ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইন ক্লাসের এপিঠ-ওপিঠ

প্রকাশিত: ২১:০৪, ২৮ জুন ২০২০

অনলাইন ক্লাসের এপিঠ-ওপিঠ

সবকিছুর পরেও এগিয়ে যেতে হবে মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে সর্বদা নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাই ভবিষ্যতে ডাক্তার হিসেবে মানবসেবায় নিয়োজিত হতে যে কোন বাধা মোকাবেলা করে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সেজন্য কলেজ বন্ধ থাকলেও থেমে নেই অনলাইন পাঠদান। নেটওয়ার্ক দুর্বলতাসহ হাজারও প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাসে সংযুক্ত হতে পারাটা আকাশছোঁয়া আনন্দের মতো। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তত্ত্বীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারলেও ব্যবহারিক ক্লাসের সুযোগ না থাকায় কিছুটা সমস্যা রয়েই যাচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন ও সহজলভ্য ইন্টারনেট অনলাইন ক্লাসের পূর্বশর্ত, সেটা নিশ্চিত হলে সকল শিক্ষার্থীর জন্য ফলপ্রসূ হবে। সবকিছুর পরেও এগিয়ে যেতে হবে, এটাই বড় কথা। আনিকা তাহসিন নায়েলা ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ, রাজশাহী উপস্থিতি ৩০ শতাংশেরও কম বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিটি মানুষ অনিশ্চয়তায় ভুগছে। মানুষের স্বাভাবিক কর্মকান্ড যেখানে ব্যাহত হচ্ছে, সেখানে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করানো কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটা নিয়ে সংশয় আছে। যেখানে আমাদের ইন্টারনেট অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত দেশগুলর তুলনায় নগণ্য, সেখানে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করা উচিত। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতি ৩০ শতাংশেরও কম। নেটওয়ার্ক না থাকা, মোবাইল অপারেটরগুলোর উচ্চমূল্য, শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার দিকটি সামনে উঠে এসেছে। এমন অনাগ্রহতায় অনলাইন ক্লাস কোন সুফল আনবে না। সুতরাং সকল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সরকারের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা বাঞ্ছনীয়। মুহাম্মাদ আল-মাহদী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট ফি’র বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা দরকার শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে অনলাইন ক্লাসের উদ্যোগ যুক্তিসম্মত। কিন্তু এর যথাযথ বাস্তবায়নের পথে রয়েছে অনেক প্রতিবন্ধকতা। অনেক সময় বিভাগীয় শহরগুলোতেও ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা হয়, সেখানে গ্রাম্য এলাকায় ভাল ইন্টারনেট সংযোগ কল্পনামাত্র। এজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়কেই সমানভাবে ভুগতে হচ্ছে। খন্ডকালীন কাজ করে, টিউশনি করে পড়ার খরচ চালানো শিক্ষার্থীদের অবস্থা নাজুক। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত পরিবারের। তাই সেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন যেমন অব্যাহত রাখা উচিত তেমনি শিক্ষার্থীদের ফি’র বিষয়টাও বিবেচনা করা উচিত। বর্ধিত শিক্ষাবর্ষের ফি’র চাপ যেন শিক্ষার্থীর উপর না পড়ে সেজন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কাছে যথাযথ দিক নির্দেশনা সকলের কাম্য। আহনাফ শাহরিয়ার শান্ত বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা সারা পৃথিবীর এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের অনলাইনে পাঠদান শুরু হয়েছে। কিন্তু আমি কোনদিনই শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখিনি। কারণ হিসেবে আমি মনে করি অনেক শিক্ষার্থীর গ্রামের বাসায় চলে যাওয়া আর হঠাৎ লোডশেডিং। এই ক্লাসগুলো অবশ্য প্রয়োজনীয়। শিক্ষাব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী উদ্যোগ। আর যারা এই ব্যবস্থা সফল করার জন্য যে অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টা করছেন, শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে সর্বপ্রকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেসব শিক্ষকদের প্রতি জানাই সম্মান ও কৃতজ্ঞতা। পাশাপাশি আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিংবা পারিপার্শ্বিকতার জন্য অপারগ শিক্ষার্থী, যারা প্রযুক্তির এই সুবিধা নিয়ে ক্লাস করতে পারছে না, তাদের কথা বিবেচনায় যথার্থ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। বুশরা তাবাসসুম ঐশী রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ঘরের বাইরে গিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে আমাদের দেশে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে একটি বিলাসিতা। যাদের বাড়িতে ওয়াই ফাই সুবিধা আছে, তাদের জন্য সহজ। কিন্তু আমরা যারা এই মহামারীর শুরুতেই গ্রামে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি, তাদের অনেকের জন্য অনলাইন ক্লাস করাটা অনেক কষ্টের। বাস্তব কারণ হচ্ছে মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা। দেশে ফোর জি চালু হলেও সেটির সুবিধা সর্বত্র এক নয়। অনেক সময় বাড়ির বাইরে পুকুরপাড়ে বসে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছি। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। আর তাছাড়া এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো এমন অনলাইন ক্লাসে বোঝা সম্ভব না। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কিছু প্রশংসনীয় কাজ করেছে। ক্লাসের ভিডিও আপলোড করা, উপস্থিতির উপর নম্বর বাতিল করা, চার সপ্তাহ পরপর রিভিউ ক্লাসের সুযোগ উল্লেখযোগ্য। সব বিশ্ববিদ্যালয় এ রকম ব্যবস্থা নিলে অনলাইন পাঠদানেও সফলতা আসবে বলে। মীর মোঃ মুদ্দাসসের আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
×