ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

প্রকাশিত: ২১:২৬, ২৮ জুন ২০২০

ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, জাতীয় সংসদসহ কয়েকটি বিষয়ে ‘ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা’ প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন সুপ্রীমকোর্টের একজন আইনজীবী। শনিবার বিকেলে গুলশান থানায় দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন এবং পত্রিকাটির সাংবাদিক সেলিম সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরদার। গুলশান মডেল থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান রাতে জনকণ্ঠকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ পত্রে ব্যারিস্টার সৌমিত্র নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শে বিশ্বাসী উল্লেখ করে বলেন, গত ২৬ জুন (শুক্রবার) দৈনিক ইনকিলাবের অনলাইন সংস্করণে ‘এইচ টি ইমামকে সরিয়ে দিন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার, জাতীয় সংসদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সম্পর্কে চরম আক্রমণাত্মক, মিথ্যা, বিকৃত ও মানহানিকর তথ্য প্রদান করা হয়েছে। প্রতিবেদনটির মূল উদ্দেশ্য দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে দেশের অভ্যন্তরে একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। প্রতিবেদনে জাতীয় সংসদের চরম অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগে বলা হয়, ইনকিলাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গৃহপালিত বিরোধী দল থাকায় বর্তমান সংসদ নিয়ে মানুষের তেমন আগ্রহ নেই।’ যা মহান জাতীয় সংসদ সম্পর্কে একটি ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য। এমন মন্তব্য কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এই উক্তির মাধ্যমে পত্রিকাটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা, বিকৃত ও মানহানিকর মন্তব্য করা হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগ বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পর্কে চরম বিষোদগার করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এর আগে দৈনিক ইনকিলাবসহ অন্যান্য দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় কুয়েতে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল গ্রেফতারের পর টাকা দিয়ে এমপি হওয়ার নেপথ্য কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে। ভোটের কয়েক দিন আগে কেন্দ্র থেকে সাংগঠনিক চিঠি দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহিদের পক্ষে প্রচারে নামার নির্দেশনা পাওয়া নিয়ে লক্ষ্মীপুরের আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরেছেন। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন যেন হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দেয়ার মতোই।’ অভিযোগে আরও বলা হয়, ঐ রিপোর্টে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের এমপি হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হয়। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিকৃত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। মূলত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্যই এটি করা হয়েছে। এই আইনজীবী জানান, দৈনিক ইনকিলাবের এই মন্তব্য গুলো চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ, মিথ্যা, অপমানজনক, বিকৃত, মানহানিকর ও আক্রমণাত্মক। তথ্যগুলো মিথ্যা বলে জানা সত্ত্বেও বিবাদীদ্বয় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে এগুলো প্রচার করছে। এই মন্তব্যগুলোর মাধ্যমে বিবাদীদ্বয় রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার করেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি করার জন্যই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই কথাগুলো বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটিতে বিকৃত, মিথ্যা, অপমানজনক, আক্রমণাত্মক ও মানহানিকর তথ্য প্রচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে অসন্তোষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করা হয়।
×