ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্যাপসা গরমে অস্থির ঢাকাবাসী

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২৮ জুন ২০২০

ভ্যাপসা গরমে অস্থির ঢাকাবাসী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে যখন ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, তখন ভ্যাপসা গরমে অস্থির রাজধানীবাসী। বাড়ছে গরমের তীব্রতা। সকাল থেকে রাত অবধি গা দিয়ে দরদর করে ঘাম ঝরছে। মাঝে মধ্যে সামান্য বৃষ্টিপাত হলে গরমের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে গত এক সপ্তাহ যাবত ঢাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। তার ওপর বাতাসের আদ্রতার পরিমাণ অনেক বেশি। প্রচন্ড রোদে এই বাতাসের জলীয়কণা গরম হয়ে শরীর থেকে ঘাম ঝরাচ্ছে। আষাঢ় মাস বৃষ্টির সময়। সারাদিন রিমঝিম বৃষ্টি হলো আষাঢ়ের বৈশিষ্ট্য। আবহাওয়াবিদরা বলেন, কোন কারণে আষাঢ়ে বৃষ্টিপাত না হলে গরমের মাত্রাটা এমনিতেই বেড়ে যায়। তার সঙ্গে জলীয়কণা গরম হয়ে এই মাত্রা অসহনীয় করে তোলে। তারা জানায় এই সময়ে দিনের পরিধি সবচেয়ে বেশি থাকে। বৃষ্টি না থাকলে সূর্যের কিরণ খাড়াভাবে এসে লাগে। তবে তারা দু একদিনের মধ্যে বৃষ্টি আভাষ দিয়েছেন। জানান বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে গেলে গরমের এই মাত্রা কমে আসবে। গত ১৫ জুন থেকে বাংলা আষাঢ় শুরু হয়েছে। বাংলা বর্ষা এসেছে তারও আগে। এ বছর বর্ষার আগ থেকে বৃষ্টিপাত ঝড়ছে। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় আমফান চলে যাওয়ার পর থেকেই বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সারাদেশে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে এবার রাজধানীতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ফলে এছাড়া পাকা অবকাঠামো অনেক বেশি। এ কারণে সূর্যের তাপ এ্যাবজর্ব (শোষণ) বেশি করছে। ফলে গরমে মাত্রা আর বাড়িয়ে দিচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে সারাদেশের মৌসুমি বায়ু বেশি সক্রিয় রয়েছে। গত কয়েকদিনের দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বিশেষ উত্তরের জেলায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। সেই তুলনায় ঢাকায় বৃষ্টির পরিমাণ অনেক কম। ফলে ক্রমেই বাড়ছে গরমের তীব্রতা। আবহাওয়া অফিস জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তারাঞ্চল হয়ে অসম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সল্ডিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। এ কারণে রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দম্কা হাওয়াসহ হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। শনিবার সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে ২৪ ঘণ্টায় রংপুর ময়মনসিংহ সিলেট বিভাগ এবং কুমিল্লায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এদিকে তারা জানায়, শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময় রাজধানী ঢাকা কোন বৃষ্টির দেখা মেলেনি। এমনিক ঢাকা বিভাগের এক টাঙ্গাইল ও নিকলি ছাড়া কোথাও বৃষ্টির খবর পাওয়া যায়নি। আবাহওয়া অফিস জানিয়েছে এই সময়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে রংপুর ও রাজাহী বিভাগে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগের পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অপরর দিকে ঢাকা খুলনা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এসব এলাকায় গরমের অনুভূতি বেড়ে গেছে।
×