ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বাড়ানোয় সংসদে বিল উত্থাপনের প্রতিবাদ সিপিবির

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ৩০ জুন ২০২০

বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বাড়ানোয় সংসদে বিল উত্থাপনের প্রতিবাদ সিপিবির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে সংসদে বিল উত্থাপনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নেতৃতৃন্দ অবিলম্বে অবিরাম দাম বৃদ্ধির এই বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা-মহামারিতে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের মানুষও যখন আতঙ্কিত ও বিপর্যস্ত তখন বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২০’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। উত্থাপিত সংশোধনীতে কোনও অর্থবছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য পরিবর্তনের (মূলত বৃদ্ধির) বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে বছরে একাধিকবার দাম পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হয়েছে। নতুন এই আইন পাস করে কার্যকর করতে পারলে বিইআরসি বছরে যতবার খুশি ততবার বিদ্যুৎ-গ্যাস, ডিজেল, পেট্রোলসহ জ্বালানির দাম বাড়াতে পারবে। এই বিল জাতীয় দুর্যোগের মধ্যে আরেক দুর্যোগ হয়ে সাধারণ জনগণের কাঁধে আসছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলে দরদাম সহ দেশের স্বার্থ, পরিবেশ এসব যাচাই-বাছাই ছাড়াই বহুল আলোচিত রেন্টাল-কুইক রেন্টাল ও পরিবেশ ধ্বংসকারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। চাহিদা না থাকলেও এই ধারায় এখনো বাড়তি খরচে নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার চুক্তি করে চলেছে সরকার। রাষ্ট্রীয় খাতকে পঙ্গু করে বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দেয়ায় এই খাত আজ গুটিকয়েক ব্যবসায়ীদের দখলে। এদের কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনা হয়। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ না কিনলেও প্রতি মাসে মাসে টাকা দিতে হয়। এই বাড়তি উৎপাদন খরচ জনগণের কাছ থেকে নেয়ার জন্য অযৌক্তিকভাবে সময় সময় দাম বাড়ানো হচ্ছে। সরকার নির্বিকারভাবে এই কাজটি করে চলেছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, একথা আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই যে সরকারের ভুলনীতি আর দুর্নীতির ফলে আজ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত আমাদের গলায় কাঁটার মতো বিঁধে আছে। এর দায় সরকারের। জনগণের নয়। তাই উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলে মূল্যবৃদ্ধির যে কোনো পদক্ষেপ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। বিইআরসি’র গণশুনানিতে দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞ ও আমরা প্রমাণ করেছি- বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নয়, কমানো সম্ভব। তবুও অনিশ্চিত জাতীয় দুর্যোগকালীন সময়েও সাধারণ মানুষের স্বার্থে ‘দাম কমানোর’ এই পথে না হেঁটে, এই প্রতিষ্ঠান দিয়ে যতবার খুশি ততবার দাম বাড়ানোর জন্য এই সংশোধনী বিল আনা হলো। এই আইন সংশোধনের বিল উত্থাপনের মধ্য দিয়ে সরকার তার গণবিরোধী চেহারা আরেকবার তুলে ধরলো। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অবিলম্বে বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎসহ জ্বালানির দাম বাড়াতে আনা বিল প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের জ্বালানি খাতের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ জ্বালানির দাম কমাতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে সরকারের এই গণবিরোধী তৎপরতা আমাদেরও রুখে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই।
×