ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া

সড়কের কাজ বন্ধ ॥ জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ৩ জুলাই ২০২০

সড়কের কাজ বন্ধ ॥ জনদুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ২ জুলাই ॥ জেলার হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া উপজেলা সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। পাশাপাশি সড়কের দু’পাশের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হচ্ছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কাজ ফেলে রাখলেও দায়িত্বশীলরা এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। হোসেনপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ আব্দুল কাইয়ুম খোকন রাস্তার এ জনদুর্ভোগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চিঠি দিয়েছেন। চিঠির অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাঃ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপিসহ রাস্তার প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া উপজেলা সড়কের ৩ দশমিক ৮০০ কিলোমিটার অংশের কাজ পেয়েছে ঢাকার মতিঝিল এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ১৩ নবেম্বর কাজটি শুরু করলেও নির্দিষ্ট সময়ে তা সম্পন্ন করতে পারেনি। পরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রাস্তার কাজ শেষ করার জন্য সময় বাড়িয়ে নেয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তার কাজ শেষ না করে সময়ক্ষেপণ করছে। আর এতেই বর্ষায় ব্যস্ততম সড়কটিতে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সড়কের পাশে ওয়ার্কশপের ব্যবসায়ী মোঃ কফিল উদ্দিন জানান, এক বছর ধরে রাস্তার কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। রাস্তার পাশের ড্রেনের রডগুলো খোলা থাকায় অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়া রাস্তার মধ্যে বড় বড় গর্ত থাকায় অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেল উল্টে আহত হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। আর রাস্তার দু’পাশে প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। রাস্তাটির বর্তমান বেহাল দশায় পণ্যসামগ্রী বিক্রিও করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানান তারা। সড়কের দু’পাশের ব্যবসায়ীরা জানায়, হোসেনপুর হাসপাতাল চৌরাস্তা থেকে শুরুর অংশের রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে ব্যবসা করতে না পেরে খুবই কষ্টে আছেন। রাস্তার কাজ কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। তারা দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। এদিকে হোসেনপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের ‘বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া উপজেলা সড়কের ৩ দশমিক ৮০০ কিলোমিটার অংশের কাজটি ৩ কোটি ৬৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮৭০ টাকা ৪৬ পয়সার চুক্তি মূল্যে ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নেয়। এরপর রাস্তার কাজ শুরু করে পর্যায়ক্রমে এক কোটি ১৮ লাখ ১৩ হাজার টাকার বিলও তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে রাস্তার কাজটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তার কাজটি সম্পন্ন করেনি। রাস্তাটির ৩৫ শতাংশ কাজ হয়েছে বলেও জানা যায়। এ বিষয়ে ডলি কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি (সাইটের দায়িত্বে নিয়োজিত) সাকিল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তার পাথর না পাওয়া ও বর্তমানে করোনার কারণে কাজটি শেষ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে রাস্তার কাজটি আবার শুরু করা হবে। হোসেনপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ আব্দুল কাইয়ুম খোকন জানান, উপজেলার জনগণের দুর্ভোগ লাগবে এবং বৃহত্তর জনস্বার্থে অন্তত পক্ষে রাস্তাটির প্রথম অংশ চেইনেজ ০ (শূন্য) হতে ৪৯৫ মিটার পর্যন্ত আরসিসি ও চেইনেজ ৪৯৫ মিটার হতে ১৬০০ মিটার পর্যন্ত বিসি জরুরী ভিত্তিতে সম্পাদন করার নিমিত্তে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী এ জেড এম রকিবুল আহসান গণমাধ্যমকে জানান, ঠিকাদার ও রাস্তার কাজের অগ্রগতির বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×