ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৮৪

চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ছাড়াল ৯ হাজার

প্রকাশিত: ২২:০৩, ৩ জুলাই ২০২০

চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ছাড়াল ৯ হাজার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে নতুন করে ২৭১ জনসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছেন আরও ৬ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৮৪। নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ ক্রমেই বৃদ্ধির প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে নগর এবং উপজেলা পর্যায়ে সাধারণের মধ্যে উৎকণ্ঠাও বাড়ছে। তবে পাশাপাশি কিছুটা স্বস্তির দিক হলো সরকারী হাসপাতালগুলোতে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে করোনা রোগীর চিকিৎসায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ফিল্ড হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩৭৩টি। এরমধ্যে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ২৭১। চট্টগ্রামে এ নিয়ে এখন করোনা পজিটিভ উন্নীত হয়েছে ৯ হাজার ১২৩ জনে। ইতোমধ্যে ৬ হাজার ২৮৫ জন মহানগর এলাকায় এবং ২ হাজার ৮৩৮ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ৬ জনের মৃত্যুসহ জেলায় মৃতের সংখ্যা ১৮৪। এরমধ্যে ১৩৬ জন মহানগরের, বাকি ৪৮ জন বিভিন্ন উপজেলার। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ১৯ জন। চট্টগ্রাম জেলায় এ নিয়ে সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৮৪ জন। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামে মোট ৬ ল্যাব এবং কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পরীক্ষা হয়েছে নমুনাগুলো। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৪২ নমুনা পরীক্ষায় ৫১, ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিআইটিআইডি (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এবং ইনফেকসাস ডিজিজেস) ল্যাবে ৩১৫টি নমুনা পরীক্ষায় ২৩, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৪০৮ নমুনা পরীক্ষায় ১০০, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এ্যান্ড এ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে ২৫৪টি নমুনা পরীক্ষায় ২৫, বেসরকারী ইম্পেরিয়াল হসপিটালে ১৫৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৪১ এবং শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবটেরিতে ৯৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৩০ করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামে একটি নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়। বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় মোট আক্রান্তের মধ্যে মহানগরীর বাইরে শনাক্ত হয়েছে ৮৪ জন। এরমধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলায় ১৫, মীরসরাই উপজেলায় ১১, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলায় ১০ জন করে, রাঙ্গুনিয়ায় ৯, সীতাকুন্ডে ৭, পটিয়ায় ৬, বাঁশখালীতে ৫, সাতকানিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলায় ৪ জন করে এবং আনোয়ারা উপজেলায় ৩ জন। প্রথম শুধুমাত্র মহানগর এলাকাতেই করোনা সংক্রমণ সীমিত থাকলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়ছে গ্রাম পর্যায়ে। আক্রান্তের সংখ্যা বিচারে সবুজ জোন বলতে কোন উপজেলাই আর নেই। বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ ও চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র উদ্বোধন ॥ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগরের পাথরঘাটা ওয়ার্ডে এলাকায় বিনামূল্যে প্রতিষ্ঠিত অক্সিজেন, জরুরী ওষুধসরবরাহ ও টেলি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ইসমাইল বালীর উদ্যোগে এ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চসিক মেয়র বলেন, সম্পূর্ণ অজানা-অচেনা-অদৃশ্য করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের রণকৌশল আগে থেকে নির্ধারিত থাকার কথা নয়। বাংলাদেশের তো নয়, উন্নত দেশগুলোরও ছিল না। প্রস্তুতিবিহীন এই যুদ্ধ সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় শূন্য থেকেই শুরু করতে হয়েছে। তাই অযৌক্তিক সমালোচনা অর্থহীন। সক্ষমতা ও সামর্থ্যরে মাত্রা বিবেচনা এবং বাস্তবতার নীরিখে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও সম্মিলিত অংশগ্রহণ এবং সমন্বয় ছাড়া শুধু মুখের কথা বারবার আউড়িয়ে কোন ফলোদয় হবে না। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের পিকটাইমে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নেই অবস্থা। তাই আক্রান্তরা কাক্সিক্ষত সেবা না পাওয়ারই কথা। গণমাধ্যমে এ নিয়ে হাহাকার ফলাও করে প্রচার হচ্ছে কিন্তু বাস্তবতা, সক্ষমতা ও চিকিৎকদের সীমাবদ্ধতার ঘাটতিগুলো তুলে ধরা হচ্ছে না। মনে রাখতে হবে, তড়িঘড়ি প্রশিক্ষণ দিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তৈরি করা যায় না এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম ও করোনা বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র আগে থেকেই ছিল না। তাই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাময়িক অসুবিধা থাকলেও তা নিরসন হবে। মেয়র উল্লেখ করেন যে, প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আতঙ্কের কারণ নেই। কারণ চিকিৎসাকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিকাংশই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, মোহাম্মদ ইকবাল, মহল্লা সর্দার আবু মোহাম্মদ জামাল, সমাজ সেবক দেবব্রত দাশ দেবু, মাওলানা মোহাম্মদ ইউছুফ প্রমুখ।
×