ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে কিট সঙ্কটে নমুনা পরীক্ষা নেমে এসেছে অর্ধেকে

প্রকাশিত: ২১:২৬, ২৯ জুন ২০২০

চট্টগ্রামে কিট সঙ্কটে নমুনা পরীক্ষা নেমে এসেছে অর্ধেকে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে কিট সঙ্কটের কারণে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা অর্ধেকে নেমে এসেছে। পরীক্ষা কম, করোনা পজিটিভও কম। তবে সুখবর এই যে, পরীক্ষার সংখ্যা যা-ই হোক কমেছে আক্রান্তের হার। সর্বশেষ চব্বিশ ঘণ্টায় যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাতে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১০ শতাংশের কিছু বেশি। এদিন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৬৪ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে সংক্রমিতের সংখ্যা ৭ হাজার ৬৮৯ জন। নতুন ৪ জনসহ মৃত্যু হয়েছে মোট ১৬৯ জনের। রবিবার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, আগেরদিন চব্বিশ ঘণ্টায় মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৯০টি। এরমধ্যে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৬৪টি। এরমধ্যে ৪৩ জন মহানগর এলাকার এবং ২১ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার মারা গেছেন ৪ জন। ফলে চট্টগ্রামে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬৯ জনে। এদিন ২৫ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৯৩৩ জন। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডাঃ সেখ ফজলে রাব্বি জানান, শনিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিআইটিআইডিতে ২৭৪টি নমুনা পরীক্ষায় ২৩, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ২০০টি নমুনা পরীক্ষায় ১৪ এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৮২ নমুনা পরীক্ষায় ২০টিতে পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এদিন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ এবং চট্টগ্রামের দুই বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ইম্পেরিয়াল হসপিটাল ও শেভরন ক্লিনিকের কোন প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। শহরের বাইরে ২১টি নমুনার মধ্যে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৫টি, রাউজান উপজেলায় ৪টি, বোয়ালখালী ও সীতাকুন্ড উপজেলায় ৩টি করে, হাটহাজারী উপজেলায় ২টি এবং লোহাগাড়া, বাঁশখালী, পটিয়া ও মীরসরাই উপজেলায় ১টি করে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রামের সরকারী বেসরকারী ল্যাবগুলোতে প্রতিদিন গড়ে কম-বেশি ১০০০ নমুনা পরীক্ষা হয়ে আসছিল। কিন্তু শনিবার তা নেমে আসে ৫৯০টিতে। কিট সঙ্কটের কারণেই নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে বলে জানা যায়। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে কিট নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। তবে এ দিনের পরীক্ষায় স্বস্তির বিষয় হচ্ছে আক্রান্তের হার কমে যাওয়া। ৫৯০টি নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত শনাক্ত ৬৪, যা ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। অথচ এ হার দু’সপ্তাহ ধরে প্রায় ২০ শতাংশে অবস্থান করছিল। নমুনা পরীক্ষা কম হওয়া প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জনকণ্ঠকে বলেন, এদিন আমরা বেসরকারী দুটি হাসপাতাল ও কক্সবাজার মেডিক্যালের রিপোর্ট পাইনি। তবে কিট সঙ্কটও রয়েছে। নমুনা জমা থাকলেও কিট যেন একেবারে ফুরিয়ে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্য কিছু পরীক্ষা কম করা হয়েছে। রবিবার রাতের মধ্যে ঢাকা থেকে কিট আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে ২৫ মার্চ শুরু হয় করোনার নমুনা পরীক্ষা। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। বর্তমানে বিআইটিআইডি ছাড়াও ৫টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে সিভাসু, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, ইম্পেরিয়াল হসপিটাল ও শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি। এছাড়া কক্সবাজার মেডিক্যাল ল্যাবেও চট্টগ্রামের কিছু নমুনা পরীক্ষা হয়ে থাকে। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে মোট ৭ হাজার ৬৮৯ জন। এরমধ্যে ৫ হাজার ২৪১ জন মহানগরীর এবং ২ হাজার ৪৪৮ জন বিভিন্ন উপজেলার। মৃত্যুবরণকারী ১৬৯ জনের মধ্যে ১৩১ জন শহর এলাকার এবং ৩৮ জন উপজেলা পর্যায়ের।
×