ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্কুলশিক্ষকসহ ১২ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২৭ জুন ২০২০

করোনায় ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্কুলশিক্ষকসহ ১২ জনের মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ সারাদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্কুল শিক্ষকসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে সাভার ও বগুড়ায় ব্যাংক কর্মকর্তা, লক্ষ্মীপুরে স্কুল শিক্ষক মারা গেছেন। এছাড়া ঝালকাঠিতে দুই জন, সিলেটে তিন জন, নারায়ণগঞ্জ নড়াইল, বরিশাল ও মাগুরায় একজন করে মারা যান। অন্যদিকে দেশব্যাপী নতুন করে আরও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে নড়াইলে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আর মির্জাপুরে কঠোর লকডাউনের মধ্যে নজরদারি ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে প্রশাসন থেকে। মাগুরার তিন এলাকায় লকডাউনের প্রস্তুতি চলছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতার। সাভার ॥ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাভারে আব্দুর রহমান (৫৬) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আব্দুর রহমান উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকার মৃত তোতা মিয়ার ছেলে। তিনি অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় ঋণ এবং অগ্রিম বিভাগে অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, গত ১৪ জুন আব্দুর রহমান অসুস্থ হয়ে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষার ফলাফলে তার করোনা শনাক্ত হয়। পরবর্তীতে তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় এবং চিকিসাধীন অবস্থায় ওই হাসপাতালে শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। বগুড়া ॥ বগুড়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন জনতা ব্যাংক কর্পোরেট শাখার সিনিয়র অফিসার এ কে এম শাজাহান আলী। বৃহস্পতিবার রাতে শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ ও রফাতুল্লা কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। বগুড়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন দুই কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা হলেন জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ গউসুল আজিম চৌধুরী ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সামির হোসেন মিশু। ২৫ জুন তাদের দুই জনের জ¦র ও গায়ে ব্যথা হলে নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ফলাফলে করোনা পজিটিভ আসে। তারা দুজনই বাসায় আইসোলেশনে আছেন। সিভিল সার্জন ডাঃ গউসুল আজিম চৌধুরীর পরিবার ঢাকায় থাকায় তিনি সরকারী বাংলোতে আছেন। বগুড়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। সাংবাদিক, পুলিশ, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী ও স্বাস্থ্য সেবাদানকারী কর্মীর সঙ্গে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের দুই প্রধান এবার আক্রান্ত হলেন। লক্ষ্মীপুর ॥ অব্যাহতভাবে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ঠেকাতে রেড জোন হিসেবে পাঁচটি উপজেলার চারটি পৌরসভা এবং ১১ ইউনিয়নে শুক্রবার পর্যন্ত ১১ দিন ধরে ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন চলছে। এর মাঝেও লক্ষ্মীপুরে কোভিড-১৯ এর আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ নিবাসী নাজির উল্যা (৭০) নামে একজন স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনা মৃত্যুর তালিকায় মোট ১৫ জনে পৌঁছাল। ২৪ ঘণ্টায় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নসহ নতুন করে আরও ৪৪ জনের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। জেলায় মোট কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা সাতশ’ ৩৭ জনে পৌঁছেছে। বরিশাল ॥ করোনার উপসর্গ নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ্পরান সড়কের নূর মিয়ার পুত্র খায়রুল বাশার (৪৫), বিকেলে বরগুনার বামনার লক্ষ্মীপুর এলাকার আব্দুল রশিদ (৮০) ও দুপুরে নগরীর ভাটিখানা এলাকার শাহনেওয়াজ (৬৩) করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ঝালকাঠি ॥ জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ২১ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং নলছিটি উপজেলায় শাজাহান মাঝি (৭০) ও একই উপজেলার অন্য একজন মৃত্যু হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ১৮৮ জন আক্রান্ত হলো। