নীতিশ চন্দ্র বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ ॥ গোপালগঞ্জে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে জেলার পুলিশ বিভাগের প্রায় ১২শ’ সদস্য। করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্রিফিং, মাইকিং, মার্কিং ও লিফলেট বিতরণসহ পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টাঙ্গানো হয়েছে সচেতনতামূলক নানা ব্যানার। জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে বা অহেতুক ঘরের বাইরে ঘোরাফেরা না করতে এবং জরুরী প্রয়োজনে সরকার নির্ধারিত নম্বরে ও বিশেষ প্রয়োজনে ৯৯৯ এ যোগাযোগ করাসহ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফার্স্ট রেসপন্ডার হিসেবে পুলিশ সদস্যদের নিজেদের মধ্যেও সচেতনতা বৃদ্ধিসহ সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্যও বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে জেলার পুলিশ বিভাগ। জেলার প্রতিটি ইউনিটে করোনা-সম্পর্কিত এবং নিজকে ও জনসাধারণকে রক্ষাকল্পে দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত ব্রিফিং চলছে বার বার। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ইউনিট কম্পাউন্ডের যানবাহন, রাস্তা-ড্রেন ও ব্যবহার্য জিনিসপত্রে তিনবেলা স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। অফিসের প্রবেশপথে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে কোভিড-১৯ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্লান ও এসওপি তৈরি করা হয়েছে। ডিউটি ও আবাসন ক্লাস্টারভিত্তিক করা হয়েছে। নিজেদের করোনামুক্ত রাখতে জেলা পুুলিশের অর্থায়নে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পর্যাপ্ত মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, রেইন-কোট ও গাউনসহ বিভিন্ন জীবাণুনাশক উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
জেলায় করোনা যাতে মহামারী আকার ধারণ না করতে পারে সেজন্য বিদেশ থেকে আগতদের হোম-কোয়ারেন্টাইনে রাখাসহ পরিবারগুলোকে সার্বক্ষণিক মনিটর করছে পুলিশ বিভাগ। জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রতিটি থানায়, ফাঁড়িতে ও পুলিশ লাইনে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) গঠন করা হয়েছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া অসচ্ছল হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও খাদ্যসামগ্রী দিয়েও সহায়তা করছে জেলার পুলিশ বিভাগ।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যাতে করোনার দোহাই দিয়ে খাদ্যসামগ্রী বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে না পারে সেজন্য নিয়মিত টহল ও বাজার মনিটরিংসহ মজদকারিদের দিকে বিশেষ নজর রাখছেন পুলিশ সদস্যরা। বাজারের ক্রেতারা যাতে জটলার সৃষ্টি না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সেজন্যও সার্বক্ষণিক কাজ করছেন পুলিশ বিভাগের সদস্যরা।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুর রহমান খান বলেছেন, সঠিক গাইডলাইন ও নিবিড় তদারকির মধ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে মুকসুদপুর থানার করোনা-আক্রান্ত ১৮ পুলিশ সদস্যের প্রত্যেকেই করোনামুক্ত হয়ে পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছে। প্রতিনিয়ত জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পাসপোর্টসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ বিভাগ। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: