ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভুল বিল ৭ দিনের মধ্যে ঠিক করে দেবে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ২৯ জুন ২০২০

ভুল বিল ৭ দিনের মধ্যে ঠিক করে দেবে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি

রশিদ মামুন ॥ অভিযোগ রয়েছে এমন বিল সাত দিনের মধ্যে ঠিক করে দিতে বিতরণ কোম্পানিকে নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। এপ্রিল এবং মে মাসে গ্রাহকের ব্যবহারের অতিরিক্ত বিদ্যুত বিল করেছে বিতরণ কোম্পানি। কোন কোন গ্রাহকের বিল স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০০ গুণ বেশি এসেছে। সারাদেশে বিদ্যুত বিলের সমস্যা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে নতুন এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা অতিরিক্ত সচিব এ কে এম হুমায়ূন কবির এ বিষয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে যেসব বিলে সমস্যা রয়েছে সেগুলো ঠিক করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে কোন কোন গ্রাহকের অতিরিক্ত বিল করা হয়েছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। এরপর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলতে হবে আপনার বিলে ভুল রয়েছে। আমরা বিলটি ঠিক করে দিচ্ছি। গ্রাহক নিজে বিতরণ কোম্পানির কাছে যেতে পারেন অথবা গ্রাহক না যেতে চাইলে আমাদের প্রতিনিধি তাদের কাছে যাবে। যারা ইতোমধ্যে বিল দিয়ে দিয়েছেন তাদের কি হবে জানতে চাইলে বলেন, তাদের বিল পরবর্তী মাসের সঙ্গে সমন্বয় হবে। এক্ষেত্রে কেউ সমন্বয় করে কারও শূন্য ইউনিট হলে তাই বিল আসবে। তিনি বলেন, আমরা যে কোন পরিস্থিতিতে গ্রাহকবান্ধব হওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। বিতরণ কোম্পানির প্রতিনিধিরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। তিনি বলেন, এর মধ্যে কয়েকজন বিদ্যুত কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকে অতিরিক্ত বিদ্যুত বিল করার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। এক্ষেত্রে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিব রয়েছেন টাস্কফোর্স প্রধানের দায়িত্বে। সরকারের কঠোর অবস্থানের পর বিতরণ কোম্পানিগুলোর টনক নড়েছে। করোনার কারণে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বিদ্যুত বিলের ওপর বিলম্ব মাশুল মওকুফ করা হয়। অর্থাৎ গ্রাহকের ক্ষেত্রে একবারে জুনে গিয়ে বিল পরিশোধের সুযোগ রাখা হয়। করোনার প্রকোপ বড়তে থাকায় মাঠে মিটার রিডার পাঠানো কঠিন ছিল বিতরণ কোম্পানির । ফলে মিটার না দেখেই মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসের বিল করেছে বিতরণ কোম্পানি। পূর্ববর্তী মাসের বিলের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের বিল করার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু বিল হাতে পেয়ে গ্রাহক বিড়ম্বনায় পড়ে। এতে করে সারাদেশে সমালোচনা শুরু হয়। এপ্রিলের পর বিষয়টি আরও আলোচনায় আসার পরও মে মাসে একই কাজ করে বিতরণ কোম্পানি। এতে গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়ে যায় পরপর দুই মাসে একই কাজ করায় গ্রাহক বিল ঠিক করতে বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে। সারাদেশে বিল নিয়ে নানামুখী আলোচনার মধ্যে বিদ্যুত বিভাগ বিল ঠিক করার জন্য বিতরণ কোম্পানিকে নির্দেশনা দিলেও তাতে তেমন কোন কাজ হচ্ছিল না। কেবলমাত্র বিতরণ কোম্পানির শীর্ষ পর্যায়ে যারা যোগাযোগ করছিল তাদেরই বিল ঠিক করে দেয়া হচ্ছিল বাকিদের ক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছিল না। উল্টো বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করলে নানামুখী হয়রানি করা হচ্ছিল। দেখা যায় প্রতিবছর গ্রীষ্মের শুরুতে বিদ্যুত বিল বাড়তে শুরু করে। বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একই রকম বিল আসে। অক্টোবর থেকে আবার কমতে শুরু করে এই ধারা অব্যাহত থাকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এক্ষেত্রে বিতরণ কোম্পানি যদি একজন গ্রাহক কোন মাসে কেমন বিদ্যুত ব্যবহার করে এটি দেখে বিল করত তাহলে বিল বেশি আসত না। কিন্তু সেটি না দেখে করোনার কারণে গ্রাহক ঘরে থাকছে ফলে বিদ্যুত বেশি ব্যবহার হচ্ছে এই বিবেচনাতে বিল করতে গিয়ে বিল বেশি এসেছে। জানতে চাইলে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমাদের বিলের বিষয়গুলো বিদ্যুত বিভাগ দেখেছেন। এ বিষয়ে একটি পর্যালোচনা দিয়েছেন তারা। করোনাকালীন সময়ে ব্যাংকে গিয়ে বিল দেয়ার ক্ষেত্রেও গ্রাহক বিড়ম্বনায় পড়েছেন। অনেক ব্যাংকই বিল নিতে চায় না। আবার বিল নিলেও গ্রাহককে ব্যাংকের বাইরে লাইন দিতে হয়। প্রতিবার পাঁচজন করে প্রবেশ করে। এরপর তারা বের হলে আবার পাঁচজন প্রবেশ করে। গ্রাহকের সুবিধায় আরইবি গ্রামে গ্রামে গিয়ে বুথ করে বিল আদায় করছে। ঢাকায় এটি করা যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।
×