ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আক্রান্ত ৩৬৮২

একদিনে করোনায় সর্বাধিক ৬৪ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২২:৩২, ১ জুলাই ২০২০

একদিনে করোনায় সর্বাধিক ৬৪ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একদিনে এ পর্যন্ত সর্বাধিক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৪ জনের মৃত্যু এবং ৩৬৮২ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ১৮৪৭ জনে এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১৮৪৪ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৫৯ হাজার ৬২৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৪২৬টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪০৭। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। মঙ্গলবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৬৪ জনের মধ্যে ৫২ পুরুষ এবং ১২ নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ৩, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১১, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৬, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২১, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৭ জন রয়েছেন। তাদের ৩১ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৭ জন রাজশাহী বিভাগের, ৭ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের, ৩ জন বরিশাল বিভাগের এবং ২ জন ময়মনসিংহ বিভাগের। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ৫১ জন এবং বাসায় ১৩ জন মারা গেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৪৪৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ১৪৫ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৫৪৪ জন এবং এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৪৪০ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৭ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ২ হাজার ৫৪২ জনকে। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৮৬৬ জনকে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৩৪ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৯ জন ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৪ হাজার ৬৬৭ জন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা আরও জানান, দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০ এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯ এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২। আর দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯ প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ১ থেকে ১০ বছর বয়সীদের মৃতের হার দশমিক ৮২ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বয়সীদের ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ৬১ বছরের বেশি বয়সীদের মৃত্যুর হার ৩৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল রয়েছে ১৬টি এবং মহানগরীর বাইরে ঢাকা জেলায় একটি। ঢাকা মহানগরে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা ছয় হাজার ৭৭৩ এবং আইসিইউ বেড রয়েছে ১৮০। রোগী ভর্তি রয়েছেন দুই হাজার ৩৭৫ জন এবং আইসিইউতে রোগী রয়েছেন ৯৭ জন। সব বিভাগ মিলিয়ে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৬১০টি এবং আইসিইউ রয়েছে ৩৭৯টি। সব বিভাগে রোগী ভর্তি হয়েছেন চার হাজার ৬৯১ জন, আর আইসিইউতে রয়েছেন ১৮৩ জন। সব হাসপাতালেই রোগী ভর্তি হতে পারবেন কারণ অনেক শয্যা খালি রয়েছে। সব হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে মোট ১০ হাজার ২৪০, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা ৮০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৫৫টি। ঢাকা সিটিতে করোনা রোগী ॥ আইইডিসিআর জানায়, মিরপুরে ১৪২৭, উত্তরায় ৭০৭, মোহাম্মদপুরে ৬৩০, মহাখালীতে ৫৭২, যাত্রাবাড়ীতে ৫৪১, মুগদায় ৫২১, ধানমন্ডিতে ৪৯৫, মগবাজারে ৩৬৮, খিলগাঁওয়ে ৩৪৩, তেজগাঁওয়ে ৩৪০, রামপুরায় ৩২১, বাড্ডায় ৩২০, কাকরাইলে ৩১১, লালবাগে ২৯৪, গুলশানে ২৭৫, বাসাবো ২৫০, রাজারবাগে ২৩৮, মালিবাগে ২১৯, গেন্ডারিয়ায় ১৮৬, ওয়ারীতে ১৬৩, বাবুবাজারে ১৬২, বসুন্ধরায় ১৬২, বংশালে ১৫৬, আদাবরে ১৫৩, আগারগাঁওয়ে ১৪৩, ডেমরায় ১৪১, শ্যামলীতে ১৪১ জন, আজিমপুরে ১৩৮, শাহবাগে ১৩৬, হাজারীবাগে ১৩৫, বনশ্রীতে ১৩০, বনানীতে ১২৯, শান্তিনগরে ১১৭, রমনায় ১১৫, পল্টনে ১১২, কল্যাণপুরে ১০৯, চকবাজারে ১০৭, শেরে বাংলা নগরে ১০৩ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা সিটির অন্যান্য এলাকায় শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ১০০ এর নিচে।
×