ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিবচরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় সাফল্য আসছে

প্রকাশিত: ১২:৩২, ২৭ জুন ২০২০

শিবচরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় সাফল্য আসছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরে করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে শিবচর উপজেলা এখন নিম্নমুখী। জোন ভিত্তিক লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় সাফল্য আসছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কোনো বিকল্প নেই। শিবচরের বিভিন্ন জোনে বসবাসকারীদের সাথে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে। শিবচরে প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশের অনেক সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের তৎপরতা সীমিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় রেড, ইয়োলো ও গ্রীন জোনে লকডাউন বাস্তবায়নে স্বেচ্ছায় মাঠে নেমেছে যুবলীগের নেতৃত্বে গঠিত ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দ। আর এতেই সাফল্য এসেছে শিবচরে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার, ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী, শিশুখাদ্য, ঔষধপত্র পৌঁছে দেওয়াসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা নির্দেশনা সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। এর নেপথ্যে অগ্রনায়ক হচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। দেশের প্রথম করোনা শনাক্ত এবং প্রথম লকডাউনে শিবচরে প্রথম থেকেই তার নির্দেশনা ছিলো প্রশংসনীয়। তার সময়োচিত পদক্ষেপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দদের তৎপরতা শুরু থেকেই কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ১৭ জুন থেকে শিবচর পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড এবং ৮ ইউনিয়ন রেডজানের আওতায় এনে দ্বিতীয় দফায় লকডাউন করা হয়। এছাড়া ইয়োলো জোনে ৪ ইউনিয়ন ও গ্রীন জোনে ৭ ইউনিয়নে সময় সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ৩০ জুন পর্যন্ত এই লকডাউন বহাল থাকবে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভাইস-চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, হাইওয়ে পুলিশের ৮জনসহ পুলিশের ১১ সদস্য হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ১৮ পুলিশ সদস্য রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টিনে। ফলে ২য় দফা লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন ও পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছিল। সংক্রমন প্রতিরোধে ২য় দফা লকডাউন বাস্তবায়নে চীফ হুইপ আওয়ামী লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গঠন করে মাঠে নামার নির্দেশ দেন। এই স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারগুলোতে কাজ শুরু করেন। প্রতিটি ইউনিয়নে ১২সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা প্রতিদিন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, সুরক্ষা সরঞ্জাম পরিধান, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৩১ দফা মেনে চলতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করছেন। বিভিন্ন বাজার ঘুরে পৌর বাজারের ব্যবসায়ী ইমরান আহমেদ, পাচ্চরের ব্যবসায়ী কমল কুন্ডু, চান্দেরচর বাজারের ব্যবসায়ী জাফর মিয়া জানান, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতারা ব্যাচ পড়ে নির্ধারিত সময়ে বাজারে এসে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে উদ্বুদ্ধ করছেন। মাস্ক পড়া, শারীরিক দূরত্ব মানাতে ভূমিকা রাখছেন। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বিষয়টি তদারকি করছেন। সহকারী কমিশনার(ভূমি)এম রকিবুল হাসান বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে কর্মরত অনেক কর্মকর্তা ও পুলিশ করোনায় আক্রান্ত। তাই স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে লকডাউন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছেন।’ সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, ‘পুলিশ নিজেরাই এখন করোনায় আক্রান্ত। তাই আমাদের শিডিউল করে কাজ করতে হচ্ছে। লকডাউন, স্বাস্থ্যবিধি, সুরক্ষা সরঞ্জাম, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে স্বেচ্ছাসেবীদের তৎপরতায় সবকিছু নিয়ন্ত্রনে খুব ভাল ভূমিকা নিচ্ছে।’ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনির চৌধুরী বলেন, ‘চীফ হুইপের নির্দেশনা মেনে চলায় ও ঘরে ঘরে শিশু খাদ্যসহ খাবার সহায়তা পৌছে দেয়ায় সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। প্রশাসন ও জনপ্রতিধিদের সাথে সাথে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা স্বেচ্ছাসেবী হয়ে কাজ করায় সুফল মিলেছে।’ চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে জোন ভিত্তিক লকডাউন অনুসারে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে খাবার সহায়তা, শিশু খাদ্য বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে যুবলীগের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছে।’
×