ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ও বন্যার মধ্যেই আমন আবাদের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ৩০ জুন ২০২০

করোনা ও বন্যার মধ্যেই আমন আবাদের প্রস্তুতি

সমুদ্র হক, বগুড়া অফিস ॥ করোনার থাবায় মানুষ কার্যত ঘরবন্দী। এর মধ্যেই জীবন জীবিকা। করোনা মোকাবেলা। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো টানা বৃষ্টি ও নদ নদীর পানি বেড়ে বন্যা থাবা দিয়েছে। তারপরও কৃষক বসে নেই। আমন আবাদের প্রস্তুতিতে মাঠ ঠিকঠাক করছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, উজানি ঢল অব্যাহত আছে, বৃষ্টিও হচ্ছে। আষাঢ়ের মধ্যভাগে (জুলাইয়ের প্রথমে) বন্যা বেড়ে যেতে পারে। গ্রামের মানুষ বিশেষ করে নদী তীরবর্তী ও চর গ্রামের মানুষের বাড়তি বিপদ এই বন্যা। এর মধ্যেই আমন মৌসুম শুরু হয়েছে। কৃষক বলছে, এই সময়ে জমি ঠিকঠাক না করলে পরে সময় পাওয়া যাবে না। যে এলাকায় বন্যার সম্ভাবনা কম (উঁচু এলাকা) সেখানে কৃষক পাওয়ার টিলার চালিয়ে জমি ঠিকঠাক করে নিচ্ছে। পাশপাশি চারার জন্য বীজতলা তৈরির কাজে বীজ বপন করা হচ্ছে নারীরা। বগুড়ার অনেক এলাকায় এখনও বোরোর মাড়াইকাটাই শেষ হয়নি। দ্রুত মাড়াই কাটাইয়ের সঙ্গে টিলার চাষ হচ্ছে। আমনের আগে যারা প্রণোদনা পেয়েছেন তারা আউশের আবাদ শুরু করেছে। করোনার এই সময়ে শহরে ও উপজেলা পর্যায়ে সকল শ্রেণীর মানুষ মাস্ক পরেই চলাচল করছে। গ্রামের মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের হার খুব কম। যারা মাঠে জমি ঠিকঠাক করছে তাদের কারও মুখে মাস্ক নেই। কৃষক মজনু বললেন কাদা জমিতে মাস্ক পরে টিলার চালালে কাদা পানি ছিটকে আসে মুখে। যে নারী চারার জন্য বীজ বপন করছে তারাও মাস্ক পরে বপন করতে পারেন না। বললেন অসুবিধা হয়। জমিতে মাস্ক পরে কাজ করা যায় না। কাজ শেষে বাড়িতে গিয়ে গোসল ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। বাইরে চলাচলে মাস্ক পরেন। তবে তারা জানেন মাঠে কাজ করলেও সতর্ক থাকতে হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে আবাদ উদ্বৃত্ত বগুড়া অঞ্চলে গত বারের টার্গেটে এবারের আমন আবাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে লড়াকু কৃষক ঘরে বসে না থেকে আমান আবাদে ঝাপিয়ে পড়বে। গত বছর আমন আবাদের টার্গেট ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার হেক্টর জমি। ধান আকারে উৎপাদন টার্গেট ছিল ১১ দশমিক ৬২ লাখ মে.টন এবং চাল আকারে ৭ লাখ মে.টন। গত বছর কৃষক টার্গেটের চেয়ে বেশি জমিতে আমন আবাদ করে। উৎপাদন বেড়ে যায়। বগুড়া অঞ্চলে সরু চাল কাটারি জিরাশাইল আবাদ বেড়েছে। চলতি বছর করোনার কারণে আমন আবাদে কতটা প্রভাব পড়তে যাচ্ছে তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়, এমনটি জানিয়েছেন বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উর্ধতন কর্মকর্তা। তবে মাঠ পর্যায়ের চিত্র বলে দেয় করোনার কালেও কৃষক বসে নেই। তারা জমি ঠিকঠাক করছে। সারিয়াকান্দির গৃহস্থ রফিকুল ইসলাম জানালেন যমুনার পানি বেড়ে গেলে হার্ড পয়েন্টর ওপারে ভেতরে পূর্ব প্রান্তের চর গ্রামে বন্যা আঘাত করে বেশি। এবারও সেই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
×