ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানবপাচার প্রতিরোধ

যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টের র্যা ঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের উন্নতি

প্রকাশিত: ২২:২২, ২৭ জুন ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টের র্যা ঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের উন্নতি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার সংক্রান্ত রিপোর্টের র্যা ঙ্কিংয়ে উন্নত অবস্থান অর্জন করেছে। বিদেশে অবৈধ অভিবাসন রোধে ঢাকার প্রয়াসের স্বীকৃতি দিয়ে মানবপাচার বিরোধী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেশগুলোর র্যা ঙ্কিং নিয়ে বাংলাদেশের বিষয়ে এ তথ্য জানানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও তার মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প রিপোর্টটি প্রকাশ করেন। খবর বাসসর। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে শুক্রবার প্রকাশিত ট্র্যাফিকিং ইন পারসনস (টিআইপি) শীর্ষক প্রতিবেদনে মানবপাচার রোধে বাংলাদেশের উন্নতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ‘(বাংলাদেশ) সরকার পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের সময়ের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছে; সুতরাং বাংলাদেশ টায়ার ২-তে উন্নীত হয়েছে।’ প্রতিবেদনের ২০তম সংস্করণে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ পাচার নির্মূলের ন্যূনতম মান পুরোপুরি পূরণ করতে না পারলেও এ লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার রিপোর্টে চারটি ক্যাটাগরিতে দেশগুলোকে ভাগ করা হয়। সেগুলো হচ্ছে- প্রথম স্তর, দ্বিতীয় স্তর, দ্বিতীয় স্তর নজরদারি (ওয়াচলিস্ট) ও তৃতীয় স্তর। প্রতিবেদনে বিশেষত ২০০০ ইউএন টিআইপি প্রটোকল অনুসারে একটি কঠোর পাচারবিরোধী আইনের অধীনে সাতটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের শনাক্ত করার জন্য মানব পাচারকারীদের শাস্তিযুক্ত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ করে মানবপাচারবিরোধী অভিযানের প্রশংসা করা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন মার্কিন স্বীকৃতির প্রশংসা এবং এই উন্নয়নকে মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এই উন্নতি লাভ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিদ্যমান ইউএসএআইডির কার্যক্রম স্থগিত করত। ‘এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন মানব পাচারের বিরুদ্ধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা অনুসারে এটি তার দফতর এবং স্বরাষ্ট্র, আইন ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল বলে বর্ণনা করেন। মন্ত্রী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে এবং একমাত্র এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত আদালতে পাচারকারীদের বিচারের সম্মুখীন করার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর পদক্ষেপের বিশেষ প্রশংসা করেছেন। মোমেন বলেন, আদালত ৪০৩টি পাচারবিরোধী মামলা নিষ্পত্তি করেছে এবং এর মধ্যে ৩১২টির বিচার করে ২৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় পাচার রোধে আইন লঙ্ঘনের জন্য ১৬২টি নিয়োগকারী সংস্থার লাইসেন্স স্থগিত করেছে। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পাচারের শিকার ব্যক্তিদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে এবং নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন এনজিও একই সঙ্গে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে। মন্ত্রী বলেন, আমরা মানবপাচারের বিষয়ে দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণার পরিবর্তন ঘটাতে করতে চাই। তাই, ঢাকা এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে। মোমেন সংশ্লিষ্ট সকলকে জনমত গঠন করতে এবং মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রতিবেদনে দেশের আটটি বিভাগে পাচারসহ সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুদের একাধিক আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের প্রশংসা করা হয়েছে।
×