ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে : ড. বেনজীর

প্রকাশিত: ১৮:০৮, ২৭ জুন ২০২০

পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে : ড. বেনজীর

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এজন্য পুলিশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। আজ শনিবার (২৭ জুন) রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের নবনির্মিত ব্যারাক ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান। উন্নত দেশের পুলিশ হতে হলে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে, পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে, মানুষের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেওয়া যাবে না, মানুষের প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়, মানবিক আচরণ করতে হবে এবং জনগণের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণও নিশ্চিত করা হবে। কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য ড্রাগ খাবে না, ড্রাগের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কযুক্ত থাকবে না। কোনো ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ কেটে অপসারণ করা হয়। পুলিশের কোনো সদস্য যদি ড্রাগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকে তাহলে নির্দয়ভাবে তাকেও বাংলাদেশ পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইজিপি বলেন, আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তখন পুলিশ এ ভাইরাস প্রতিরোধে সুরক্ষাসামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করে জনগণের সুরক্ষায় কাজ শুরু করেছে। এখন পুলিশের দুই লাখ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষাসামগ্রী রয়েছে। করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মাত্র দুই সপ্তাহে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করেছি। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজধানীতে একটি উন্নত বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ ও হোটেল ভাড়া করে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। ‘করোনা পরীক্ষার জন্য যেখানে চার সপ্তাহের কম সময়ে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা যায় না, সেখানে মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতলে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু রাজধানীতে নয়, রাজধানীর বাইরে বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।’ ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মৃত্যুর হার কমছে। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে মৃত্যুর হার এক দশমিক তিন শতাংশ। পুলিশে মৃত্যুর হার মাত্র দশমিক পাঁচ শতাংশ। আইজিপি বলেন, করোনা সংক্রমণ কিভাবে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। জাতীয়ভাবেও এ হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য সবাইকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান তিনি। ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশ সদস্যদের আবাসিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আমরা স্বল্পমেয়াদে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যারাক ভবন নির্মাণ করেছি। ডেমরায় করা হয়েছে, উত্তরাতে আজ করা হলো। পূর্বাচলেও আমরা ব্যারাক ভবন নির্মাণ করবো। দীর্ঘমেয়াদে আমরা বহুতল ভবন নির্মাণের দিকে যাবো। পুলিশ ফোর্সের বসবাসের ঘনত্ব কমিয়ে তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক আবাসনের ব্যবস্থা করতে চাই আমরা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×