ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তে রেকর্ড

প্রকাশিত: ২১:৫১, ২ জুলাই ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তে রেকর্ড

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে টালমাটাল সারাবিশ্ব। প্রতিদিনই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ শুরু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। আর একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড গড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ লাখ ১৫ হাজার ৬ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৬ লাখ ৩১ হাজার ৬৫৫ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার ২৮২ জন। খবর সিএনএন, রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা, এনডিটিভি ও সিনহুয়ার। একদিনে আক্রান্তের রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রে ॥ করোনায় বিশ্বের শীর্ষ আক্রান্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসটির সংক্রমণ কমছেই না। মঙ্গলবার একদিনে আরও ৪৭ হাজারেরও বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দেশটিতে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের ঘটনা। এদিকে মার্কিন শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে এই সংখ্যাটা লাখ ছুঁতে পারে। প্রথমদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসটির সংক্রমণের কেন্দ্র ছিল সবচেয়ে জনবহুল অঙ্গরাজ্য নিউইয়র্ক। কিন্তু সেখানে ভাইরাসটির বিস্তার এখন অনেকটা কমলেও নতুন করে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, এ্যারিজোনা ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। আরও বেশ কিছু রাজ্যেও সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের করোনা টাস্কফোর্সের সদস্য এবং শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় বিশ্বের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত ড. এ্যান্থনি ফাউচি মঙ্গলবার মার্কিন সিনেট কমিটির এক শুনানিতে বলেছেন, ‘স্পষ্টতই, এটি (মহামারি) এখনও আমাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই। আমি খুবই উদ্বিগ্ন কারণ এটা খুব ভয়াবহ হতে পারে। জুনে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ১০টি অঙ্গরাজ্যে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। টেক্সাস এবং এ্যারিজোনার কিছু অংশের হাসপাতালগুলোতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বেডের সংখ্যার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আরও অনেক রাজ্যেই এমন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। করোনায় ইতোমধ্যে ১ লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ২৭ লাখেরও বেশি মার্কিনীর দেহে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। স্কুল খুলেছে থাইল্যান্ডে ॥ করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চের মাঝের দিকে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে থাইল্যান্ড। বুধবার থেকে বেশ কিছু বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে দেশটির স্কুল পুনরায় খুলেছে। সরকার বলছে, স্কুলে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা পরিমাপ এবং শ্রেণীকক্ষে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় অস্থায়ী কুঠুরি তৈরি করা হবে। দেশটির রাজধানী ব্যাঙ্কক থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরাঞ্চলের স্যাম খোক স্কুলের অধ্যক্ষ চুচার্ট থিয়েংথ্যাম অতিরিক্ত পূর্ব-সতর্কতা হিসেবে স্কুল শুরুর আগে ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে ১৫ দিনের জন্য স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ায় ফের সংক্রমণ ॥ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের উত্তরের শহরতলীতে বুধবার থেকে নতুন করে আরও ৩ লাখের বেশি মানুষকে লকডাউন করে রাখা হচ্ছে। অথচ দেশটিকে করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল হিসেবে ভাবা হচ্ছিল। নিয়ন্ত্রণে এসেছিলও বটে, তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশটির দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাজ্যটিতে ফের প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ায় এই পদক্ষেপ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়া বেশ সফল বলেই বিবেচিত হচ্ছিল। প্রাদুর্ভাব শুরুর পর মোট ৭ হাজার ৯২০ জন কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত রোগীর বেশিরভাগ সুস্থ। সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা এখন ৪০০ এর কম। আর মারা গেছে ১০৪ জন। তবে ফের শনাক্ত রোগী বাড়তে থাকায় দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বুধবার রাত থেকে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের ৩০টির বেশি এলাকায় তৃতীয় ধাপের লকডাউন নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মহামারী করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য লকডাউনের তিনটি সর্বোচ্চ কঠোর ধাপের মধ্যে এটি একটি। এর অর্থ হলো এখন মুদি দোকানে কেনাকাট, চিকিৎসা সেবা, কর্মস্থলে যাওয়া এবং সীমিত আকারে শরীরচর্চা ছাড়া এসব মানুষ এখন ঘরবন্দী থাকবে। মঙ্গলবার ভিক্টোরিয়ায় রাজ্যজুড়ে ২০ হাজার ৬৬৮ জনের করোনা পরীক্ষার পর ৭৩ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। সোমবার এই সংখ্যাটা ছিল ৭৫ জন। মৃত্যুর নতুন রেকর্ড ভারতে ॥ এবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড গড়েছে ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ৫০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, একদিনে রেকর্ড মৃত্যুর কারণে দেশে এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪শ’। অপরদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৬৫৩ জন। ফলে ভারতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪৯৩। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২ লাখ ২০ হাজার ১১৪ জন। অপরদিকে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, দিল্লী, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা ও কর্নাটকের বাসিন্দা। ব্রাজিলে একদিনের ব্যবধানে মৃত্যু দ্বিগুণ ॥ লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১ হাজার ২৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিনের হিসাব অনুযায়ী, নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৭২৭ জনের। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানেই দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অপরদিকে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ।
×