ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজার খাদ্য গুদামে সরিষায় ভূত!

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ২৮ জুন ২০২০

কক্সবাজার খাদ্য গুদামে সরিষায় ভূত!

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব মহামারী করোনা সঙ্কটে হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি ধরে চাল বিক্রির উদ্যোগ নেন। অন্য জেলার ন্যায় কক্সবাজারেও ডিলাররা হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে করোনার এই সুযোগকে হাতছাড়া করেননি জেলা সদরের খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন। ৩০ কেজি ওজনের বস্তা থেকে কৌশলে সাত কেজি করে চাল বের করে নিয়েছেন। খাদ্য গুদাম থেকে নেয়া ৩০ কেজি চালের বস্তায় ডিলারদের কেউ কেউ ৮ কেজি কম পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে খাদ্য গুদাম থেকে ঘোনার পাড়ার ডিলার ইউসূফ বরাদ্দকৃত ৫ হাজার কেজি চাল নিয়ে যান। তার গুদামে নিয়ে দেখেন বস্তাগুলো অনেকটা খালি খালি অবস্থা। তখন সে ওজন দিলে বেশ কিছু বস্তায় অন্তত ৭-৮ কেজি করে চাল কম দেখতে পান। তার নামে বরাদ্দ করা চালের মধ্যে মোট ১৪০ কেজি চাল কম পান তিনি। দুর্নীতি ধরতে তিনি পরবর্তী চালানের অপেক্ষায় থাকেন। একইভাবে শুক্রবার বিকেলে ৮ হাজার ৫’শ কেজি চাল নেন ইউসূফ বাবু। সেখানেও কম পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সে চালগুলো নিয়ে সদর খাদ্য গুদামে ফেরত আনেন। অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার নির্দেশে আসল স্তূপ থেকে চালের বস্তাগুলো পাল্টে দিয়ে তাড়াতাড়ি ডেলিভারি ও বিদায় করেন তাকে। একই রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে শহরের আরও ৭ ডিলারের কাছে। নিয়োগকৃত ডিলার ইউসূফ বাবু বলেন, পর পর দুইবার চাল কম পেয়েছি। বিষয়টি সত্যি দুঃখজনক। ওনারা (খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা) কম দিলে আমরা মানুষকে কি দিব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিলার বলেন, ঘরের ধান-চাল খায় চার পায়ের ইঁদুরে। আর গরিবের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী চাল খাচ্ছে দু’পায়ের ইঁদুর। খাদ্যগুদামে কয়েক প্রকারে স্তূপ করা চাল রেখেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যারা একটু সেয়ানা ধরনের, তাদের জন্য স্তূপ কোনটা সেটি চিহ্নিত আছে। সরকারী আমানতের চালের বস্তা থেকে ৫ কেজি হারে চাল বের করে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে এবং একাজে সদর খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন তার সম্পৃক্ততা নেই দাবি করেছেন। এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তিনি। প্রসঙ্গত একই অভিযোগে এর আগেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন সদর খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তারপরও তিনি তদ্বির করে বহাল তবিয়তে থেকে যান।
×