ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে এনজিওর কিস্তি আদায়ের চাপে বিপাকে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতারা

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ২ জুলাই ২০২০

বাউফলে এনজিওর কিস্তি আদায়ের চাপে বিপাকে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১ জুলাই ॥ বাউফলে বিভিন্ন এনজিওর কিস্তি আদায়ের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ক্ষুদ্রঋণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) করোনা পরিস্থিতির কারণে সারাদেশে এনজিও ঋণের কিস্তি ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও বাউফলে তা মানা হচ্ছে না। এ উপজেলা গ্রামীণ ব্যাংক গ্রমীণ জন উন্নয়ন সংস্থা, ব্র্যাক, আশা, ব্যুরো বাংলাদেশ, উদ্দীপন, পদক্ষেপ, কোডেক, কোস্ট, টিএমএসএস, ভিডিপি সংস্থাগুলো তাদের ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায়ের চাপ শুরু করে দিয়েছে। এনজিওগুলো তাদের সাপ্তাহিক ও মাসিক ঋণ (কিস্তি) আদায় চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। করোনার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের যেখানে তিন বেলা খাবার জোটে না সেখানে সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে এনজিওগুলোর কিস্তি আদায়ের চাপে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অথচ এসব এনজিও এমআরএ নির্দেশনা দেয়া আছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে জরুরী খাদ্য বিতরণ করার। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বাউফলে এ সব এনজিও’র কাউকেই জরুরী খাদ্য সহায়তা দিতে দেখা যায়নি। সরেজমিনে নাজিরপুর ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামে গ্রমীণ জন উন্নয়ন সংস্থা এনজিওর পদ্মা-৭৯ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে ওই এনজিও’র মাঠকর্মী রিপা বেগম সদস্যদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় করছেন। এ সময়ে সদস্য রুমানা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘অসুস্থ থাকার কারণে আমি রবিবার সাপ্তাহিক কিস্তি দিতে পারি নাই। কিন্ত মাঠকর্মী রিপা বেগম সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আমার ঘরে বসে ছিলেন। এ সময়ে ওই মাঠকর্মী আমাকে নানান কটু কথা বলে মানসিকভাবে হয়রানি করে এবং কিস্তি দেয়ার জন্য চাপ দিলে আমি বাধ্য হয়ে পাশের বাড়ির একজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে কিস্তি পরিশোধ করি। একই অভিযোগ করেন ওই কেন্দ্রের মমতাজ, শিল্পী, আলমতাজ ও রাহিমা বেগম। এর আগে একই অভিযোগ করেন গ্রামীণ এনজিওর নাজিরপুর গ্রামের লালমিয়া বাড়ি কেন্দ্রের সদস্য পারভীন বেগম ও নাজিরপুর ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামের আশা এনজিওর প্রশান্ত কেন্দ্রের সদস্য কুলসুম বেগম। অভিযোগ অস্বীকার করে মাঠকর্মী রিপা বেগম বলেন, আমি অফিসের নির্দেশ পালন করছি। কোন সদস্যের কাছ থেকে জোড় করে কিস্তি আদায় করছি না। বাউফলে অবস্থিত গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার কালাইয়া শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মঞ্জুর আলম বলেন, ‘কাউকে কিস্তি আদায়ে চাপ দেয়া হচ্ছে না। তবে যারা স্বেচ্ছায় কিস্তি দিচ্ছেন তা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়াও আমরা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কৃষকদের কৃষি লোন দিচ্ছি। কিস্তি আদায় না করলে আমরা লোন দেব কিভাবে?আশা এনজিও’র বাউফল ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, আমরা জোর করে কারো কাছ থেকে কিস্তি আদায় করছি না। শুধু সৌজন্যমূলকভাবে তাদের সঙ্গে মাঠ কর্মীরা সাক্ষাত করছেন।
×