ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সামনে বড় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ লক্ষ্য জীবন বাঁচানো এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধার সময় কঠিন হলেও অঙ্গীকার পূরণে অর্থমন্ত্রীর আশাবাদ

শুরু হলো পথচলা ॥ নতুন অর্থ বছর

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ২ জুলাই ২০২০

শুরু হলো পথচলা ॥ নতুন অর্থ বছর

এম শাহজাহান ॥ বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবছর। করোনা থেকে জীবন বাঁচানো ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে করা চলতি অর্থবছরের প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া থাকবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা পরস্থিতির মোকাবেলা। সময় কঠিন হলেও সর্ববৃহৎ বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলা করে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনের ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অন্যদিকে অর্থ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের বাজেট হচ্ছে-চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে টিকে থাকার বাজেট। কঠিন হলেও অসম্ভব নয় অর্থমন্ত্রীর এই বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন। তাদের মতে, আগে করোনা থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্য খাতের অনুকূলে যেসব বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার সঠিক বাস্তবায়ন জরুরী। অর্থবছরের প্রথম দিন বুধবার নতুন করে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়েনি। করোনা পরিস্থিতিতে বাজেট তৈরিতে মানুষের জীবন-জীবিকাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। চাল, ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ ও মসলাসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কমানো হয়েছে কর্পোরেট করহার। এছাড়া মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসায় বাড়তি করারোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে নির্দিষ্ট সময়ে পদ্মা সেতুসহ বড় বড় প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার জন্য বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাজেটের শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যত পথ পরিক্রমা’। বাজেটে কালো টাকা বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। কর ও ভ্যাট বাড়ানো হয়নি। বরং করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া বাজেট ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে দেশের বড় ও ক্ষুদ্র শিল্প কারখানাগুলোকে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বেশ কিছু নীতিগত পলিসি গ্রহণ করতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া করোনা সঙ্কট উত্তরণ ও বাজেট বাস্তবায়নে চারটি কৌশলের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের কর্মপন্থার চারটি প্রধান কৌশলগত দিক রয়েছে। প্রথম কৌশলটি হলো সরকারী ব্যয়ের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দেয়া, বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা, গত এক দশকের সুশৃঙ্খল মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতি বাস্তবায়নের ফলে আমাদের ঋণের স্থিতি জিডিপির অনুপাত অত্যন্ত কম (৩৪ শতাংশ) হওয়ায় প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সরকারী ব্যয় বড় আকারে বাড়লেও তা সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। এছাড়া দ্বিতীয় কৌশলটি হলো-ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রবর্তন করা যাতে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হয় এবং দেশে-বিদেশে উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তৃতীয় কৌশলটি হলো-হতদরিদ্র, কর্মহীন হয়ে পড়া নি¤œ আয়ের জনগোষ্ঠী এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মকা-ে নিয়োজিত জনগণকে সুরক্ষা দেয়া এবং চতুর্থ কৌশলটি হলো- বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানো। তবে এ কৌশলটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করা হচ্ছে, যাতে মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রসঙ্গত, গত ১১ জুন জাতীয় সংসদে দেশের ৫০তম বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের এই বাজটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে গত ৪৯ বছরের ব্যবধানে দেশের বাজেটের আকার বাড়ছে ৭২২ গুণ। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের এটি দ্বাদশ বাজেট। ২০০৯ সালের ১১ জুন দেশের ৩৯তম বাজেট সংসদে উত্থাপন করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সেটি ছিল এক লাখ কোটি টাকা ছাড়ানো দেশের প্রথম বাজেট। এবারের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৬ শতাংশ। বাজেটে মোট জিডিপির আকার ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে এনবিআর থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে প্রবৃদ্ধি নিয়ে দেশবাসীকে আবারও স্বপ্ন দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি করোনা পরিস্থিতির মাঝেও নতুন ২০২০-২১ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ হচ্ছে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এদিকে, এবারের বাজেট বাস্তবায়ন ও এর আকার নিয়ে অর্থনীতিবিদরা ইতিাবচক নেতিবাচক দুই ধরনের মন্তব্য করেছেন। কেউ বলছেন, করোনা মোকাবেলায় অর্থমন্ত্রী যুগোপযোগী বাজেট দিয়েছেন। আবার অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সরকারকে এত বড় বাজেট দেয়া ঠিক হয়নি। বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট ঘোষণা করা উচিত ছিল। করোনাকালে রাজস্ব প্রাপ্তি একটি বড় বিষয়। সে বিষয়ে সরকারকে আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, এবারের বাজেট সময়োপযোগী হয়েছে। এ মুহূর্তে করোনা মহাসঙ্কটের নাম হচ্ছে করোনা সঙ্কট। করোনা মোকাবেলায় বাজেটে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জীবন বাঁচানোর বাজেট হয়েছে কিন্তু মূল কাজটি করতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। এই মন্ত্রণালয়ের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। জীবন বাঁচলে অর্থনীতি বাঁচবে। এবারের বাজেটে সেই বিষয়টির প্রতিফলন ঘটছে। তবে এই বাজেট বাস্তবায়নে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব কি না, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে গত বছরের চেয়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। তা সত্ত্বেও এ বাজেট আমাদের জিডিপির ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ। যদি বাজেট জিডিপির ২০ শতাংশ না হয়, তাহলে ওই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বা বড় বাজেট বলা যাবে না। