ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

প্রকাশিত: ১৬:১৬, ২৯ জুন ২০২০

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ ॥ সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আজ সোমবার সকাল ৯ টায় সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩৩ উপরে এবং যাদুকাটার পানি ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত। নদীর পানি কমতে শুরু করলেও হাওড় ও জনপদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ফলে বন্যা কবলিত এলাকা বাড়ছেই। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা, ৬১ ইউনিযনের ৬৬ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত। অনেক উঁচু এলাকায়ও হাটু সমান পানি। নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে কোমর থেকে গলা সমান পানি। উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবল তোড়ে সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কের ঘাঘটিয়া এলাকায় এবং সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের কাটাখালি এলাকায় রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এসব উপজেলার। পানিতে তলিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জগন্নথপুর, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার। ভেসে গেছে ৪ হাজরেরও বেশী মৎস ও পল্ট্রি খামার। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬৭ মিলিমিটার। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন সীমান্ত উপজেলা দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, সদর, ছাতক, এবং হাওড়বেষ্টিত জগন্নথপুর, জামালগঞ্জবাসী। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার ৮৭ ইউনিয়নের মধ্যে ৬১ টি ইউনিয়নের বাসিন্দা। জেলা প্রশাসন থেকে ৪৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন জানানো হলেও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা অনেক বেশি। দুর্ভোগে পড়া মানুষজন. খাবার পানি, জ্বালানী ও খাদ্য সংকটে পড়েছেন। খুলা হয়েছে ১৯৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বন্যাদুর্গতদের সরকারী নানা সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে বলেন, পানিবন্দি মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলার ১১ উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনসহ দ্বিতলা স্কুল ভবন গুলোতে এসব আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ৪১০ মেট্রিকটন চাল এবং নগদ ২৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৪ হাজার ৭৫২ টি পরিবারের জন্য শিশু খাদ্য দেওয়া হয়েছে উপজেলায় উপজেলায়। এলাকায় এলাকায় মাইকিং করে বন্যা আক্রান্তদের আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলা হচ্ছে। এদিকে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ভারতের মেঘাল রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে এই মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যার ফলে এতো দ্রুত প্রভাব ফেলেছে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে। পাহাড়ী ঢলে ক্ষয়-ক্ষতিও হয়েছে বেশী। সুরমার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য সবগুলো সীমান্ত নদীর বিপদসীমার নিচে রয়েছে । তবে হাওড়ের দিকে পানি বাড়বে আরো দু-তিন দিন।
×