ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানবদেহে প্রয়োগের জন্য ভ্যাকসিনের অনুমতি দিল ভারত

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ১ জুলাই ২০২০

মানবদেহে প্রয়োগের জন্য ভ্যাকসিনের অনুমতি দিল ভারত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিদিনই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তারপরও থেমে নেই জীবন। এরই মধ্যে আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে উঠার খবর দিচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই সম্মুখযোদ্ধাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ওপর ভর করেই নতুন করে ঘুড়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে বিশ্ব। এদিকে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য কোভ্যাকসিন নামে একটি ওষুধের অনুমতি দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এছাড়া বিশ্বব্যাপী সর্বশেষ করোনায় মারা গেছেন ৫ লাখ ১০ হাজার ৭৫৫ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৫ লাখ ১ হাজার ১৯৩ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৫৭ লাখ ২৭ হাজার ৩৭৩ জন। খবর সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স, গার্ডিয়ান, আলজাজিরা, সিনহুয়া, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ফক্স নিউজের। একদিনে সবচেয়ে কম আক্রান্ত রাশিয়ায় ॥ সোমবার নতুন করে আরও ৬ হাজার ৭১৯ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছে রাশিয়া। সরকারী হিসাবে দেশে মোট আক্রান্ত ৬ লাখ ৪১ হাজার ১৫৬ জন। দেশটিতে এপ্রিলের পর একদিনে এটাই সবচেয়ে কম আক্রান্তের রেকর্ড। দুই মাসে সর্বনিম্ন করোনা পজিটিভ হওয়ার দিনে রাশিয়ায় মারা গেছেন ৯৩ জন। মোট মৃত্যু ৯ হাজার ১৬৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৩৪৩ জন সুস্থ হয়েছেন। মোট সুস্থ ৪ লাখ ৩ হাজার ৪৩০ জন। গত ৮ জুন থেকে মস্কোয় লকডাউন প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে পুরো রাশিয়ায় কড়াকড়ি শিথিল করা হয়। আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পরে রাশিয়ার অবস্থান। করোনা বিদায় নেয়ার লক্ষণ নেই- ডব্লিউএইচও ॥ গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে বিশ্বের ২১৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। আক্রান্ত করেছে ১ কোটি ৪ লাখ ১ হাজার ৬৯ জনকে। প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ৫ লাখের বেশি মানুষের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরও কোন স্বস্তির খবর নেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কাছে। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থা জানিয়েছে করোনাভাইরাস বিদায় নেয়ার কোন লক্ষণ নেই। পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি পেল ভারতের ভ্যাকসিন ॥ মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি পেল ভারতের প্রথম ভ্যাকসিন। কোভ্যাকসিন নামে করোনার এই ভ্যাকসিনটি মানবদেহে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনেরাল অব ইন্ডিয়া। জুলাই থেকে সারাদেশে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারী উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে এই ভ্যাকসিন। হায়দরাবাদভিত্তিক ভারত বায়োটেক এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) যৌথ উদ্যোগে করোনার এই প্রতিষেধকটি তৈরি করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের বিষয়ে ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. কৃষ্ণ এল্লা বলেন, আমরা কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে দেশের প্রথম টিকা আবিষ্কার করতে পেরে গর্বিত। কোভ্যাকসিন নামের এই টিকা তৈরির কাজে আইসিএমআর এবং এনআইভি আমাদের সহযোগিতা করেছে। এর আগে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত এই ভ্যাকসিনের প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত ট্রায়ালের ফল সরকারকে জমা দেয় বায়োটেক। এরপরই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (ডিসিজিআই) মানবদেহে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দিয়েছে। এদিকে দেশটিতে টানা দুদিন করোনায় আক্রান্তের দৈনিক রেকর্ড হওয়ার পর কিছুটা কমেছে শনাক্তের সংখ্যা। চীনে নতুন ভাইরাসের সন্ধান ॥ গোটা বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তখনই আরও এক ভাইরাসের খোঁজ মিলল চীনে। নতুন এই ভাইরাস অতিমারির আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির গবেষকরা। জি৪ নামের এই ভাইরাসটি সোয়াইন ফ্লু গোত্রের। মার্কিন সায়েন্স জার্নাল পিএনএসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাসটি মারাত্মক সংক্রামক। এটি এইচ১এন১ ভাইরাসেরই একটি গোত্র। চীনা গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০১১-১৮ সালের মধ্যে ৩০ হাজার শুকরের লালারস সংগ্রহ করে সেগুলো পরীক্ষার পর ১৭৯ ধরনের সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস চিহ্নিত করা হয়। এই ভাইরাসগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই নতুন ধরনের। ভাইরাসগুলো পরীক্ষার পর দেখা গেছে, মৌসুমি জ্বরে মানবদেহে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে, সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা জি৪ ভাইরাসকে ঠেকানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। বিজ্ঞানীদের দাবি, পশু থেকে মানবদেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণের প্রমাণ মিললেও মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণের প্রমাণ এখনও মেলেনি।
×