্বাধিক ৪০১৯ করোনা রোগী শনাক্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একদিনে আবার সর্বাধিক করোনা রোগী ৪০১৯ জন শনাক্ত হয়েছে বৃহস্পতিবার। এর আগে গত ২৯ জুন একদিনে শনাক্ত হয়েছিল ৪০১৪ জন। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৩৮ জনসহ এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ১৯২৬ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ৪৩৩৪ সহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৬৬ হাজার ৪৪২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৩৬২টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮ লাখ ২ হাজার ৬৯৭টি। পরীক্ষার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ৩২ পুরুষ এবং ছয় নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে দুই জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে সাত জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে আট জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুই জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুই জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন, বরিশাল বিভাগে দুজন, রাজশাহী বিভাগে পাঁচ জন, খুলনা বিভাগে পাঁচ জন, সিলেট বিভাগে দুজন এবং রংপুর বিভাগে একজন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৩ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন পাঁচ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৯৬০ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৭৫৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৭৫ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৭৫ জন। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশন করা হয় ২৮ হাজার ৫০২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে দুই হাজার ৮৯৪ জনকে। এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৬৯ হাজার ১৮৯ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন তিন হাজার ১৬৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন তিন লাখ পাঁচ হাজার ১৮১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৩ হাজার ৬০৮ জন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা আরও জানান, দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২। আর দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, এখন পর্যন্ত মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৪৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বয়সী ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ। ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, ১ জুলাইয়ের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগীর মধ্যে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৭ হাজার ৮৭৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৭৭৫ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কমলেও শনাক্তে হয়েছে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ছিল চার হাজার ১৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় গত ২৯ জুনের বুলেটিনে। দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ৩০ জুনের বুলেটিনে। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল রয়েছে ১৬টি এবং মহানগরীর বাইরে ঢাকা জেলায় একটি। ঢাকা মহানগরে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা ছয় হাজার ৭৭৩ এবং আইসিইউ বেড রয়েছে ১৮০টি। রোগী ভর্তি রয়েছেন দুই হাজার ৩৭৫ জন এবং আইসিইউতে রোগী রয়েছেন ৯৭ জন। সব বিভাগ মিলিয়ে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৬১০টি এবং আইসিইউ রয়েছে ৩৭৯টি। সব বিভাগে রোগী ভর্তি হয়েছেন চার হাজার ৬৯১ জন, আর আইসিইউতে রয়েছেন ১৮৩ জন।
×