ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরবনে ১ জুলাই থেকে দু’মাস মাছ ধরা বন্ধ

প্রকাশিত: ২১:৫২, ২৭ জুন ২০২০

সুন্দরবনে ১ জুলাই থেকে দু’মাস মাছ ধরা বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ সুন্দরবনে আগামী ১ জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সকল প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও প্রজননের জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন বিভাগ। বন-বিভাগ ও জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব সুন্দরবনের দুই লাখ ৩৪ হাজার এক শ’ ৪৭ বর্গ কিলোমিটার বনভূমির মধ্যে দুই শতাধিক নদী ও খাল রয়েছে। এর মধ্যে অভয়ারণ্য এলাকাসহ ১৮টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। এছাড়া মৎস্য প্রজননের জন্য জুলাই ও আগস্ট দুই মাস সকল খালে মৎস্য আহরণ বন্ধ করা হয়। নিষিদ্ধ এসব নদী-খাল ছাড়া প্রতি মাসের অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময় মাছ ধরার মৌসুম প্রায় দুই হাজার পারমিটধারী জেলে মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ মৎস্য আহরণের ওপর প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। বর্তমানে করোনা দুর্যোগের কারণে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে, তার ওপর মৎস্য আহরণ দুইমাস বন্ধ থাকলে জেলেদের জীবন-জীবিকা আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে জেলেরা জানান। শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুব হোসেন সেলু ও জালাল মোল্লা জানান, করোনার কারণে সুন্দরবনের জেলেদের মাছ ধরা ছাড়া এবার আর কোন কাজ কারার সুযোগ নেই। এ বছর দুইমাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে জেলেরা ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকবে। তাই এ বছর জেলেদের সুযোগ দেয়ার দাবি জানান তারা। উপজেলার বকুলতলা গ্রামের নুর ইসলাম মুন্সি, সোনাতলা গ্রামের আসাদুল মাতুব্বর, খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে হাবিব হাওলাদার ও জামাল হাওলাদার জানান, আমরা ৩০/৪০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। এখন মাছ ধরা বন্ধ করে দিলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। সরকার আমাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে আমার আর সুন্দরবনে যাব না। এ ব্যাপারে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের জন্য উপযুক্ত মৌসুম। এই সময় সাধারণত সকল মাছে ডিম ছাড়ে। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ১ জুলাই থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুইমাস সকল প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে এ সিদ্ধান্ত নেয় বন বিভাগ। এর ফলে সুন্দরবনে এ দুইমাস নিরাপদে মৎস্য প্রজনন ঘটে থাকে। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও একই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে করোনাকালীন সময়ে জেলেদের বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
×