ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টারের যাত্রা শুরু

প্রকাশিত: ২২:১১, ২৮ জুন ২০২০

প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টারের যাত্রা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘মহৎ কাজে প্লাজমা দান, এগিয়ে আসুন বাঁচবে প্রাণ’ স্লোগানে রাজধানীতে করোনা রোগীদের জীবন বাঁচাতে দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু হলো প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টারের। পাইলট প্রকল্প হিসেবে একমাস কাজ করার পর এ সেন্টারটি শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম এ সেন্টারটির উদ্বোধন করেন। এ সময় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ আশরাফুল হক, ওলওয়েল ডটকমের সমন্বয়ক ডাঃ তুষার মাহমুদ, বাঁধন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রকীব আহমেদ, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ মমিনুর রহমান মামুন। ভিডিও বার্তা ও সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন ডাঃ সামন্তলাল সেন, স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান ও বিজেসি’র চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক। অনুষ্ঠানে বলা হয়, ইতোমধ্যে ৩৬ জন রোগীকে এ সেন্টার থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনাজয়ীদের তথ্য সংগ্রহ করা, ডাটা বেইজ তৈরি করা, দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে একটি মেলবন্ধন তৈরি করার উদ্দেশ্যে সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন বিজেসি এর উদ্যোগে ৩টি প্রতিষ্ঠান ও ৪টি সংগঠন মিলে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে এ প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টার চালু করেছে। সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, গাজী গ্রুপ, স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন, সবার জন্য সবার ঢাকা ও ওলওয়েল ডটকম। জানা গেছে প্লাজমা থেরাপি শতাব্দী প্রাচীন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতি করোনা চিকিৎসার জন্য নিশ্চিত কোন চিকিৎসা পদ্ধতি না হলেও গবেষকরা বিভিন্ন পর্যায়ে এর সুফল পাচ্ছেন। অনেক জটিল রোগী ভাল হচ্ছে। প্লাজমা নিয়ে বাংলাদেশেও গবেষকরা এরই মধ্যে ট্রায়াল শুরু করেছেন এবং প্রতিটি হাসপাতালেই চিকিৎসার অন্যতম একটি পদ্ধতি হিসেবে এখন প্লাজমা থেরাপিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট প্লাজমা যোদ্ধাদের প্লাজমা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামে একটি কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে প্রতিদিন ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক ২৪ ঘণ্টা সকল কাজ পরিচালনা করবেন। এখন থেকে করোনাজয়ী ও প্লাজমা দানে সক্ষম যে কেউ প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টারের ০১৮৪১১৮৮০২৪-২৫ দুটি ফোন নম্বরে ফোন করে প্লাজমা দান করতে পারবেন। একইসঙ্গে যারা প্লাজমা খুঁজছেন তারাও ওয়েবলিংকে রিকুইজিশন দিতে পারবেন বা উক্ত নাম্বারে ফোন করে আর চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখিয়ে সেই প্লাজমা সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়া প্লাজামা সাপোর্ট সেন্টারের ফেসবুক পেইজে গিয়েও যোগাযোগ করা যাবে। লিংকটি হচ্ছে ও http://plasma.gayivm.com/request অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, অনেকে প্লাজমা নিয়ে প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সমসময় পাশে আছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র আতিক বলেন, কোন চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যত্রতত্র প্লাজমা দেয়া হবে না। একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরির জন্যই এই প্লাটফর্মের যাত্রা। এখান থেকে কোন ধরনের হয়রানি ছাড়াই যে কেউ প্লাজমা সংগ্রহ করতে পারবে। আর সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন অনেক বেশি সংখ্যক করোনাজয়ীরা স্বেচ্ছায় প্লাজমা দানে এগিয়ে আসবেন। এ জন্য মেয়র প্লাজমা দানে সক্ষম সকল করোনাজয়ীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি একসময় বেস্ট ব্লাড ডোনার হয়েছিলাম। তরুণদের বলব, আপনারা প্লাজমা ডোনেট করতে এগিয়ে আসুন। একজনের কাছ থেকে ৬০০ এমএল প্লাজমা নেয়া যায়। ওই প্লাজমা আমরা তিনজনকে দিতে পারব। উল্লেখ্য, দেশে করোনা চিকিৎসায় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হিসেবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যেই দেশে প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, এতে আশানুরূপ ফল পাওয়া গেছে। জীবনও রক্ষা পাচ্ছে। জীবনরক্ষায় যারা প্লাজমা দিতে ও পেতে চান, তাদের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করতে প্লাজমা সাপোর্ট সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।
×