ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ২৪ শতাংশ

প্রকাশিত: ২১:১৩, ১ জুলাই ২০২০

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ২৪ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত এপ্রিল মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৬৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা আগের মাস মার্চের তুলনায় ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম। মার্চে দৈনিক লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২৮৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, করোনা মহামারীর কারণে লেনদেন কমলেও এ সময় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক বেড়েছে। বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক ‘মোবাইল ব্যাংকিং’ করছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষে তাদের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট কোটি ৫১ লাখ ২৯ হাজার, যা মার্চ মাসে ছিল আট কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। এমএফএস নীতিমালা অনুযায়ী, এপ্রিলের শেষে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এমএফএস এ গত এপ্রিলে প্রতিদিন গড়ে ৭২ লাখ ৫২ হাজার ১৬৫টি লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ৯৬৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আদান-প্রদান হয়েছে, যা আগের মাস মার্চের তুলনায় ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম। মার্চে দৈনিক লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২৮৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এপ্রিল মাসজুড়ে লেনদেন হয়েছে ২৯ হাজার ২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা। মার্চে যার পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৭৮৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা। মার্চের তুলনায় এপ্রিলে টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে ২৭ শতাংশ। এই সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ২৬৫ জন। বর্তমানে বিদ্যুত, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো, অর্থাৎ রেমিটেন্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে জমা পড়েছে আট হাজার ৭০৯ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ কম। আর উত্তোলন করেছে আট হাজার ২২৭ কোটি টাকা, যা মার্চের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ কম। এদিকে সাধারণ ছুটির কারণে এপ্রিলে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এপ্রিলে এমএফএসে রেমিটেন্স এসেছে ১১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, যা মার্চের চেয়ে ২৫৫ শতাংশ বেশি। মার্চে এমএফএসে রেমিটেন্স এসেছিল মাত্র ৩১ কোটি ৬৩ লাখ। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার বিস্তার রোধে চলতি বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এতে ব্যবসায়িক ও স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হওয়ায় আর্থিক লেনদেনও কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। এছাড়া অনেকে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়ায় স্বাভাবিক লেনদেনও কম হয়। পাশাপাশি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অধিকাংশের পড়ালেখার খরচ বাড়ি থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মাধ্যমে আসত। মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় সেটাও হয়নি। সব মিলিয়ে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমএফএসের হালনাগাদ পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ে জড়িত। চলতি বছরের এপ্রিল শেষে তাদের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট কোটি ৫১ লাখ ২৯ হাজার। যা আগের মাস মার্চে ছিল আট কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারী খাতের ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সশিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়।
×