ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নদী ভাঙ্গনের কবলে কিশোরীগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮:৩৯, ২৭ জুন ২০২০

নদী ভাঙ্গনের কবলে কিশোরীগঞ্জ

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলায়। চারালকাটা ও যমুনেশ্বরী নদীর ভাঙ্গনের হুমকীর কবলে পড়েছে উপজেলাটির ১টি ব্রীজ, ২টি সড়ক, ১টি এতিমখানা-মাদ্রাসা, ২টি মসজিদসহ প্রায় ৬ শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও ঘরবাড়ি। সবচেয়ে বেশি হুমকিতে রয়েছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চাঁদখানা ইউনিয়নের সারোভাষা ব্রীজটি। কয়েকদিনের টানা বর্ষন ও নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় এ পরিস্থিতি সৃস্টি হয়েছে। আজ শনিবার সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করেছে উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাগন। সরেজমিনে দেখা গেছে- কিশোরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কেশবা তেলীপাড়া গ্রামটির যেকোন মুহূর্তে নদীগর্ভে যেতে পারে ১৫০টি পরিবারের ঘরবাড়ি। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী জুগিপাড়া গ্রামে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ৬০টি ঘর বাড়ি। একই ইউনিয়নের রূপালী কেশবা গ্রামে আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা-এতিমখানাসহ ৪০টি ঘর বাড়ি, কেশবা ময়দানপাড়া গ্রামে ঈদগাহ মাঠসহ ১০০টি ঘর বাড়ি,গদা বজলার মেম্বার বাড়ির সামনে বড়ভিটা-কিশোরীগঞ্জ পাঁকা সড়ক, সংলগ্ন মসজিদসহ ৪০টি ঘর বাড়ি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। অপর দিকে চাঁদখানা ইউনিয়নের সরঞ্জাবাড়ী গ্রামে সরঞ্জাবাড়ী পুরাতন জামে মসজিদের কাছাকাছি ভাঙ্গন চলে আসায় মসজিদটিসহ ১০টি ঘর বাড়ি সরঞ্জাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ,একই ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদখানা চাড়ালকাটা নদীর উপরে সারোভাসা ব্রীজের গোড়াসহ সড়কটি ভাঙ্গণের হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া ওই গ্রামের ২০০ টি ঘর বাড়ি পড়েছেও ভাঙ্গনের হুমকীতে। এদিকে সরঞ্জাবাড়ী গ্রামে নদী ভাঙ্গণ মসজিদের কাছাকাছি আসায় এলাকাবাসী নিজেরাই বাঁশ দিয়ে পানির গতিপথ পরিবর্তন করায় ভাঙ্গণ সাময়িক বন্ধ করা গেছে। তারা জানান- সরঞ্জাবাড়ী পুরাতন জামে মসজিদ ভয়াবহ হুমকিতে রয়েছে। এখানে বাড়ি ঘরসহ একটি প্রাইমারী স্কুলের কাছাকাছি ভাঙ্গণ এসেছে। কিশোরীগঞ্জ সদর ইউপির তেলীপাড়া গ্রামের জেসমিন, মনজিলা, আঞ্জুয়ারা বেগম জানান- নদী ভাঙ্গণ ঘরের কাছাকাছি এসেছে। যে কোন সময় বাড়ি ঘর নদীতে ভেসে যেতে পারে। একই গ্রামের আব্দুল মজিদ জানান- আমার ১০ শতক জমি ছিল। ইতোমধ্যে ৯ শতক জমি নদীগর্ভে গেছে। অবশিষ্ট ১ শতক জমির উপর বাড়ি আছে। সেটিও নদীতে গেলে আমার বসবাস করার কোন জায়গায় থাকবে না। এলাকাবাসী আরও জানান- আগে নদী ভাঙ্গন এত ছিল না। ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী খনন করার ফলে এ ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। চাঁদখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদখানা গ্রামবাসী জানান- নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সকাল বেলা সারোভাসা ব্রীজের গোড়ার দিকে ভাঙ্গন এসেছে। ব্রীজের গোড়াসহ ব্রীজ সংযোগ সড়কটি নদীকে বিলিন হতে পারে। চাঁদখানা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফি জানান যমুনেশ্বরী ও চারালকাটা নদীর ভাঙ্গন এতো দ্রুত ভয়াবহ আকার করতে আমরা কেউ ভাবতে পারিনি। সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মোফাখখারুল ইসলাম বলেন নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থ গ্রহন করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল কালাম আজাদ জানান নদী ভাঙ্গন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আবুল কালাম আজাদ বলেন আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নদী ভাঙ্গন মোকাবেলা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছি।
×