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় ৭০ জন সুস্থ হয়েছে এবং ৯ জন মারা গেছেন। সর্বশেষ আক্রান্তদের মধ্যে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ শুভ বণিক ও সদর হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স সামসুন্নাহার রয়েছেন। এনিয়ে ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় ৬৯ নলছিটি উপজেলায় ৫৫ জন, রাজাপুর উপজেলায় ৪২ জন, ও কাঠালিয়া উপজেলায় ২২ জন। ঝালকাঠি জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত ১৫৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানে হয়েছে এবং এর মধ্যে ১৩৬৫ জনের রিপোর্ট এসেছে, এদের মধ্যে ১৮৮ জনের রিপোর্ট পজিটিভ ও ১১৭৭ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। জেলায় ১১০ দিনে ১৩০৭ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিল। তাদের মধ্যে ১২৫৪ জন ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৫৩ জন। নারায়ণগঞ্জ ॥ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের (৪৮) মৃত্যু হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। এ জেলায় মোট ১১০ জনের মৃত্যু হলো। গত ২৪ ঘন্টায় এ জেলায় আরও ১৩৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৭২ জন ও সদরে শনাক্ত ৩৭ জন। এ জেলায় করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ হাজার ৯২৫ জনে। শুক্রবার জেলা সিভিল সার্জন অফিসের নিজস্ব ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জেলা সিভিল সার্জনের ওয়েবসাইট থেকে আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭১৬ জন, সদর উপজেলায় ১১৭১ জন, বন্দর উপজেলায় ১৬৯ জন, আড়াইহাজারে ৪৬৬ জন, সোনারগাঁয়ে ৪৩৬ জন ও রূপগঞ্জে ৯৬৭ জন। এ জেলার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬০ জন, সদরে ২২ জন, বন্দরে ৩ জন, রূপগঞ্জে ৮ জন, সোনারগাঁয়ে ১৩ জন ও আড়াইহাজারে ৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৭১ জন। ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪১৩ জনের। এই পর্যন্ত এ জেলায় মোট ২৩ হাজার ৬৬১ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মাগুরা ॥ শুক্রবার করোনা আক্রান্ত হয়ে শালিখা উপজেলার দেশমুখপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মিজানুর রহমান মাগুরা ২৫০ শর্য্যা হাসপাতালে আইসোলেশনে ভতি ছিলেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি মারাযান। এই নিয়ে জেলায় মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলো ৯৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ জন। সুস্থ হয়েছে ৪৫ জন। মাগুরা ॥ তিনটি এলাকায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের প্রস্তুতি চলছে। এলাকাগুলো হচ্ছে মাগুরা পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের খানপাড়া, পিটিআই পাড়া ও একতা কাঁচাবাজার এলাকা। স্বাস্থ্য বিভাগ এলাকাগুলোকে রেড জোন চিহ্নিত করে মাগুরা সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলকে এলকা থেকে প্রবেশ ও বের হতে নিষেধ করে ব্যানার টানানো হয়েছে। পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের খানপাড়া, পিটিআই পাড়া এলাকার ৫টি প্রবেশপথ বন্ধ করে সেখানে আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। কাউকে ভেতরে প্রবেশ বা হতে দেয়া হচ্ছে না। নীলফামারী ॥ কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) সংক্রমণের সংখ্যায় নীলফামারী জেলা নতুন করে আরও ৬ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। ৬ জন নতুন করোনা পজিটিভের মধ্যে নীলফামারী সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের একজন, নীলফামারী পৌরসভার পাঁচমাথা এলাকার একজন, সদর উপজেলার কাছারী বাজার এলাকার এক যুবক। সৈয়দপুর পৌরসভার পুরাতন বাবুপাড়া এলাকার একজন, সৈয়দপুর উপজেলার খালিশা পালপাড়া এলাকার একজন ও খালিশা ব্রহ্মতল এলাকার একজন রয়েছেন। কক্সবাজার ॥ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে করোনায় ৪৮ জন নার্স আক্রান্ত হয়েছেন। তন্মধ্যে দুজন এনজিওর অর্থায়নে সদর হাসপাতালে কাজ করেন একজন মিডওয়াইফ ও অপরজন নার্স। বাকিরা সবাই সরাসরি সরকারীভাবে সদর হাসপাতালে কাজ করেন। দেশের অন্য হাসপাতালের মতো কক্সবাজার সদর হাসপাতালেও করোনা আইসোলেশন সেন্টার, ফ্লু কর্নার এবং ট্রিয়াজ কর্নারে সন্দেহভাজন ও পজিটিভ করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে নার্সরা। সম্প্রতি চালু করেছে ১৮ শয্যার আইসিইউ এবং এইচডিইউ। একটি বেসরকারী সংস্থার উদ্যোগে এটি চালু করা হয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ কক্সবাজারবাসীর একমাত্র ভরসা এ হাসপাতালে। রীতিমতো কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন নার্সরা। আক্রান্ত হওয়া ৪৮ জন নার্সের মধ্যে সুস্থ হয়ে ফের কাজে যোগদান করেছে ৩৪ জন নার্স। বাকি ১৪ জন এখনও চিকিৎসারত। নওগাঁ ॥ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। জেলায় নতুন করে নওগাঁ পৌরসভার মেয়র ও অন্য ৫ কর্মকর্তা কর্মচারী এবং ৩ পুলিশ সদস্যসহ মোট ৮৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এ নিয়ে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ৩২৩ জনে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় পৌর মেয়র মোঃ নজমুল হক সনি ও অন্য ৫ কর্মকর্তা কর্মচারী, ৩ পুলিশ সদস্য সহ ৪৬ জন, রানীনগর উপজেলায় ২ জন, আত্রাই উপজেলায় ১ জন, মহাদেবপুর উপজেলায় ১৪ জন, মান্দা উপজেলায় ৬ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৫ জন, পত্নীতলা উপজেলায় ২ জন, ধামইরহাট উপজেলায় ৩ জন, সাপাহার উপজেলায় ১ জন এবং পোরশা উপজেলায় ৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ১১১ জনকে। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৬৪ জন, রানীনগর উপজেলায় ৪ জন, মহাদেবপুর উপজেলায় ৯ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৩ জন, পতœীতলা উপজেলায় ২৫ জন, ধামইরহাট উপজেলায় ৪ জন, নিয়ামতপুর উপজেলায় ১ জন এবং সাপাহার উপজেলায় ১ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৮২ জনকে। এ পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৮ হাজার ছয়শ’ ৯৪ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪শ’ ৩৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ জন এবং এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০৫ জন। ময়মনসিংহ ॥ উপজেলায় পুলিশের এক কনস্টেবল ও ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে উপজেলায় ৭২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বুধবার থানার ওই কনস্টেবল এবং কৃষি ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী জ¦রে আক্রান্ত হয়। পরে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ইউনিট নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনিসংহ মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। বৃহস্পতিবার রাতে দুজনেরই ফলাফল করোনা পজিটিভ আসে। উপজেলায় ৭২ জন করোনা পজিটিভের মধ্যে ৪২ জন সুস্থ্য হয়েছেন। নতুন আক্রান্ত দুজনকে স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সিলেট ॥ ২৪ ঘণ্টায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১৪৭ জন। আর একই সময়ে মারা গেছেণ ৩ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) স্বাক্ষরিত কোভিড-১৯ কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনের দৈনিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৯১০ জন। আর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৬৩ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ৯৭০ জন রোগী। কেরানীগঞ্জ ॥ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) করোনায় ১ দিনে ৩২ জন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯১৬ জনে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ নতুন ৩২ জন আক্রান্তের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ ও ৮ জন মহিলা রয়েছে এদের মধ্যে জিনজিরা ২০ শয্যা হাসপাতালের ৩ জন ডাক্তার, উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ জন স্বাস্থ্যকর্মীসহ জিনজিরা ইউনিয়নে ১১ জন, শুভাঢ্যায় ৪ জন, আগানগরে ৩ জন, কালিন্দীতে ৩ জন, কলাতিয়ায় ২ জন, শাক্তায় ২ জন এবং তেঘরিয়া ইউনিয়নে ১ জন রয়েছে। গোপালগঞ্জ ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ আরও ২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬২। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ২শ’ ৮৫ জন। বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২শ’ ৬৭ জন। জেলায় মারা গেছেন ৯ জন। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৭শ’ ৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। মোট আক্রান্তের মধ্যে ৪৮ জন রয়েছেন বিভিন্ন ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী। চাঁদপুর ॥ জেলায় আরও ৪৪ জনের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। নতুন ৪৪ জনসহ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১৩ জন। এই পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫০জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১৮৪ জন। শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ঢাকা থেকে রিপোর্ট গেছে ১৯৯। এর মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট ৪৪, নেগেটিভ রিপোর্ট ১৫৫। পজিটিভ রিপোর্টের মধ্যে ১ জন মৃত রয়েছেন। তিনি হলেন মতলব উত্তর উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল বারেক বয়স (৫৬)। আক্রান্ত ৪৪ জনের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ১৮ জন, শাহরাস্তি ৬ জন, কচুয়া ১ জন, ফরিদগঞ্জ ৭ জন, মতলব উত্তরে ৫ জন ও হাইমচরে ৭ জন। জেলায় ৭৩১ জন আক্রান্তের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ২৮৭ জন, হাইমচরে ৪৭ জন, মতলব উত্তরে ৪১ জন, মতলব দক্ষিণে ৭৪ জন, ফরিদগঞ্জে ৭২ জন, হাজীগঞ্জে ৬৮ জন, কচুয়া ৩১ জন ও শাহরাস্তি উপজেলায় ৯৩ জন। এই পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫০ জন। যাদের মধ্যে সদরে ১৩ জন, ফরিদগঞ্জে ৬ জন, হাজীগঞ্জে ১৪ জন, শাহরাস্তি ৪ জন, কুচয়ায় ৫ জন, মতলব উত্তরে ৬ জন ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ২ জন। বাউফল ॥ সহকারী কমিশনার (ভূমি), স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক ও বগা তদন্ত কেন্দ্রের দুই পুলিশ সদস্যসহ ৬ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ৪৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৭ জন। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় পটুয়াখালী জেলায় বাউফলের অবস্থান শীর্ষ স্থানে। বাউফলে লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেলেও সংক্রমণ রোধে কোন পদক্ষেপই কাজে আসছে না। ইতোমধ্যে পৌর শহরের ২, ৪ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডকে রেড জোন হিসাবে ঘোষণা করা হলেও কার্যত তা শুধু কাগজেই লিপিবদ্ধ রয়েছে। আগের মতো সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে। রাস্তা ঘাটে মাস্ক ছাড়া লোকজন ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা। যানবাহন চলাচল করছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার চালালেও কেউ তা আমলে নিচ্ছেন না। সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিচুর রহমান বালী এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে কিছুটা তৎপর থাকলেও তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর কার্যক্রম মূলত স্তবির হয়ে পড়েছে। থানা পুলিশের কোন কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। পটুয়াখালী ॥ কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের দুই সদস্য করোনা শনাক্ত হয়েছেন। এরা হলেন কনস্টেবল রাব্বিকুল ইসলাম এবং আমিরুল ইসলাম। কলাপাড়া পৌরশহরের নাইয়াপট্টিতে শারমিন (২৪) নামে এক গৃহবধূ করোনা শনাক্ত হয়েছেন। কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইতোপূর্বে নাইয়াপট্টির কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ফরিদপুর ॥ নতুন শনাক্ত ১০৮ জন ধরে এ জেলার বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৫৭৬ জন। বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদপুর ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থাপিত করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব সূত্রে এ খবর জানা গেছে। নতুন শনাক্তের মধ্যে চিকিৎসক আছেন তিনজন, স্বাস্থ্যকর্মী আছেন দুইজন, পুলিশ সদস্য আছেন ছয় জন, বিচারিক হাকিম আদালতের পাঁচজন রয়েছেন। পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তাও রয়েছেন। নতুন করে যে ১০৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ফরিদপুর সদরে ৭৮ জন, সদরপুরে ১১ জন, বোয়ালমারীতে ৯ জন, মধুখালীতে ৩ জন এবং চরভদ্রাসন ও আলফাডাঙ্গায় ২ জন করে। এর মধ্যে নারী ২৫ জন এবং পুরুষ ৮৩ জন। বুধবার পর্যন্ত ফরিদপুরে মোট শনাক্ত ১ হাজার ৫৭৬ জন জনের মধ্যে ফরিদপুর সদরে ৬১১ জন, ভাঙ্গায় ২৮৭ জন, বোয়ালমারীতে ২২৮ জন, সদরপুরে ১১৩ জন, নগরকান্দায় ৯৬ জন, চরভদ্রাসন ৮১, সালথায় ৫৮ জন, আলফাডাঙ্গায় ৫৫ জন এবং মধুখালীতে ৪৭ জন রয়েছেন। সাতক্ষীরা ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ১৪৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়রে (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার থেকে পাওয়া নমুনা রিপোর্ট ১৪ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনা আক্রান্তরা হলেন, শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা দাসপাড়া এলাকার পূর্ণিমা দাস, তার স্বামী সুকুমার দাস, শহরের লস্করপাড়া এলাকার জেসমিন, শহরের সুলতানপুর এলাকার হানিফ, কালীগঞ্জ উপজেলার মৌতলা গ্রামের মনিরুল, দেবহাটা উপজেলার খানজিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, সদর উপজেলার বিনেরপোতা মাগুরা গ্রামের সুরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, শ্যামনগর উপজেলার ইশ্বরীপুর গ্রামের আব্দুস সালাম, তালা উপজেলা ধানদিয়া সেনেরগাতি এলাকার আব্দুর রশিদ, কলারোয়া উপজেলার আলাইপুর গ্রামের ইয়াছিন, সাতক্ষীরার রিনা পারভীন, অনিল বিশ্বাস, শুভঙ্কর ও জিদান আলম। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের ডাঃ জয়ন্ত সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। মির্জাপুর ॥ রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডে কড়া নজরদারির মধ্যে চলছে লকডাউন। দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত এই লকডাউনে শুক্রবার শুধু দোকানপাট নয়, কাঁচা বাজারসহ সাপ্তাহিক হাটও বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দিনকে দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসন সংক্রমণ প্রতিরোধে নড়েচড়ে বসেছে। লকডাউন বলবত এলাকায় প্রশাসন থেকে দেয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। গত দুদিনে বৃহস্পতি ও শুক্রবার নতুন করে ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ২০ জন এবং শুক্রবার ১০ জন আক্রান্ত হয়। এনিয়ে মির্জাপুর উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১শ’ ৫৫ জনে। শুক্রবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাকসুদা খানম এ তথ্য জানিয়েছেন। শুক্রবার নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মির্জাপুর উপজেলা সদরের মির্জাপুর বাজারের তিনজন, মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের এক পুলিশ সদস্য, বান্ধাচালা গ্রামের একজন, হাড়িয়ার একজন, খামার পাড়া একজন, দেওহাটা একজন, গোড়াই গ্রামের একজন ও অন্যত্র একজন। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির পাওয়ায় গত ১৬ জুন থেকে পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডেকে (প্রধান শহর) রেড জোন চিহ্নিত করে ২৫ জুন পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়। আক্রান্তের সংখ্যা অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন লকডাউনের সময় সীমা আগামী ২ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। নড়াইল ॥ ক্রমবর্ধমান করোনা রোগী বৃদ্ধির কারনে নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভা এলাকাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে এ লকডাউন কার্যকর হবে বলে এক জরুরী বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় লোহাগড়া উপজেলায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত নড়াইল জেলা কমিটির সিদ্ধান্তে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত লোহাগড়া পৌরসভা অঞ্চলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হলো। লকডাউন সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দোকান ছাড়া সকল ধরনের দোকান বন্ধ থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রয়োজন ব্যতীত ঘর থেকে কেউ বাহির হতে পারবে না। বৃহস্পতিবার নতুন করে সদর থানার এক পুলিশ সদস্য ও লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ইতিসহ জেলায় সর্বাধিক ২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল সদর থানার এএসআই আনিসুর রহমানসহ নড়াইল সদর উপজেলায় ৬ জন, লোহাগড়া উপজেলায় ১৫ জন এবং কালিয়া উপজেলায় ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এবং তারা সুস্থ আছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার হাড়িয়ার ঘোপ এলাকার গৌতম হাজরা নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে নড়াইলে মোট মারা গেলেন ৬ জন। নড়াইল জেলায় এ পর্যন্ত ১৬ জন হাইওয়ে পুলিশ সদস্য ও ১০ জন ডাক্তারসহ সর্বমোট ১৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ চিকিৎসকসহ ৪৫ জন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
×