ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি

প্রকাশিত: ২০:০১, ২৯ জুন ২০২০

পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি

আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অস্থায়ী ও স্থায়ী মিলিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পশুর হাট বসছে। করোনার সংক্রমণের উর্ধমুখী ধারার ভেতর পশুর হাট বসবে কি বসবে না তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। শেষ পর্যন্ত বিশেষ বিধিমালা মানা সাপেক্ষে পশুর হাট বসবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সারাদেশ থেকেই পশু ব্যবসায়ী এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে পশুর বহু মালিক ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত হাটে পশু বিক্রির সুযোগ গ্রহণ করতে চলে আসেন ঢাকায়। অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহের জন্য এই পশু বেচাকেনা আবশ্যক হয়ে ওঠে। দুস্থ গরিব মানুষেরা কোরবানির মাংস পাওয়ার আশায় অপেক্ষায় থাকে বছরভর। অন্যদিকে চামড়ার বাজারের জন্যও কোরবানির গরু-ছাগলের হাট ইতিবাচক হয়ে ওঠে। সব দিক বিবেচনায় ঢাকায় পশুর হাট বসাই সঙ্গত। কিন্তু করোনার সংক্রমণের ঝুঁকির ভেতর এ ধরনের হাট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে সে শঙ্কাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে সুরক্ষাই প্রধান বিবেচ্য। এখানে সামান্যতম গাফিলতির যেমন সুযোগ নেই, তেমনি অসতর্ক-অসচেতন হওয়ারও বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ের পদ্ধতি নির্ধারণ ও যাতায়াতকারীসহ সব শ্রেণীর নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন আঙ্গিকে বিশেষ বিধিমালা তৈরি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। ক্রেতা, বিক্রেতা, মহাজন, ইজারাদার, ভলান্টিয়ারসহ পশুর হাটে যাতায়াতকারী সব প্রকার নাগরিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সার্বিক দিক চিন্তা করে ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত করোনাকালের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেয়া নির্দেশনাবলী মেনেই এ বিশেষ বিধিমালা তৈরি করেছে ডিএসসিসি। স্বাস্থ্যবিধি মানতেই বিশেষ কঠোরতা অবলম্বন করবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। মূলত পশুর হাটের মাধ্যমে যাতে রাজধানীতে করোনার প্রকোপ বাড়তে না পারে, সে জন্যই এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পশুর হাটে জাল নোট চক্র বা প্রতারক চক্র কর্তৃক কোন প্রতারণা করা হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা ও তাৎক্ষণিকভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া রাস্তায় কোন পশু বহনকারী গাড়িতে কোন প্রকার চাঁদাবাজি হলে তা ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানালে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে। অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে সামান্যতম দায়িত্বহীনতার কোন সুযোগ নেই। পশু ব্যবসায়ীদের ঢাকায় অবস্থান করতে হবে এবং হাট শেষে নিজ এলাকায় ফিরতে হবে। এই পুরো চলাচল ও অবস্থানকালে অবশ্যই শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা সেটির তদারকিতে কর্তব্যনিষ্ঠার পরিচয় দিতে হবে। এটি শুধু ঢাকায় আগমনকারীদের জন্য নয়, ঢাকাবাসীর জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আবারও বলছি, পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়পক্ষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং নিজের সুরক্ষা বজায়ে করণীয় কড়াকড়িভাবে পালনের আবশ্যকতা রয়েছে। এখানে বিন্দুমাত্র শিথিলতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। মাস্ক পরা এবং একে অপরের থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। যদিও পশুর হাটে এটি করা দুরূহ। তবু স্বাস্থ্যবিধি যথাসম্ভব মানার আবশ্যকতা রয়েছে।
×