ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভৈরবে সড়ক ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২৭ জুন ২০২০

ভৈরবে সড়ক ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব, ২৬ জুন ॥ আগানগর ইউনিয়নের গকুলনগর বাজার কালিকাপুর সড়কের কাজ করার দুই বছর না যেতেই ভেঙ্গে গেল। রাস্তাটি ভেঙ্গে বিশ ফুট জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই ইউনিয়নের প্রায় ২০-২৫ হাজার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করত। গত সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তাটি ভেঙ্গে গেলে যানবাহনসহ মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জানা গেছে, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই দেড় কিলোমিটার রাস্তাটির প্রকল্প ব্যয় ছিল ৮০ লাখ টাকা। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর প্রয়োজনে রাস্তাটি নির্মাণ করে দেয়। ইভান এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কের রাস্তার কাজ করেছিল। প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের মাঝামাঝির দিকে শেষ হয়েছিল। দুই বছর পার হওয়ার আগেই ভেঙ্গে গেল রাস্তাটি। এলাকাবাসীর অভিযোগ রাস্তার কাজে সিডিউল অনুযায়ী রড সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। প্রকল্পের কাজে ঠিকাদার ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মালিক ভৈরব শিমুলকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুবায়ের আলম দানিছ। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হওয়ায় কাজের সময় কেউ তাকে প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইউছুফকে ম্যানেজ করেই নিম্নমানের কাজ করে ঠিকাদার তার বিল উত্তোলন করে নেয়। জানা গেছে, এই সড়ক দিয়ে রাধানগর, কালিকাপুর, ওরসপুর, নবীপুর, জগমোহনপুর ও লুন্দিয়া গ্রামের প্রায় ২০-২৫ হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচলসহ লোকজন দিনরাত চলাচল করে রাস্তা দিয়ে। চেয়ারম্যান বলছে প্রবল বৃষ্টির কারণে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। এলাকার ওর্য়াড আ’লীগের সভাপতি মোঃ হাবিব জানান, রাস্তার কাজে দুর্নীতি হয়েছে। সিডিউল অনুযায়ী রড সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। এলাকার চেয়ারম্যান জুবায়ের আলম দানিছ নিজেই ছিল ঠিকাদার। এ কারণে কাজের সময় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইউছুফ জানান, প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তাটি ভেঙ্গেছে। আমি পরিদর্শন করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে মাটি ভরাট করে রাস্তাটি মেরামত করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। নিম্নমানের কাজ করেছে ঠিকাদার কথাটি তিনি অস্বীকার করে বলেন, বৃষ্টিপাতে যে কোন সময় যে কোন রাস্তা ভেঙ্গে যেতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের কোন হাত নেই বলে তিনি জানান। ঘাটাইলে চলাচল অযোগ্য সড়ক নিজস্ব সংবাদদাতা টাঙ্গাইল থেকে জানান, ঘাটাইল উপজেলার পূর্বাঞ্চল পাহাড়ি এলাকার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের লক্ষিন্দর-বাঘাড়া বাজার-সাগরদীঘি পর্যন্ত ৬ দশমিক ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রাস্তাটি একটু বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত হয়ে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এই রাস্তার মধ্যে সাগরদিঘী বাজার থেকে বেইলা গ্রাম পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা পাকা, বাকি ৪ দশমিক ১১ কিলোমিটার রাস্তা মনতলা-টু-বাঘাড়া বাজার-টু-লক্ষিন্দর পর্যন্ত কাঁচা। অসহনীয় জনদুর্ভোগ কমাতে গ্রামীণ রাস্তাটি পাকা করা খুবই প্রয়োজন বলে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। জানা যায়, বাঘাড়া বাজার থেকে সাগরদীঘি রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন বাঘাড়া, মনতলা ও কাইকার চালাসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের শতশত মানুষ যাতায়াত করে। সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার সাগরদিঘী হাটের দিন। উক্ত দুই দিন প্রায় হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। কাঁচা তিন কিলোমিটার রাস্তা সংলগ্ন মনতলা ও বাঘাড়া গ্রামে একটি করে দুইটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বাঘাড়া ও মনতলাসহ আশপাশের গ্রামের ছেলে মেয়েরা সাগরদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়, সাগরদিঘী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সাগরদিঘী কলেজে লেখাপড়া করে। করোনাকালীন ছাড়া এখানকার শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। ফলে সঠিক সময়ে তারা স্কুলে পৌঁছাতে পাড়ে না। রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার কয়েক হাজার মানুষের বহু দিনের কষ্ট দূর হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় জনগণ। এ বিষয়ে লক্ষিন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একাব্বর হোসেন জানায়, আমরা রাস্তাটির পাকাকরণের ব্যাপারে অনেকবার স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। বগুড়ায় ৪৮ বছরেও পাকা হয়নি সড়ক স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া অফিস থেকে জানান, দশ গাঁয়ের হাজারও মানুষের যোগাযোগের লক্ষ্যে দেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে যে তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করেছিল ৪৮ বছরেও তা পাকা হয়নি। শুধু প্রতিশ্রুতি মিলেছে। কাঁচা এই সড়কটি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের কোদবাবুর পুশিন্দা কোলাদীঘি হয়ে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার। উপজেলা সদরের নিকটে (প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে) এই সড়কের অবস্থান হওয়ায় আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা। তিন কিলোমিটারের মধ্যে আছে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, বেসরকারী সংস্থার অফিস এবং অন্তত দশ গ্রামের সঙ্গে কানেক্টিভিটি। জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন হাজারও মানুষ এই পথে চলাচল করে। শুকনো মৌসুমে কাঁচা এই সড়কে যান্ত্রিক যানবাহন (মিনি বাস সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ইজিবাইক বা টোটো, ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ঠেলাগাড়ি) চলাচল করতে পারে। ভোগান্তি শুরু হয় বর্ষা মৌসুমে। বগুড়ার পশ্চিমাঞ্চলের লালমাটি গ্রীষ্ম ও শুকনোয় শক্ত ধুলা ওড়ে। বর্ষা মৌসুমে কাদার প্যাকে মাটি আঠালো হয়ে যায়। দিনে দিনে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া এই সড়কটি পাকাকরণের দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানীয়রা বহুবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্না দিয়েছেন। নির্বাচনের মৌসুমে অনেক প্রার্থী রাস্তা পাকাকরণের আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিজয়ী হওয়ার পর ‘যাহাই পূর্বং তাহাই পরং’। নশরতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম রব্বানী জানান, দফায় দফায় সংসদ সদস্য (এমপি) ও চেয়ারম্যানের কাছে স্থানীয়দের পক্ষে গিয়েছেন। ৫টি ডিও লেটারও দেয়া হয়। তারপরও কোন কাজ হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান জানান, তিন কিলোমিটার এই রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য চার বছর আগে প্রকল্প প্রস্তাব জমা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগে। প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গিয়েছে। পাস হয়নি। বছরের পর বছর এই অবস্থাই চলছে।
×