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, সরকারের নীতি-কৌশল এমন হওয়া দরকার, ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক খাতের শৃঙ্খলা এমন হওয়া দরকার যে-যাদের হাতে টাকা আছে, তারা দেশেই বিনিয়োগ করবেন। দেশের বাইরে বছরে অর্থ পাচারের মাধ্যমে ৬০০-৭০০ কোটি টাকা চলে যায়, এটাকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী এডিপিতে সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া ১০টি খাত হচ্ছে-পরিবহন, অবকাঠামো, পানি ও গণপূর্ত, বিদ্যুত, শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ, কৃষি, পানিসম্পদ, জনপ্রশাসন। এই ১০ খাতে বরাদ্দ মোট এডিপির ৯৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। এছাড়া নতুন বাজেটে সরকারের চলমান সাত মেগা প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা, মেট্রোরেল প্রকল্পে বরাদ্দ ৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। মহেশখালী মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুত প্রকল্পে বরাদ্দ ৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে বরাদ্দ ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এদিকে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক সর্বোচ্চ ১০ মন্ত্রণালয় হচ্ছে- স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিদ্যুত বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ১ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছর এ খাতে সরকারের বরাদ্দ রয়েছে ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৭৬ হাজার কোটি টাকা। স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত নিয়ে নতুন পরিকল্পনা ॥ এবারের বাজেটে কৃষি ও স্বাস্থ্য খাত নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করছেন অর্থমন্ত্রী। শুধু করোনা মোকাবেলায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য ২৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কৃষি খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কৃষির কারণে সভ্যতা এগিয়েছে। ৫ হাজার বছর আগে থেকে আমাদের সভ্যতা, এগিয়ে যাওয়া, যার মাধ্যমে এগিয়েছি, সেটা হলো কৃষি। কৃষির হাত ধরেই টাইগ্রিস নদীর এপার-ওপার ধরে, নীল নদের এপার-ওপার ধরে আমরা এগিয়ে গিয়েছি। সভ্যতা এগিয়েছে। কারণ হলো কৃষি। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবার পরই গুরুত্ব পাবে কৃষি। আমরাও কৃষি সভ্যতার ওপর নির্ভর করে এগিয়ে যেতে চাই। এ কারণে করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবার পরই গুরুত্ব পাবে কৃষি। সেটি আমাদের শেকড়। কৃষিই দেশের অর্থনীতিকে আলোকিত করবে। এছাড়া এবারের বাজেট মানুষকে রক্ষা করার জন্য। মানুষকে খাবার দিতে হবে। গ্রামীণ অবকাঠামো ঠিক করতে হবে। অর্থ যা-ই লাগবে, ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথমে খরচ করব, তারপর আয় করব। আয় অবশ্যই করব। আয়ের জন্য অপেক্ষা না করেই খরচ করেছি। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এই ভাইরাসকে মোকাবেলা করতে পারলে, আমরা আলোর পথের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। সবাইকে মনে রাখতে হবে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য টাকার অভাব হবে না। কিন্তু চিকিৎসার মান বাড়াতে হবে। সেবা বাড়ানো মানে নামে সেবা বাড়ানো নয়। কার্যকরভাবে দ্রুত মান বাড়াতে হবে। বাস্তবায়নে জোর অর্থ বিশেষজ্ঞদের ॥ করোনাকালের এ বাজেট বাস্তবায়নের ওপর সর্বোচ্চ জোর দিয়েছেন অর্থ বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, এ বছরের বাজেট হওয়া উচিত টিকে থাকার বাজেট। করোনা পরিস্থতি যেন খারাপের দিকে না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে এই বাজেটে। এই বাজেট হবে আমাদের বাঁচা-মরার বাজেট। আমাদের অর্থনীতিকে ধরে রাখতে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই থাকা উচিত এই বাজেটে। তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাত আগে থেকেই দুর্বল। করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতের ওপর বেশ চাপ পড়েছে। আর কেবল করোনা নয়, করোনার বাইরেও যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, সেগুলো মোকাবেলা করতে এই খাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দ দিতে হবে। শুধু বরাদ্দ দিলেই হবে না, সেই বরাদ্দ যেন ঠিকমতো খরচ হয়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন, করোনার কারণে আমাদের অনেক মানুষের আয় হঠাৎ করে কমে গেছে। যেসব মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে ছিল, তাদের অনেকেই নিচে নেমে গেছে। অনেকের চাকরি চলে যাচ্ছে, কাজ-কর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা, বিশেষত নগদ সহায়তা বাড়াতে হবে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারে ভেঙ্গে গেছে। সেটাকে জাতীয়ভাবে পুনর্গঠন করতে হবে। সরকারী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে সেবার মান নই বললেই চলে। এসব ক্ষেত্রে কেবল অর্থ দিলেই হবে না, অর্থের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে রেখে হাসপাতালগুলোতে দক্ষ লোক নিয়োগ দিতে হবে।
×